নর্দাম্পটন থেকে হারারে: অপেক্ষা শেষে স্বস্তি

জুন, ১৯৯৯ থেকে ফেব্রুয়ারি, ২০০৪। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য অত্যন্ত কঠিন একটা সময়। এসময় বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডের জন্ম দিয়েছিল ‘টাইগার’রা। যার মধ্যে ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টানা সবথেকে বেশি হার, টেস্ট ম্যাচে টানা হার, ওয়ানডেতে টানা হার এবং সবচাইতে লম্বা সময় ধরে ওয়ানডেতে জয়হীন থাকার বিশ্ব রেকর্ড (৪৭ ম্যাচ)।

নর্দাম্পটনে পাকিস্তানের বিপক্ষে পাওয়া জয়টা আক্ষরিক অর্থেই ছিল অঘটন। যেখানে আরেকটি জয় পেতে আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় পাঁচ বছর! টেস্ট স্ট্যাটাস পাবার চার বছর পর বাংলাদেশের প্রথম জয়টি এসেছিল ওয়ানডে ফরম্যাটে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে।

তখনকার জিম্বাবুয়ে ছিল বিশ্ব ক্রিকেটেই অত্যন্ত সমীহ জাগানিয়া একটা দল। তার ওপর খেলাটা হয়েছিল তাদের নিজেদের হোম কন্ডিশনে। এদিকে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজটা অলরেডি হেরে বসে আছি আমরা। হাবিবুল বাশারের ক্যাপ্টেন্সি ডেব্যু হয়েছিল ওই সিরিজে। ক্যাপ্টেন্সি অভিষেকে তাঁর কপালে কী জুটেছিল জানেন? জোড়া শূন্যের ‘চশমা’!

ওয়ানডে সিরিজটা ছিল পাঁচ ম্যাচের। প্রথম দুটো ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেলে আদতে সেটা রূপ নিয়েছিল তিন ম্যাচের সিরিজে। আমাদের তৎকালীন কোচ ছিলেন ডেভ হোয়াটমোর। তিনি খুব করে চাইছিলেন ওয়ানডেতে আমরা যেন কিছু একটা করি। ‘কিছু একটা করি’ বলতে কেবল ভাল খেলা নয়, উনি আসলে জিততে চেয়েছিলেন।

তৃতীয় ওয়ানডের আগে অধিনায়ক বাশারকে ডেকে নিয়ে বলেছিলেন, ‘দেখো, আমাদের তো হারানোর কিছু নেই। কত বছর হয়ে গেল আমরা কিছু জিতি না। চলো এবার অন্তত একটা ম্যাচ আমরা জিতে দেখাই। শোনো, হার হারই, কেবল ভাল খেলার মাঝে কোন গর্ব নেই।’

কোচ ডেভ হোয়াটমোর আসলে দলের ভেতরে ‘উইনিং মেন্টালিটি’ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। জিততে না পারলেও লড়তে হবে জেতার মত করেই। ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে জিততে চাই!’ – এটাই ছিল বাংলাদেশের সেদিনের মন্ত্র।

১০ মার্চ, ২০০৪। তৃতীয় ওয়ানডের উইকেটটা ছিল টিপিক্যাল হারারে উইকেট। উইকেটে সবুজ, তাজা ঘাসের উপস্থিতিই বলে দিচ্ছিল, আর্লি ময়েশ্চার কাজে লাগানোর জন্য আদর্শ কন্ডিশন। তো স্বাভাবিকভাবেই টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হিথ স্ট্রিক।

কোচ ডেভ হোয়াটমোর আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন, বিদ্যুতের সাথে ওপেন করবে অলক কাপালি। উদ্দেশ্য ছিল, প্রথম ১৫ ওভারের ফিল্ডিং রেস্ট্রিকশন কাজে লাগিয়ে স্কোরবোর্ডে কিছু কুইক রান এনে দেয়া। কাপালির ‘ওভার দ্য টপ’ তুলে মারার সক্ষমতা দেখে একরকম মরিয়া হয়েই সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন তিনি। কোচ আর অধিনায়ক মিলে কাপালিকে আশ্বস্তও করেছিলেন এই বলে যে, ‘তুমি যদি একটা ম্যাচেও রান না পাও, কোন অসুবিধা নেই।’

কিন্তু ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারেই ডগলাস হন্ডোর দুর্দান্ত আউটসুইঙ্গারে কট বিহাইড হয়ে যান কাপালি (২১ বলে ৯)। খানিক বাদেই হিথ স্ট্রিকের বলে পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ (২৩ বলে ২)। দুই নতুন ব্যাটসম্যান রাজিন আর বাশার মিলে দ্রুত রান তুলবেন কি, মনোযোগ দিলেন ইনিংস মেরামতের কাজে। স্ট্রিক আর হন্ডোর প্রথম স্পেলটা সাবধানে খেলে পার করাটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য।

প্রথম ১৫ ওভারের পাওয়ারপ্লে শেষে দলীয় স্কোর ৩৯/২! হোয়াটমোরের প্ল্যান কাজে লাগাতে পুরোপুরি ব্যর্থ বাংলাদেশি টপ অর্ডার!

