বড় ম্যাচের প্লেয়ার বুঝি একেই বলে। বাঁচা মরার ম্যাচের চাপ সামলে বিপিএলের অন্যতম শক্তিশালী দলের বিপক্ষে একা হাতে ম্যাচ বের করে আনলেন। একেবারে চিরায়িত ক্যারিবীয়ান স্টাইল। বলগুলোকে নিচ থেকে উঠিয়ে বিশাল সব ছক্কা। দানবীয় ফ্লেচারের, দানবীয়ে ইনিংসে প্লে অফে খুলনা টাইগার্স।
বিপিএলে বরাবরই শক্ত দল গড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। তবে এবার সেই শক্তিমত্তা যেন আরো বেড়েছে। তাই কুমিল্লার বিপক্ষে ম্যাচের আগে নিশ্চিতভাবেই আন্ডারডগ ছিল খুলনা। তবে ক্রিকেট তো আর কাগজে কলমে হয় না। মাঠের ক্রিকেটে ব্যবধানটা গড়ে দিলেন আন্দ্রে ফ্লেচার একাই।
খুলনার জন্য ম্যাচটা জিততেই হতো। ম্যাচ জিতলেই নিশ্চিত প্লে অফ। তবে হারলেই খুলনাকে টপকে চলে যেত মিনিস্টার ঢাকা। ফলে ঢাকা নিশ্চয়ই খুলনার হারই প্রত্যাশা করেছিল। তবে তামিম, রিয়াদদের প্রার্থনা কাজে লাগতে দেননি ফ্লেচার। অবশ্য প্রথম ইনিংসের পর মনে হচ্ছিল সহজ জয়ই পেতে যাচ্ছে কুমিল্লা।
আজ নিয়মিত ও ইন ফর্ম ওপেনার লিটন দাসকে বিশ্রাম দিয়েছিল কুমিল্লা। তারপরও জয়, ফাফ ডু প্লেসিসদের ব্যাটে চড়ে ১৮২ রানের বিশাল সংগ্রহই গড়ে ভিক্টোরিয়ান্সরা। তবে সারা টুর্নামেন্টে ইকোনমিক্যাল বোলিং করা নাহিদুল ও তানভীরদের আজ বারবার সীমানার পথ দেখান এই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান।
ফলে এবারের বিপিএলে চতুর্থ সেঞ্চুরিরও দেখা মিলে এই ব্যাটসম্যানের হাত ধরে। এবার চারটি সেঞ্চুরি হয়েছে দুই ম্যাচেই। এর আগে একই ম্যাচে তামিম ইকবাল ও লেন্ডল সিমন্স সেঞ্চুরি করেছিলেন। আর আজ ফাফ ডু প্লেসিস ও আন্দ্রে ফ্লেচার একই ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন।
অবশ্য বিপিএলে ফ্লেচারের সেঞ্চুরি করার অভ্যাসটা বেশ পুরনো। ২০১৯ সালে তুলে নিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। চট্টগ্রামে সেদিন খেলেছিলেন ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস। আর তিন বছর পর আজ তুলে নিলেন বিপিএলে ও নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
২০১৯ সালে ফ্লেচার সেঞ্চুরি করেছিলেন খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে। আর আজ এই খুলনার হয়েই করলেন দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত বাইশ গজে থেকে দলকে নিয়ে গেলেন প্লে অফে। খেললেন ৬২ বলে ১০১ রানের বিশাল এক ইনিংস।
৬ চার ও ৬ ছয় দিয়ে সাজিয়েছেন ১৬২.৯০ স্ট্রাইকরেটে খেলা এই ইনিংসটি। সবমিলিয়ে বিপিএল দেখলো তাঁর ইতিহাসের ২৫ তম সেঞ্চুরি। দলকে পরের পর্বে নিয়ে যাওয়া এই ইনিংস খেলে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরষ্কারও জিতে নিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান।
ওদিকে পুরো টুর্নামেন্টে ইকোনমিক্যাল বোলিং করা তানভীর আজ চার ওভার বোলিং করে খরচ করেছেন ৪৩ রান। ওদিকে নাহিদুল ২ ওভার বোলিং করে দেন ২১ রান। ফ্লেচার ও মাহেদীর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে যেন বল ফেলার জায়গাই খুঁজে পাচ্ছিলেন না কুমিল্লার বোলাররা। দুজনে মিলে গড়েন ১৮২ রানের বিশাল এক জুটি।
ওদিকে পিঞ্চ হিটার হিসেবে আজ শেখ মাহেদীকে ওপেন করতে পাঠিয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মেহেদীও সুযোগটা কাজে লাগিয়েছেন পুরোপুরি। ফ্লেচারের সাথে ওপেন করতে নেমে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছেড়েছেন। আউট হবার আগে করেছেন ৪৯ বলে ৭৪ রান। ইনিংসটি খেলেছেন ১৫১.০২ স্ট্রাইক রেটে। ফ্লেচার ও মেহেদীর ব্যাটে চড়ে ৯ উইকেটের জয় নিয়ে প্লে অফের টিকিট কেটে ফেললো খুলনা টাইগার্স।