দুই মহারথী, দুই নিখাদ রত্ন

আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে এক সাথে অভিষেক হওয়া কিংবদন্তিদের নামের তালিকাটা বেশ ইন্টারেস্টিং। কয়েক জনের কথা এখানে না বললেই নয়।

ক্যারিবিয়ান দুই কিংবদন্তি ভিভ রিচার্ডস ও গর্ডন গ্রিনিজ, ১৯৭৪ সালে ব্যাঙ্গালোরে অভিষেক হয়। দিলীপ ভেঙ্গসরকার ও সৈয়দ কিরমানি, ১৯৭৬ সালে অকল্যান্ডে একই দিনে অভিষেক। শচীন টেন্ডুলকার ও ওয়াকার ইউনুস, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের দুই ক্রিকেটারের ১৯৮৯ সালে করাচিতে অভিষেক হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স ও ডেল স্টেইন, ২০০৪ সালে পোর্ট এলিজাবেথে আন্তর্জার্তিক ক্রিকেট শুরু করেন।

আর আছেন ভারতীয় দুই ব্যাটিং মহারথী – রাহুল দ্রাবিড় ও সৌরভ গাঙ্গুলি। ১৯৯৬ সালের লর্ডস! দিনটা ছিল ২০ জুন। সেই ঐতিহাসিক লর্ডস টেস্টের পর অনেক জল বয়ে গেছে উপমহাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে ৷ তবু এই জুটির কিছু রেকর্ড আজও অক্ষত।

যেমন, সৌরভের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ১৬ টি টেস্ট সেঞ্চুরির প্রতিটিতেই ভারত হয় জিতেছে নয় ড্র করেছে, অর্থাৎ সৌরভ সেঞ্চুরি করলে ভারত হারেনি। তেমনি দ্রাবিড়ের ৩৬ টি টেস্ট সেঞ্চুরির মাত্র চারটি ক্ষেত্রে ভারত হেরে গেছে, বাকি ৩২ বার অপরাজিত থেকেছে।

অন্যদিকে, রাহুল দ্রাবিড় যেমন ১৬ বছরের লম্বা ক্যারিয়ারে খেলতে পারেননি মাত্র তিনটি টেস্ট, তেমনি সৌরভ সব থেকে বেশি চড়াই-উৎরাই পেরোলেও কখনো ব্যাটিং গড় ৪০-এর নিচে নামতে দেননি।

বিক্রম রাঠোরের উইকেট পড়ার পর ব্যাট হাতে নামার সময় কী ভাবছিলেন বেহালার তরুণ? অনেক বছর পর হেসে বলেছিলেন, ‘আমি শুধু এটুকু জানতাম যে প্র‍্যাকটিস ভালো আছে, আমি পারবো। তারপর একটা দু’টো বল ব্যাটে খেলার পরেই বুঝি আজ আমার দিন।’

আর দ্রাবিড়? ভারতের সবচেয়ে বিশ্বস্ত দেওয়াল তো বরাবরই ধীর-স্থির। লর্ডসের চেনা জলহাওয়ায় সেদিন যে বৃত্ত আঁকার কাজ শুরু হয়েছিল আগামী দশকজুড়ে সে বৃত্তই পূর্ণ করেছিলেন দুই মহারথী।

নবাগত দুই তরুণ থেকে ভারতীয় ক্রিকেটের নক্ষত্র হয়ে ওঠার পথ সুগম ছিল না, আর তা ছিল না বলেই হয়ত নিজেদের নিখাদ করতে পেরেছিলেন দুজন, দুজনে আদৌ কতখানি বন্ধু ছিলেন ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বিলেতের লর্ডস থেকে টওন্টন বাইশ গজের দু’পাশে দ্রাবিড় আর সৌরভ মানেই ছিল আশ্চর্য সম্মোহন, তা অস্বীকারের জায়গা বোধ হয় আজও নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link