রাজিন তখন দলের সহ-অধিনায়ক। প্রথম থেকেই তাঁর ছিল ধরে খেলার সুনাম। অধিনায়ক বাশারের সাথে সেদিন দারুণ একটা পার্টনারশিপ গড়েছিলেন রাজিন। ১৬৭ বলে ১১৪ রানের ম্যারাথন জুটিটা অবশেষে ভাঙল ইনিংসের ৩৭তম ওভারে গিয়ে।

৭ বাউন্ডারিতে সাজানো হাবিবুল বাশারের ৮০ বলে ৬১ রানের চমৎকার ইনিংসটির অপমৃত্যু ঘটল গ্র‍্যান্ট ফ্লাওয়ারের হাফ ট্র‍্যাকারে! শর্ট বল পেয়ে পুল করার লোভটা সামলাতে পারেন নি, বল চলে যায় সরাসরি ডিপ মিড উইকেটের হাতে।

হাতে খুব বেশি ওভার বাকি ছিল না। তাই ‘পিঞ্চ হিটার’ হিসেবে রফিককে নামিয়ে দিলেন হোয়াটমোর। কিন্তু মাত্র ৬ রান করেই রফিক কাটা পড়লেন রান আউটের খাঁড়ায়।

এদিকে রাজিনের ইনিংসটা ছিল কচ্ছপগতির। ফিফটি করতেই লাগিয়েছিলেন ১০১ বল! শেষ পর্যন্ত শন আর্ভিনের স্লোয়ারে ১০৭ বলে ৫৭ রান করে ধরা পড়লেন লং অনে। দুই বলের ব্যবধানে ০ রানে রান আউটের শিকার অলরাউন্ডার মুশফিক বাবু! ১৩৪/২ থেকে মুহূর্তের ব্যবধানে ১৬০/৬!

সেই চিরচেনা বাংলাদেশি কলাপ্স! শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে উঠে রাজিন-বাশারের তিল তিল করে গড়ে তোলা প্ল্যাটফর্মটা ভেঙে চুরমার হয়ে যেতে সময় লাগল না খুব বেশি।

এদিকে খেলা তখন স্লগ ওভারে। হাতে উইকেট আছে মাত্র ৪টা। অন্য যেকোন দিন হলে হয়ত কোনরকমে দুইশ পার করতে পারলেই খুশি থাকতাম আমরা। কিন্তু হোয়াটমোর সেদিন ড্রেসিংরুম থেকে বার্তা পাঠালেন যে, সম্মানজনক স্কোর নয়, আমাদের চাই জেতার মত টোটাল। শেষ দশ ওভারে যতটা সম্ভব মেরে খেলতে হবে। আসলে ১০ ওভারও বাকি ছিল না তখন!

স্লগ ওভারে ‘কুইক’ রান তোলার ভার গিয়ে পড়ল সদ্য টিনএজ পেরোনো মোহাম্মদ আশরাফুলের ওপর। ছোট্ট কাঁধে বড় দায়িত্বটা সেদিন ভালোই সামলেছিলেন অ্যাশ। সঙ্গী হিসেবে পাশে পেয়েছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন ‘চাচা’কে।

টেস্ট ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান আশরাফুলকে জিম্বাবুইয়ানরা খুব ভালো করেই চিনত। এই হারারেতেই সিরিজের প্রথম টেস্টে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ৯৮ রানের একটি ঝকঝকে ইনিংস।

আর্ভিনকে ৪২তম ওভারে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকালেন অ্যাশ। আর ডগলাস হন্ডোর ৪৫তম ওভার থেকে ১ চার, ১ ছক্কায় সুজন নিলেন ১৫। ব্যস, তরতর করে বইতে শুরু করল টাইগারদের রানের তরী!

৪৭তম ওভারের শেষ বলে ইনিংসের ‘তৃতীয়’ ব্যাটসম্যান হিসেবে রান আউট হলেন সুজন (১৬ বলে ২২)। দলের রান ততক্ষণে দুশ’র কোটা পেরিয়ে গেছে। ‘আশার ফুল’ হয়ে তখনো ক্রিজে আছেন আশরাফুল!

