তিন অধ্যায়ের এক টেলর

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেলর। লম্বা সময় দেশটির ক্রিকেটকে আগলে রেখেছিলেন এই ব্যাটসম্যান।

জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইন আপের মূল ভরসা ছিলেন তিনি। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট তাঁর আগের সুদিন হারিয়েছে অনেকদিন হল। এর মধ্যে ব্রেন্ডন টেলরের ব্যাটে মাঝেমধ্যে সেসব দিনের কথা স্মরণ করাতো জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট। ক্যারিয়ার যখন শেষ করেছেন, তখন জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের কিংবদন্তি হয়েই ইতি টেনেছেন। অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার কিংবা অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলদের মতই পরিসংখ্যান তাঁর। লম্বা আন্তর্জাতিক ক্যরিয়ারে দেশটির হয়ে দারুণ কিছু ইনিংস খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। এর মধ্যে সেরা কয়েকটি ইনিংসকে জড়ো করেছে খেলা ৭১।

  • অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬০ (২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ)

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের একেবারে শুরুর দিককার ঘটনা। ২০০৭ সালে গ্রুপ পর্বের এক মাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছে জিম্বাবুয়ে। সেই ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় অজিরা।

যদিও আগে ব্যাট করে নিজেদের সেরাটা দিতে পারেনি তাঁরা। ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রান সংগ্রহ করে অজিরা।  জবাবে ব্যাট করতে নেমে দারুণ এক ইনিংস খেলেন টেলর। ৪৫ বলে চারটি চার ও দুইটি ছয়ে করেন ৬০ রান। তাঁর এই ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ উইকেটের জয় পায় জিম্বাবুয়ে।

  • বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৭১ (২০১৩, দ্বিপাক্ষিক সিরিজ)

২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে যায় বাংলাদেশ। সেই সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচে টস জিতে জিম্বাবুয়েকে আগে ব্যাট করতে পাঠায় বাংলাদেশ। শুরুর দিকে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং অর্ডার তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ছিল। সেই সময় টেস্ট ক্রিকেটে নিজের কার্যকারিতা দেখান টেলর। দলকে খাঁদের কিনারা থেকে তুলে নিয়ে আসেন। ব্যাটিং করেন ঠিক ৪৮৯ মিনিট। টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের সেরা ১৭১ রানের অপরাজিত ইনিংসটি সেদিন খেলেন ব্রেন্ডন টেলর। পরে ৩৮৯ রানের পুঁজি পায় জিম্বাবুয়ে।

এরপর দ্বিতীয় ইনিংসেও একইরকম কীর্তি গড়েন এই ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ যখন ম্যাচে ঘুরে দাড়াচ্ছিল তখন আবার বাঁধা হয়ে দাড়ান টেলর। এবারো খেলেন ১০২ রানের অপরাজিত এক ইনিংস। টেলরের এই দুই ইনিংসে ভর করে পরে ৩৩৫ রানের বিশাল জয় পেয়েছিল জিম্বাবুয়ে।

  • ভারতের বিপক্ষে ১৩৮ (২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ)

ব্রেন্ডন টেলর তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ফর্মে ছিলেন ২০১৫ বিশ্বকাপের সময়। সেই বিশ্বকাপে টানা দুইটি সেঞ্চুরি করেন এই ব্যাটসম্যান। তাঁর মধ্যে একটি ছিল ভারতের বিপক্ষে। ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি  টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন।

২৮.৩ ওভারে মাত্র ১২৬ রানেই চার উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল জিম্বাবুয়ে। এবারো দেশটির রক্ষাকর্তা হয়ে এসেছিলেন টেলর। ১১০ বলে খেলেন ১৩৮ রানের দারুণ এক ইনিংস। ১৫ চার ও ৫ ছয়ের সেই ইনিংসে তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ১২৫.৪৫। তাঁর এই ইনিংসে ২৮৭ রানের লড়াকু পুঁজি পায় জিম্বাবুয়ে।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link