আইপিএলে নতুন মুখের সন্ধানে

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আরো দুইটি ফ্র্যাঞ্চাইজি। ভারতের বেশ বড় বড় কোম্পানি এই ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলোর মালিক। পরের মৌসুমে মাঠে নামবে নতুন এই দল দুটিও। এই দুই দলের সংযোজনে আইপিএলের আকর্ষণ আরো বাড়বে বলেই আশা করা যায়।

তবে বিশ্বের অনেক ক্রিকেটারের জন্যও এটা বেশ বড় সুযোগ। এখন মোটামুটি সব দেশের ক্রিকেটারই আইপিএলে খেলার স্বপ্ন দেখেন। তবে বেদিশি ক্রিকেটারদের জন্য কোন আইপিএল দলে জায়গা করে নেয়াটা সহজ না। নতুন করে দুই দল আসায় আরো অন্তত গোটা দশেক বিদেশি ক্রিকেটারকে আইপিএলে দেখা যাবে। আইপিএলে নতুন করে নাম লিখানোর দৌড়ে কার এগিয়ে আছেন তাঁদের নিয়েই এই তালিকা।

  • অ্যাশটন অ্যাগার (অস্ট্রেলিয়া)

গত দুই বছরে সাদা বলের ক্রিকেটে অজিদের হয়ে নিজেকে দারুণ এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন অ্যাস্টন অ্যাগার। অজিদের হয়ে ৩৯ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৪২ উইকেট। বিশেষ করে উপমহাদেশের কন্ডিশনে দারুণ সফল এই স্পিনার। এছাড়া ব্যাট হাতেও শেষের দিকে কার্যকর হতে পারেন তিনি। এছাড়া বাঁহাতি এই স্পিনার বল হাতে পাওয়ার প্লে কিংবা মিডল ওভার যেকোন সময়েই বোলিং করতে পারেন। ফলে আইপিএলের নিলামে এই অলরাউন্ডারকে নিয়ে আগ্রহ দেখাতেই পারে দলগুলো।

  • চামিকা করুনারত্নে (শ্রীলঙ্কা)

এই বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার হয়ে বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটারকে দারুণ পারফর্ম করতে দেখা গিয়েছে। চামিকা কারুনারত্নেও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে বেশ কার্যকর। ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ব্যাট-বল দুই ডিপার্টমেন্টে পারফর্ম করেছিলেন তিনি। ফলে এবারের আইপিএলে তিনি জায়গা পেতে পারেন।

  • ম্যাট পারকিনসন (ইংল্যান্ড)

ইংলিশ এই লেগ স্পিনার ইতোমধ্যেই বেশ সুনাম কুড়িয়ে ফেলেছেন। ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ সফল এই লেগ স্পিনার। মোট ৬৭ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে তুলে নিয়ছেন ১০৩ টি উইকেট। ইংল্যান্ডের হয়ে চারটি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৬ উইকেট। ফলে তাঁর দিকেও আগ্রহ দেখাতে পারে আইপিএলের দলগুলো।

  • আন্দ্রে ফ্লেচার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ক্যারিবীয় ক্রিকেটারদের সবসময়ই আলাদা মূল্য দেয়া হয়। লম্বা সময় ধরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলছেন ফ্লেচার। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সপ্তম সর্বোচ্চ রান স্কোরারও তিনি। উপরের দিকে একজন অ্যাটাকিং ব্যাটসম্যান চাইলে আইপিএলের দলগুলো তাঁকে খুব ভালো ভাবে ব্যবহার করতে পারে। এছাড়া বিগ ব্যাশেও সাফল্য পেয়েছেন তিনি।

  • জো রুট (ইংল্যান্ড)

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন আর টি-টোয়েন্টি না খেললেও আইপিএলে দারুণ কার্যকর হতে পারেন জো রুট। ইংল্যান্ডের এই টেস্ট অধিনায়ক আইপিএলের কোন ফ্র্যাঞ্চাইজির অধিনায়কের দায়িত্বও পালন করতে পারেন। এছাড়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁর পরিসংখ্যানও দারুণ প্রশংসনীয়। ৩২ টি-টোয়েন্টি মক্সাচে ৩৭.৫২ গড়ে করেছেন ৮৯৩ রান।

  • রোস্টন চেজ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

টেকনিক্যালি বেশ শক্তিশালী হওয়ায় রোস্টন চেজের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল টেস্ট ক্রিকেট দিয়েই। তবে ধীরে ধীরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করছেন ক্যারিবীয় এই ব্যাটসম্যান। ক্যারিবীয়ান প্রিমিয়ার লিগেও বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন তিনি। ফলে আইপিএল অভিষেকের আশা করতে পারেন তিনিও।

  • রাসি ভ্যান ডার ডুসেন (দক্ষিণ আফ্রিকা)

২০২১ সালের আইপিএলের দ্বিতীয় অংশেই আইপিএলে খেলার ডাক এসেছিল ডুসেনের সামনে। রাজস্থান রয়্যালস ইনজুরড বেন স্টোকসের পরিবর্তে তাঁকে দলে ভিড়াতে চেয়েছিল। তবে দক্ষিণ আফ্রিক ক্রিকেটের কাছে সেই সময় অনুমতি পাননি তিনি। ফলে পরের আইপিএলে তাঁকে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা।

  • আভিস্কা ফার্নান্দো (শ্রীলঙ্কা)

শ্রীলঙ্কার হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান্দের একজন তিনি। পাওয়ার প্লেতে দারুণ ব্যাটিং করতে পারেন তিনি এবং স্পিনারদের বিপক্ষেও বেশ সফল। ফলে টপ অর্ডারে ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো পছন্দ হতে পারেন তিনি। ফলে আইপিএলের নিলামে নজর থাকবে তাঁর উপরও।

  • ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা)

শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট এখন নতুন করে ফেরা স্বপ্ন দেখছে কিছু তরুণ ক্রিকেটারের কাঁধে ভর করে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। লেগ স্পিন দিয়েই ইতোমধ্যেই বিশ্ব ক্রিকেটে নজর কেড়েছেন। ৩৩ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাত্র ১৩.৭১ গড়ে নিয়েছেন ৫২ উইকেট। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁর ইকোনমি রেট মাত্র ৬.২১। এছাড়া ব্যাট হাতেও দারুণ কার্যকর তিনি। ফলে আইপিএলের নতুন মুখগুলোর একজন হবার দৌড়ে বেশ এগিয়ে আছেন তিনি।

  • ডেভন কনওয়ে (নিউজিল্যান্ড)

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ক্রিকেট খেলতে চলে এসেছেন নিউজিল্যান্ডে। গত এক বছরে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের অন্যতম তারকা হয়ে উঠেছেন এই ব্যাটসম্যান। টেস্টে নিজের অভিষেক ম্যাচেই করেছেন ডাবল সেঞ্চুরি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও অবিশ্বাস্য সফল তিনি। ১৫ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫৫ গড়ে রান করেছেন। তাঁর ব্যাটিং স্ট্রাইকরেট ছিল ১৪৮.৩৬। ফলে আইপিএল নিলামে অন্যতম আকর্ষণীয় ক্রিকেটার তিনি।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link