আইপিএল থেকে রাজনীতির ময়দানে

ক্রিকেটারদের জীবনটা কেবল বাইশ গজেই সীমাবদ্ধ নয়। বিশেষ করে খেলোয়াড়ী জীবন শেষ করার পর একেকজনের জীবন একেক দিনে মোড় নেই। অনেক রাজনীতির মাঠেও পা রাখেন। এই যেমন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) খেলা অনেক তারকাই ভবিষ্যতে নাম লিখিয়েছেন রাজনীতিতে। আর এখানে কেবল ভারতীয় ক্রিকেটারই নন। আছেন, বাংলাদেশি ও শ্রীলঙ্কান দুই তারকাও।

  • লক্ষ্মীরতন শুক্লা (ভারত)

ভারতীয় জাতীয় দলের হয়ে তিনটি ওয়ানডে খেলা এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার ছিলেন রঞ্জির বড় পারফরমার। ২০১৪ সাল অবধি তিনি খেলেছেন আইপিএলে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের পর তাঁকে দিল্লী ডেয়ারডেভিলস ও সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ দলেও দেখা গেছে।

২০১৬ সালে তিনি যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। নির্বাচনে হাওড়া থেকে তিনি হারান ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রার্থী ও অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলিকে। পরে মমতা ব্যানার্জির অধীনে তিনি যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

  • শচীন টেন্ডুলকার (ভারত)

শুধু ভারত কেন, ক্রিকেটের ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তিনি। আইপিএলে তিনি খেলেন ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল অবধি। পুরোটা সময়ই তিনি ছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স দলে, খেলেন ৭৮ টি ম্যাচ।

খেলোয়াড়ী জীবন শেষ করার আগেই ২০১২ সালে তিনি রাজ্যসভার সদস্য হন। সাংসদ হিসেবে তিনি যে বেতন ও ভাতা পান তার পুরোটাই তিন দান করেন প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে।

  • সনাথ জয়াসুরিয়া (শ্রীলঙ্কা)

আইপিএলের প্রথম তিনটি মৌসুমে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলেন এই লঙ্কান কিংবদন্তি। ২০১০ সালে সাবেক এই অধিনায় লঙ্কায় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন। তিনি মাহিন্দা রাজাপাকশের সরকারের ডাক বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। পরে তিনি রাষ্ট্রপতি মৈত্রিপালা সিরিসেনার অধীনে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তবে, ২০১৫ সালে আর নির্বাচনে অংশ নেননি শ্রীলঙ্কার ১৯৯৬ বিশ্বকাপ জয়ী দলের এই সদস্য। এখন রাজনীতি আর ক্রিকেট – দু’টো থেকেই দূরে আছেন তিনি।

  • গৌতম গম্ভীর (ভারত)

ভারতের হয়ে ২০১১ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য গৌতম গম্ভীর কলকাতা নাইট রাইডার্সের ইতিহাসের সেরা অধিনায়ক। কেকেআরের ইতিহাসের দু’টি আইপিএল শিরোপাই এসেছে তাঁর অধীনে। এছাড়া তিনি খেলেছেন দিল্লী ডেয়ারডেভিলসের (অধুনা দিল্লী ক্যাপিটালস) হয়েও।

ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ করার পর তিনি ২০১৯ সালে যোগ দেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি)। পূর্ব দিল্লী থেকে তিনি লোকসভা নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়যুক্ত হন।

  • মাশরাফি বিন মুর্তজা (বাংলাদেশ)

২০০৯ সালে অনেক আলোচনার ঝড় তুলে কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে নাম লেখান নড়াইল এক্সপ্রেস। নিলামে তাকে নিয়ে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের সাথে লড়াই চলে কেকেআরের। শেষ অবধি ছয় লাখ ডলারে কেকেআরে আসেন মাশরাফি। তবে, সুযোগ পান মাত্র একটা ম্যাচে। ডেকান চার্জার্সের বিপক্ষে সেই ম্যাচে চার ওভারে ৫৮ রান দেন।

মাশরাফি খেলোয়াড়ি জীবন শেষ করার আগেই রাজনীতির মাঠে নামেন। ২০১৮ সালে তিনি বাংলাদেশে আওয়ামী লিগের মনোনয়ন পান। ২০১৯ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নড়াইল দুই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

  • তেজস্বী যাদব (ভারত)

তিনি কখনোই বড় কোনো ক্রিকেটার ছিলেন না। একটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ, দু’টি লিস্ট ‘এ’ ও চারটি টি-টোয়েন্টিতেই থেমে যায় তাঁর ক্যারিয়ার। দিল্লী অনূর্ধ্ব ১৯ দলের সাবেক এই ক্রিকেটার ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল – মোট চার মৌসুম ছিলেন দিল্লী ডেয়ারডেভিলসে। যদিও, কখনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি।

বর্তমানে তিনি বিহার রাজনীতির বড় মুখ। না হয়ে ‍উপায়ও নেই। তিনি কিংবদন্তিতুল্য ভারতীয় রাজনীতিবিদ লালু প্রসাদ যাদবের ছেলে। তেজস্বী বিহারের সাবেক সহকারী মূখ্য মন্ত্রী। এখন তিনি বিরোধী দলের নেতা। তিনি ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে কমবয়সী বিরোধী দলীয় নেতা।

  • মোহাম্মদ কাইফ (ভারত)

সাবেক এই ক্রিকেটার চারটি আইপিএল মৌসুম খেলেন রাজস্থান রয়্যালস ও র‌য়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে। পরে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। উত্তর প্রদেশের ফুলপুর থেকে তিনি ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন করেন, কিন্তু হেরে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link