‘পয়সা উসুল’ ফিনিশার

ডেভিড সিঙ্গাপুর জাতীয় দলে খেললেও বাবার সূত্রে তিনি অস্ট্রেলিয়ান বংশদ্ভুত। যদিও ডেভিডের জন্ম সিঙ্গাপুরেও। বাবা রড ডেভিড পেশার ইঞ্জিনিয়ার হলেও ক্রিকেট খেলতেন। সিঙ্গাপুর দলে সুযোগ পেলেও নব্বইয়ের দশকের এই ক্রিকেটার কখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাননি। ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি খেলেন। তবে, সময় পাল্টে গেছে। এই চাইলে রডের ছেলে ডেভিড হতে পারেন টি-টোয়েন্টির ‘দ্য নেক্সট বিগ থিঙ’!

পঞ্চদশ আসরের নিলামে আলাদা ভাবে নজরে ছিলে তিনি। নিলামঘরে তাকে নিয়ে হৈচৈ হওয়াটা অনুমেয় ছিল। অনেকটা লড়াইয়ের পর ৮.২৫ কোটি রুপিতে তাকে দলে ভেড়ায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। এরপর শুরুতে এক ম্যাচে সুযোগ পেলেও আর নিজের নাম একাদশে মেলাতে পারেননি। ম্যাচের পর ম্যাচ বসে ছিলেন ডাগ আউটে। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের অবস্থাও ছিল চরম বাজে। টানা হারে মুখ থুবড়ে পড়েছিল পাঁঁচবারের আইপিএল শিরোপাজয়ীরা। তবুও সুযোগ পাচ্ছিলেন না এই পাওয়ারহিটার।

টুর্নামেন্ট থেকে যখন ছিটকে গেল দল – এরপর সুযোগ পেলেন তিনি। দেখালেন দাপট, খেললেন দুর্দান্ত কিছু ইনিংস; এই ইনিংসগুলো দিয়ে যেন টিম ম্যানেজমেন্টের গালে সপাটে অদৃশ্য এক চড় মেরে দিয়েছেন। ম্যানেজমেন্টের ভুলটা চোখে আঙুল দিয়েই দেখিয়ে দিয়েছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের তারকা টিম ডেভিড।

ক্রিজে যখন আসলেন, দলের প্রয়োজন ৩৫ বলে ৬৭ রান। খেললেন ১৮ বল। এই ১৮ বলে চার ছক্কা ও তিন চারে খেললেন ৪৬ রানের ক্যামিও। থাঙ্গারাসু নটরাজনের এক ওভারেই হাঁকালেন চার ছক্কা। মাত্র তিন রানে দল হারলেও সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে ডেভিডের ব্যাটিং তাণ্ডব আরও একবার যেন ভুল প্রমাণ করলো মুম্বাইয়ের টিম ম্যানেজমেন্টকে।

টানা ব্যর্থতা, রান খরা। তবুও একাদশে নিয়মিত মুখ ছিলেন কাইরেন পোলার্ড। ম্যাচের পর ম্যাচ ব্যাট হাতে ব্যর্থ, নিষ্প্রভ এই ক্যারিবিয়ান তারকাকে জায়গা দিতে টিম ডেভিডের জায়গা মেলাতে পারেনি মুম্বাইয়ের টিম ম্যানেজমেন্ট। গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে ২১ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংসের পর গেল ম্যাচে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৭ বলে ১৬ রানের ক্যামিও। হায়দ্রাবাদের বিপক্ষেও দেখা মিলল ডেভিড ঝড়ের।

ফিনিশার হিসেবে নিজের সামর্থ্যটা ভালভাবেই প্রমাণ করলেন এই অজি ব্যাটার। ম্যাচের পর ম্যাচ সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ পোলার্ডের বিকল্প হিসেবে ডেভিড এখন আশা জাগাচ্ছে মুম্বাইকে। শেষদিকে পাওয়ার হিটিংয়ে ঝড় তুলতে পারেন, চোখধাঁধানো শটে বলকে অনায়াসেই বাউন্ডারি ছাড়া করতে পারেন তিনি। ফিনিশার হিসেবে দলের নিয়মিত মুখ হতে সবরকম সামর্থ্য আর সম্ভাবনাই আছে ডেভিডের।

ডেভিড সিঙ্গাপুর জাতীয় দলে খেললেও বাবার সূত্রে তিনি অস্ট্রেলিয়ান বংশদ্ভুত। যদিও ডেভিডের জন্ম সিঙ্গাপুরেও। বাবা রড ডেভিড পেশার ইঞ্জিনিয়ার হলেও ক্রিকেট খেলতেন। সিঙ্গাপুর দলে সুযোগ পেলেও নব্বইয়ের দশকের এই ক্রিকেটার কখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাননি। ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি খেলেন। তবে, সময় পাল্টে গেছে। এই চাইলে রডের ছেলে ডেভিড হতে পারেন টি-টোয়েন্টির ‘দ্য নেক্সট বিগ থিঙ’!

পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল), ইংল্যান্ডের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগ, বিগ ব্যাশেও নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন এই তারকা। তবে আইপিএলে চড়া মূল্য পেলেও শুরুর দিকে ছিলেন উপেক্ষিত। সেই উপেক্ষার জবাবটা দিয়েছেন ব্যাট হাতেই। ৭ ম্যাচে ৩৮ গড় আর ২০২ স্ট্রাইক রেটে ১৫২ রান প্রমাণ করে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালাতে কতটা সক্ষম টিম ডেভিড।

ডেভিড আউট হবার পর হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে ম্যাচটা জিততে পারেনি মুম্বাই। তবে ডেভিড প্রমাণ করেছেন চড়া মূল্যটাই তাঁর প্রাপ্য। তাঁকে সুযোগ না দেওয়াটাই ছিল মুম্বাইয়ের ভুল সিদ্ধান্ত। চলতি আসরে পোলার্ডের ব্যর্থতা হয়ত তাঁকে ছিটকে দিতে পারে আগামি আসরের আইপিএলে। নিজেদের ভুল শুধরে নিতে চাইবেন মুম্বাইয়ের টিম ম্যানেজমেন্ট। চলতি আসরের ব্যর্থতা ভুলে গিয়ে আগামি আসরে ঘুরে দাঁড়াতে চাইবে পাঁচবারের শিরোপাজয়ীরা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...