খালেদ মাসুদ পাইলটকে (৯ বলে ১১*) নিয়ে শেষ ৩ ওভারে আশরাফুল নিলেন ২৯ রান। ডগলাস হন্ডোকে ফাইন লেগ দিয়ে ‘স্কুপ’ শটে মারা বাউন্ডারিটা আশরাফুলকে নতুন করে চিনিয়েছিল। সেই যুগে ডগলাস ম্যারিলিয়ার ছাড়া ওই শট যে আর কেউ খেলতে পারত না!

পরের ওভারে ফাইন লেগ দিয়ে একই কায়দায় সীমানাছাড়া করলেন হিথ স্ট্রিককেও! ফিফটিতে পৌঁছুলেন ব্লেসিং মাহওয়ারের করা ইনিংসের শেষ ওভারে। মাত্র ৩২ বলে ফিফটি, বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্রুততম; অথচ বাউন্ডারি ছিল মাত্র ৫টা!

৫০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৩৮/৭। ম্যাচ উইনিং টোটাল হয়ত না, আবার জিম্বাবুয়ে খুব সহজে তাড়া করে ফেলবে এমনও না, যেহেতু পিচে বোলারদের জন্য সবসময়ই কিছু না কিছু ছিল।

বাংলাদেশের পেস অ্যাটাকের ওপর অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের ছিল অগাধ আস্থা। বাংলাদেশের ইনিংস শেষে তাঁর মনে হয়েছিল, পেসাররা ভাল জায়গায় বল করতে পারলে এই উইকেটে ২৩৮ ডিফেন্ড করা সম্ভব।

এদিকে জিম্বাবুয়ে ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই ডানহাতি সিমার তারেক আজিজের আঘাত। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে অভিজ্ঞ গ্র‍্যান্ট ফ্লাওয়ার ফিরলেন মাত্র ২ রানে।

তবে ওপেনার বার্নি রজার্স (৫১) আর তিনে নামা স্টুয়ার্ট কার্লাইলের (৭১) দৃঢ়তায় সহজ জয়ের পথেই এগোচ্ছিল স্বাগতিকরা। অবশেষে ইনিংসের ২২তম ওভারে দেখা মিলল কাঙ্খিত সেই ব্রেকথ্রু’র। রজার্সকে পয়েন্টে কাপালির দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত করে ১০৯ রানের ‘থ্রেটনিং’ জুটিটা ভাঙলেন অলরাউন্ডার মুশফিক বাবু।

এই উইকেটটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই যেন রাতারাতি বদলে গেল দলের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ। ফিল্ডাররা বাঘের ক্ষিপ্রতায় ঝাঁপিয়ে পড়তে লাগলেন প্রতিটা বলের পেছনে। বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী। ছাড় দেব না একটি রানও।

অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের ভাষায়, ‘আমরা তখন জয়ের সুবাস পেতে আরম্ভ করেছি। জীবনে প্রথমবারের মত অনুধাবন করতে পারছিলাম, উইনিং মেন্টালিটি জিনিসটা আসলে কি।’

কিছুক্ষণের মধ্যে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের উত্তরসূরি টাইবুকেও (২) ফেরালেন মুশফিক বাবু। ম্যাচের টপ স্কোরার কার্লাইলকে ফিরিয়ে দিয়ে সবচেয়ে বড় আঘাতটা হানলেন মোহাম্মদ রফিক। ফর্মে থাকা অলরাউন্ডার শন আর্ভিনও টিকলেন না বেশিক্ষণ। জিম্বাবুয়ের স্কোর ১২১/১ থেকে ১৪০/৫ হতে সময় লাগল মাত্র ৫৫ বল!

আর্ভিনের আউটটা নিয়েও কিছু বলা দরকার। সুজনের শর্ট বলে পুল করতে চেয়েছিলেন আর্ভিন কিন্তু মিসটাইমিং হয়ে বল উঠে গেল আকাশে! মিড উইকেটে ওঁত পেতে থাকা বদলি ফিল্ডার হান্নান সরকার ছুটলেন বলের পেছন পেছন; বেশ খানিকটা দৌড়ে এসে দুই হাত প্রসারিত করে সামনে ঝাঁপালেন, নিলেন অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ!

ইট ওয়াজ অ্যান অ্যাবসোল্যুট ব্লাইন্ডার!

এদিকে ডিওন ইব্রাহিম তো রীতিমতো ‘টেস্ট’ খেলতে শুরু করেছেন। তাঁর ৩২ বলে ১৩ রানের ‘পেইনফুল’ ইনিংসটায় সমাপ্তি টানেন মোহাম্মদ রফিক। এলোপাথাড়ি স্লগ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে হয়েছিলেন ক্লিন বোল্ড!

