ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ বিশ্বের ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্ট গুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং জাঁকজমকপূর্ণ, এ কথা স্বীকার করতে কেউ হয়ত দ্বিতীয়বার ভাববে না। কি নেই এতে, খ্যাতি, টানটান উত্তেজনা, অঢেল টাকার ছড়াছড়ি, আর নামিদামি খেলোয়াড়দের মিলনমেলা। এসব কিছু মিলিয়েই আইপিএল। আগামী বছরের আইপিএলের মেগা অকশনের অনুষ্ঠান হতে চলেছে ২০২২ এর ফেব্রুয়ারিতে। ইতোমধ্যে সকলের জানা যে এবারের আসরে থাকছে দশটি দল।
নতুন দুইটি দল যোগ হওয়ার ফলে পুরো ড্রাফট ঢেলে সাঁজাতে হয়েছে আইপিএল কমিটিকে। এর ফলে ভারতীয় বেশকিছু পেস বোলারকে আবার যেতে হবে নিলামের মধ্য দিয়ে। যেহেতু নতুন দুইটি দল যুক্ত হয়েছে সেহেতু খেলোয়াড়দের চাহিদাও বেড়ে যাবে নি:সন্দেহে। তাতে যে চড়া দাম পাবেন বেশকিছু খেলোয়াড় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁদের মধ্যে যে সকল ভারতীয় পেস বোলার থাকতে পারে তাঁদের নিয়েই আজকের আলোচনা।
- মোহাম্মদ শামি
ভারতীয় পেস বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ সামি হতে পারেন বেশ চড়া দামে বিক্রি হওয়া খেলোয়াড়দের একজন। তিনি ২০২১ আইপিএল মৌসুমে ছিলেন পাঞ্জাব কিংসের সদস্য। তবে নতুন মৌসুমের জন্যে চারজন খেলোয়াড় রেখে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও পাঞ্জাব কিংস শামিকে ধরে রাখেনি।
অগ্যতা নিলামের মধ্য দিয়েই তাঁকে খুঁজে নিতে হবে নতুন ডেরা কিংবা ফিরবেন পুরানো আস্তানায়। তিনি ২০২১ সাকলে ১৯টি উইকেট নিয়েছিলেন ডান-হাতি এই পেসার। ১৪ ম্যাচে ২০.৭৮ গড়ে তাঁর ইকোনমি রেট ছিল সাতের ঘরে। তাছাড়া জাতীয় দলের নিয়মিত ও অভিজ্ঞ এই তারকাকে যে কেউ হয়ত বিপুল অঙ্কের অর্থে ব্যয়ে ভেড়াতে চাইবেন নিজেদের তাবুতে।
- দীপক চাহার
উদীয়মান তারকাদের তালিকার শীর্ষের দিকেই থাকবেন দীপক চাহার। তাছাড়া গেলো আসরে তিনি ছিলেন চেন্নাই সুপার কিংসের শিরোপা জয়ী দলের অন্যতম এক নির্ভরযোগ্য সদস্য। যার পুরস্কার স্বরুপ জাতীয় দলেও ডাক পেয়েছেন চাহার।
তাছাড়া গত মৌসুমে ৩২.৩১ গড়ে দীপক ১৫ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ১৪টি। দীপক চাহার বেশ সম্ভাবনাময়ী একজন উদীয়মান খেলোয়াড়। সুতরাং দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে তিনি আসন্ন আসরে যুক্ত হতে পারেন ভিন্ন কোন ফ্রাঞ্চাইজির সাথে।
- ভূবনেশ্বর কুমার
ভারত জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ ভূবনেশ্বর কুমারও পেতে পারেন একটা বড় পরিমাণ আর্থিক পারিশ্রমিক। অনেকেই হয়ত এমন অভিমত থাকতে পারে যে গত আইপিএল মৌসুম ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভুবনেশ্বরের পারফর্মেন্স বিবেচনায় তিনি হয়ত খুব একটা নজর কাড়বেন না।
কেননা গত আইপিএল মৌসুমে তাঁর উইকেট সংখ্যা ছিল মাত্র ছয়টি ১১ ম্যাচ থেকে। তবে তিনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে আবার নিজের হারানো ছন্দের ফেরার আভাস দিয়েছেন এর সাথে তাঁর অভিজ্ঞতা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সেইদিকগুলো বিবেচনায় একটা সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে তাঁর চড়া দামে বিক্রি হবার।
- আবেশ খান
২০২১ আইপিএলে বল হাতের দূর্দান্ত পারফর্ম করা খেলোয়াড়দের একজন আবেশ খান। দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে ১৬ ম্যাচে ১৮.৭৫ গড়ে ২৪ উইকেট নিয়ে মৌসুম শেষ করেছিলেন উইকেট সংগ্রাহকদের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থেকে।
দিল্লী ক্যাপিটালস তাঁকে রেখে না দেওয়ায় নিলামে বেশ চড়া দামেই যে বিক্রি হবেন আবেশ খান তা বলতে খুব বেশি হিসেব নিকেশ করবার প্রয়োজন নেই। শুধু সময়ের অপেক্ষা এই সম্ভাবনাময়ী খেলোয়াড়কে ঠিক কি পরিমাণ পারিশ্রমিক দিয়ে কোন দল তাঁদের শিবিরে নেবেন তা দেখবার।
- হার্শাল প্যাটেল
২০২১ আইপিএলের উজ্জ্বল তারকাদের একজন রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর পেসার হার্শাল প্যাটেল। যার অনবদ্য পারফরম্যান্স ব্যাঙ্গালুরু সমর্থকদের শিরোপা জয়ের প্রত্যাশাকে করেছিলে প্রবল। মাত্র ১৫ ম্যাচে হার্শাল নিয়েছিলেন ৩২টি উইকেট।
১৪.৩২ গড়ে উইকেট নিয়ে গতবারের মৌসুম সেরা বোলার হবার পাশপাশি এক আইপিএল মৌসুমে সর্বাধিক উইকেট শিকারের রেকর্ডেও ভাগ বসিয়েছেন হার্শাল। আটের ঘরের ইকোনমি রেটের এই পেসারকে দলে ভেরাতে নিজেদের সর্বোচ্চটাই হয়ত খরচ করতে চাইবে ফ্রাঞ্চাইজিগুলো।