নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানকে হারিয়ে সুপার টুয়েলভের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। তবে এই ম্যাচেও এক পর্যায়ে হারের পথেই ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষের পাঁচ ওভারে দুর্দান্ত বল করে জয় নিশ্চিত করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। এমন জয়ের পর ম্যাচ সেরা সাকিব আল হাসান জানিয়েছেন অভিজ্ঞতাই ম্যাচে বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।
১৫৪ রান তাড়া করতে নেমে ১১ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ৮০ রান তুলে ফেলেছিল ওমান। ৫৪ বলে তাদের প্রয়োজন ছিল ৭৪ রান। আর শেষের পাঁচ ওভারে হাতে ছয় উইকেট রেখে স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল ৫২ রান। কিন্তু শেষের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় এই সমীকরণ মেলাতে পারেনি ওমান। দুর্দান্ত বল করে ওমানকে ম্যাচ ছিটকে দেন বাংলাদেশের বোলাররা।
যেখানে বল হাতে তিন উইকেট শিকার করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন সাকিব। ব্যাট হাতেও ২৯ বলে ৪২ রান করেন এই অলরাউন্ডার। কিন্তু আগের ম্যাচেই স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের দিনে ব্যর্থ ছিলেন তিনিও। তাই এমন জয়ে খুশি সাকিব। ম্যাচ শেষে সাকিব শুভ কামনা জানিয়েছেন ওমানের জন্যও।
সাকিব বলেন, ‘এটা ঠিক যে স্কটল্যান্ডের সাথে হারটা সবাইকে আঘাত করেছে, আমরা কেউ এটা আশা করিনি। এটা অনেক কঠিন ছিল। ওমান ভালো ক্রিকেট খেলেছে। কিন্তু আমরা আমাদের স্নায়ু ধরে রেখেছি। অভিজ্ঞতা বড় ভূমিকা পালন করেছে। ওমান ১৫ ওভার পর্যন্ত ম্যাচে ছিল এটা তাদের বড় কৃতিত্ব। তাঁরা দল হিসাবে খেলেছে। তাদের ভবিষৎয়ের জন্য শুভ কামনা জানাই।’
তবে আজ জিতলেও এখনো সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করার সমীকরণ সহজ নয় বাংলাদেশের জন্য। নিজেদের শেষ ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনির সাথে জয়ের পাশাপাশি ওমান ও স্কটল্যান্ডের ম্যাচের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। সাকিবও তাকিয়ে সেই দিকেই।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এই জয় আমাদের স্নায়ুকে স্থির করবে। আমাদের আরো একটি ম্যাচ আছে সেটা জিততে হবে। এবং দেখতে হবে ওমান এবং স্কটল্যান্ডের ম্যাচটি কী হয়।’
আজ জয় পেলেও উন্নতির এখনো অনেক জায়গা দেখছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিশেষ করে পাওয়ার প্লেতে উন্নতি করার তাগিদ অনুভব করছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। তবে তিনি প্রশংসা করেছেন সাকিব ও নাঈম শেখের। এছাড়া মাহমুদউল্লাহ ম্যাচ শেষে ধন্যবাদ দিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের। যারা দলকে সমর্থন দিতে মাঠে এসেছিল।
মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘আমরা জয় পেলেও আমি মনে করি আমাদের উন্নতি করার অনেক জায়গা রয়েছে। আশা করি সবাই খুশি। যারা মাঠে এসেছিল তাদের ধন্যবাদ। তাঁরা আমাদের থেকে জয়ের প্রত্যাশা করে। তাদের জন্য জয় এনে দেওয়া এবং এটি দেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাকিব এবং নাঈম দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে। তাদের ভালো জুটি হয়েছিল। এই জুটিতেই ১৫০ রান পার করেছি। কিন্তু আমাদের উচিত ছিল নতুন বলে ভালো বল করা। অনেক গুলো ওয়াইড বল করেছি। এগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা শেষে ভালোই বল করেছি। আমার মনে হয় আমাদের প্রথম ছয় ওভারের ব্যাটিং বোলিংয়ে উন্নতি করতে হবে।’
তবে নিজ দেশের সমর্থকদের খুশি করতে না পেরে হতাশ ওমানের অধিনায়ক জিসান মাকসুদ। ম্যাচ শেষে তিনি জানিয়েছেন এটা তাঁরা করার মতই লক্ষ্য ছিল। তিনি আশাবাদী আজকের ম্যাচের ভুল গুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে তাঁর দল।
মাকসুদ বলেন, ‘এটি তাড়া করার মত লক্ষ্য ছিল। আমরা মাঝে যে ভাবে ব্যাটিং করেছি। কিন্তু শেষের পাঁচ ওভার ভালো যায়নি, আমরা দ্রুত উইকেট হারিয়েছি। ওদের বোলারদের কৃতিত্ব। আমরা ১৫ ওভার পর্যন্ত খেলায় ছিলাম। শেষ পাঁচ ওভারে ৫০ রানের মত লাগতো, এটা বেশি কিছু ছিল না। আমরা দুঃখিত, সমর্থকদের খুশি করতে পারিনি। এটা একটা খেলা আমরা ফিরে আসবো ও সবাইকে খুশি করবো। আমাদের দেখতে হবে আমরা কোথায় ভুল করেছি, সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে।’