৪০তম ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১৬৯/৬। জিততে হলে শেষ ১০ ওভারে প্রয়োজন ৭০ রান। আর মাত্র ৪ উইকেট! জয়ের খুব কাছে চলে এসেছে বাংলাদেশ। বাট ওয়ান থ্রেট স্টিল রিমেইনিং – হিথ স্ট্রিক!

 

হ্যাঁ, জিম্বাবুয়ের ‘দুঃসময়ের কাণ্ডারি’ অধিনায়ক হিথ স্ট্রিক যে তখনো ছিলেন উইকেটে। স্ট্রিককে দ্রুত ফেরাতে না পারলে টাইগারদের হাত থেকে ম্যাচ ফসকে যাওয়ার ভাল সম্ভাবনা ছিল তখনো।

৪৬তম ওভারের শেষ বল। হিথ স্ট্রিক আর স্টুয়ার্ট মাতসিকেনেরির জুটিটা সবে জমতে আরম্ভ করেছে। ৩১ বলে দরকার ৪০ রান। এমন সময় পেসার তাপস বৈশ্য দিলেন কিনা হাই ফুলটস!

কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন বাংলাদেশের। তাপসের ফুলটসে স্ট্রিকের (৩০) মিসটাইমড স্লগ পরিণত হল ক্যাচে; উইকেটের পেছনে খালেদ মাসুদের বিশ্বস্ত গ্লাভসে।

জিম্বাবুয়ের শেষ ভরসা তখন মাতসিকেনেরি। ৪৯তম ওভার শেষে দলের সংগ্রহটা টেনেটুনে নিয়ে গেলেন ২২৬ রানে। শেষ ওভারে লাগে ১৩ রান।

এদিকে শেষ ওভারটা কাকে দিয়ে করাবেন তাই নিয়ে টেনশনে হাবিবুল। রফিক, সুজন, তাপস, মুশফিক — প্রত্যেকেরই ১০ ওভারের বোলিং কোটা শেষ। বাকি ছিলেন কেবল তারেক আজিজ (৫ ওভার) আর অলক কাপালি (৪ ওভার)।

শেষমেশ প্রথম ৫ ওভারের স্পেলে ৩৪ রান দেয়া তারেকের হাতেই বল তুলে দিলেন সুমন। আস্থার প্রতিদান দিতে ভুল করলেন না তারেকও। প্রথম বলেই ভেঙে ছত্রখান করে দিলেন স্টুয়ার্ট মাতসিকেনেরির (২০) স্টাম্প! পরের বলে একই পরিণতির শিকার ডগলাস হন্ডো!

ফুল এন্ড স্ট্রেইট! ইউ মিস আই হিট! তারেক আজিজ অন আ হ্যাটট্রিক!

তারেক ভেবেছিলেন জিম্বাবুয়ে বুঝি অলআউট হয়ে গেছে। আনন্দের আতিশয্যে স্টাম্প তুলে নিয়ে অলরেডি দৌড়ও শুরু করে দিয়েছিলেন। তাঁকে শান্ত করলেন অধিনায়ক সুমন, জানালেন খেলা এখনও শেষ হয় নি, আরেকটা উইকেট বাকি আছে।

না, তারেকের সেদিন হ্যাটট্রিক হয় নি। তবে শেষ চার বলে দিয়েছিলেন মাত্র চার রান। বাংলাদেশ জিতেছিল মাত্র ৮ রানে। ৩২ বলে অপরাজিত ৫১ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন আশরাফুল।

ম্যাচশেষে টাইগারদের উল্লাসটা ঠিক বাঁধভাঙা ছিল না। আসলে আমরা ভুলেই গিয়েছিলাম ম্যাচ জিতলে কীভাবে সেটা সেলিব্রেট করতে হয়! উল্লাসে ফেটে পড়ার বদলে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিল সবাই। সবার চোখের এই অশ্রু ছিল আনন্দের অশ্রু, দীর্ঘ পাঁচ বছর বয়ে বেড়ানো গ্লানি আর আক্ষেপ ঘোচানো সাফল্যের অশ্রু।

২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা লাভের পর এটাই ছিল আমাদের প্রথম জয়, তাও জিম্বাবুয়ের মত বড় দলের বিপক্ষে। অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে পাওয়া এই জয়টা তাই সবসময়ই খুব স্পেশাল আমার কাছে।

অবিস্মরণীয় এই জয়ের কৃতিত্বটা সবসময় আশরাফুল আর বাশারকে দেয়া হলেও ‘আনসাং হিরো’ ছিলেন তারেক আজিজ। মাত্র ষষ্ঠ ওয়ানডে খেলতে নামা এই বাইশ বছরের তরুণ না থাকলে হয়ত আমরা সেদিন নাও জিততে পারতাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link