লিটন খেললে ব্যাটিংটাই সহজ মনে হয়

চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে বাজে শুরুর পরেও দিনটা বাংলাদেশেরই হয়ে থাকলো। সকালে মাত্র ১৬ ওভারেই বিদায় নেন টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান। সাগরিকার পাশেই এক কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে আগুন লেগে কালো ধয়ো ছড়িয়ে যায় চার পাশে। কালো ধোয়া আসে বাংলাদেশের ক্রিকেটের উপরও। বিশেষ করে মুমিনুল বিদায় নিলে যেন অসহায় হয়ে পড়ে ম্যাচ দেখতে আসা দর্শকরা।

তবে দিনের শেষে মুখে হাসি নিয়েই মাঠ ছেড়েছেন চট্টগ্রামের দর্শকরা। দুই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের অপরাজিত জুটিতে দিন শেষে ভালো ভাবেই ম্যাচে ফিরে এসেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সামনে এখন সুযোগ বড় সংগ্রহ করার। মুশফিক ও লিটনের সামনেও আছে বড় ইনিংস খেলার সুযোগ। দুজনের অপরাজিত ২০৪ রানের জুটিতে তাই আপাতত সস্তিতে দেশের ক্রিকেট সমর্থকরা।

৪৯ রানে চার উইকেট হারানোর পরই ম্যাচের হাল ধরেন এই দুজন। সারাদিনে আর কোন উইকেট নিতে পারেননি পাকিস্তানি বোলাররা। বাংলাদেশকে এক মহাবিপর্যয় থেকে তুলে এনেছেন লিটন ও মুশফিক। প্রথম দিনের খেলা শেষে তাই এই দুজনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সবাই। প্রশংসা করতে কার্পন্য করেননি বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্স।

সংবাদ সম্মেলনে এসে ২০৪ রানের অপরাজিত এই জুটি নিয়ে প্রিন্স বলেন, ‘৪৯ রানে চার উইকেট পড়ে যাওয়ার পর এই দুইজন দারুণ ক্যারেক্টার ও স্কিল দেখিয়েছে বাইশ গজে। মুশফিক শুরুতে ধৈর্য্য নিয়ে খেলেছে। সে খুবই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। অনেক তরুণ ক্রিকেটারই হয়তো লো স্ট্রাইকরেটের কারণে প্যানিক করতো তবে মুশফিক টেস্ট ক্রিকেটে ভীষণ পরিপক্ক। সে স্থির থেকেছে কারণ সে জানতো টেস্টে পরে চাইলেই দ্রুত রান তোলা যাবে। সবমিলিয়ে দারুণ এক ইনিংস খেলেছে সে।’

ওদিকে টেস্ট ক্রিকেটে এবছর দারুণ ফর্মে আছেন লিটন দাস। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান টেস্ট ক্রিকেটে এর আগে বাংলাদেশের হয়ে ৯ টি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। সর্বোচ্চ ৯৫ রানের ইনিংস খেলেও আউট হয়েছেন একবার। তবে সেঞ্চুরির দেখা পাননি কখনো। তবে সাগরিকা আজ তাঁকে দুহাত ভরে দিয়েছে। তুলে নিয়েছে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি।

লিটনের ব্যাটিং নিয়ে মুগ্ধ প্রিন্স বলেন, ‘আমি খুব মুগ্ধ যে কী গুছানো ও শান্ত একটা ইনিংস খেলেছে। পুরো ড্রেসিং রুম ভীষণ খুশি ছিল লিটন যখন সেঞ্চুরিটা করতে পারলো। তবে তাঁর শরীরে যখন সমস্যা হচ্ছিল তখন আমরা সবাই ভয় পেয়েছিলাম। তবে সে বুঝতে পেরেছিল যে দিনটা শেষ করে আসতে পারবে ওর শরীর। আমার ধারণা ও আজ রাতেই সুস্থ হয়ে যাবে এবং কালকে আবার ব্যাটিং করতে নামতে পারবে।’

ওদিকে টেস্টে ভালো করলেও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একেবারেই ভালো সময় যাচ্ছিল না লিটনের। শোনা যায় টি-টোয়েন্টি দলের পরিকল্পনায়ই আর তাঁকে রাখা হচ্ছেনা। এমন একটা খারাপ সময়ে এসে টেস্ট ম্যাচে আবারো নিজেকে প্রমাণ করলেন লিটন। তবে প্রিন্স জানান টি-টোয়েন্টি নিয়ে এখন আর তাঁরা কথা বলছেন না।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদশের এই ব্যাটিং কোচ বলেন, ‘আমি তাঁকে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সময় তেমন কিছু জিজ্ঞেস করিনি। তবে ও এখানে( চট্টগ্রামে) আগেই চলে এসেছিল টেস্টের জন্য প্রস্তুতি নিতে। সে ছোট একটা দুটো টেকনিক্যাল সমস্যা নিয়ে কাজ করেছে। তেমন বড় কিছু না। তবে আমার মনে হয় মাঠে আজ সে দারুণ ব্যালেন্স করে খেলতে পেরেছে। লিটন যখন ভালো খেলে তখন ব্যাটিংটা দেখতেও সহজ মনে হয়।

 

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link