নামিবিয়াকে ৬২ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে সুপার টুয়েলভে নিজেদের দ্বিতীয় জয় তুলে নিলো আফগানিস্তান। এই জয়ে সেমিফাইনালের দৌড়ে এগিয়ে গেলো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এই ‘ডার্কহর্স’।
১৬১ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে নামিবিয়া। আফগান পেসারদের দাপটে পাওয়ারপ্লেতেই ৩ উইকেট হারায় নামিবিয়া। মাত্র ২৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় সুপার টুয়েলভে প্রথমবার জায়গা করে নেওয়া দলটি। এরপর দলের রান ৭ যোগ হতেই রশিদ খানের গুগলিতে বোল্ড জ্যান গ্রিন! ৩৬ রানে শেষ ৪ উইকেট!
পঞ্চম উইকেটে ডেভিড উইসে ও গারহার্ড ইরাসমাসের ব্যাটে ভীত গড়ার চেষ্টা করে নামিবিয়া। কিন্তু ২০ রানের জুটির পথে এক ওভারেই পর পর দুই উইকেট হারায় নামিবিয়া। হামিদ হাসানের দাপটে মাত্র ৫৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় নামিবিয়া।
এরপর হামিদ, নাভিনদের দাপটের সামনে আর দাঁড়াতেই পারেনি নামিবিয়ার লোয়ার অর্ডারের ব্যাটাররা। একপ্রান্তে ডেভিড উইসে থিতু হলেও বাকিদের যাওয়া আসার মিছিলে খেলতে পারেননি শেষ পর্যন্ত। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে নামিবিয়া। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৬ রানের ইনিংস খেলে আউট হন উইসে।
শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পেলম্যানের অপরাজিত ১২ রানে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ৯৮ রান সংগ্রহ করে নামিবিয়া। ৬২ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আফগানরা।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে হজরতউল্লাহ জাজাই ও মোহাম্মদ শাহজাদের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় আফগানিস্তান। ওপেনিং জুটিতেই আসে ৫৩ রান। পাওয়ারপ্লেতেই পঞ্চাশ পার আফগানদের। এরপর দলীয় ৫৩ রানে ব্যক্তিগত ২৭ বলে ৩৩ রানে বিদায় নেন জাজাই।
আগের ম্যাচের মতোই হাত খোলার আগেই আউট রহমানউল্লাহ গুরবাজ। ৬৮ রানে ২ উইকেট হারায় আফগানরা। তৃতীয় উইকেটে আসগর আফগানের সাথে ২১ রানের জুটির পথে ৩৩ বলে ৪৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে আউট হন শাহজাদ। ২ চার ও ৩ ছক্কায় নান্দনিক এক ইনিংস খেলেন তিনি।
একপ্রান্তে নাজিবুল্লাহ জাদরান নিয়ে বড় সংগ্রহের দিকে এগোন ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা আসগর। কিন্তু এদিন বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন জাদরান। মাত্র ৭ রানেই ফিরেন তিনি। তবে পঞ্চম উইকেটে মোহাম্মদ নবি ও আসগরের ২০ বলে ৩৫ রানের ঝড়ো জুটি আফগানদের পৌঁছে দেয় দেড়শোতে! ইনিংসের একদম শেষদিকে দলীয় ১৪৮ রানে ব্যক্তিগত ২৩ বলে ৩১ রানে বিদায় নেন আসগর আফগান। বিদায়ী ম্যাচে সতীর্থ ক্রিকেটাররা ব্যাট উঁচিয়ে অভ্যর্থনা জানায় সাবেক এই আফগান অধিনায়ককে।
শেষ পর্যন্ত নবীর অপরাজিত ১৭ বলে ১ ছয় ও ৫ চারে ৩২ রানে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬০ রান করে আফগানিস্তান। দলের পক্ষে শাহজাদ সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন। অপরদিকে নামিবিয়ার পক্ষে রাবেন ট্রাম্পেলম্যান ও লফটি-ইটন ২ টি করে উইকেট শিকার করেন।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান – ১৬০/৫ (২০ ওভার); শাহজাদ ৪৫(৩৩), জাজাই ৩৩(২৭), নবি ৩২(১৭)*, আসগর ৩১(২৩); ট্রাম্পেলম্যান ৪-০-৩৪-২, লফটি-ইটন ৪-০-২১-২।
নামিবিয়া – ৯৮/৯ (২০ ওভার); ডেভিড উইসে ২৬ (৩০), লফটি-ইটন ১৪(১৬), ট্রাম্পেলম্যান ১২(৯)*, ভ্যান লিগেন ১১(৮); হামিদ ৪-০-৯-৩, নাভিন ৪-০-২৬-৩, গুলবাদিন ৪-১-১৯-২, রশিদ ৪-০-১৩-১।
ফলাফল: আফগানিস্তান ৬২ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: নাভিন উল হক (আফগানিস্তান)।