দীর্ঘ সময় পর আবারও নতুন এক শুরু। খানিকটা ভিন্নতা। সচারচর মতাদর্শ থেকে একটু সরে আসা। প্রায় ৩৫ বছর পর ভারতের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যাবে একজন পেসারকে। ভাবা যায়! বিরল এই ঘটনার মধ্য দিয়ে অধিনায়কের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে পারেন জাসপ্রিত বুমরাহ।
ভারতের টেস্ট দল বর্তমানে রয়েছে ইংল্যান্ডে। কাউন্টি দল লিস্টারশায়ারের সাথে অনুশীলন ম্যাচ খেলতে ব্যস্ত পুরো দল। মূলত ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচটি খেলতেই ইংল্যান্ডের পারি জমিয়েছেন ভারত। এর মধ্যে দলের ভেতর নানান রকম সমস্যার শুরু। না খেলোয়াড়দের মধ্যে কোন কোন্দল নয়। সমস্যা গুলোর কোনটিতেই হাত নেই কার।
প্রথমত ভারতের নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে স্বাভাবিকভাবেই থাকতে হচ্ছে কোয়ারেন্টাইনে। অন্যদিকে টেস্টের সহ-অধিনায়ক লোকেশ রাহুল ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন টেস্ট থেকে। এখন তাঁদের অবর্তমানে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার মত রইলেন বাকি জাসপ্রিত বুমরাহ। অধিনায়কের দায়িত্বটায় তিনি একেবারেই নতুন।
তবে এই বছরই তিনি সহ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে। নিশ্চয়ই নতুন দায়িত্ব নিয়ে বেশ রোমাঞ্চিত জাসপ্রিত বুমরাহ। তবে এর আগে সংবাদ সম্মেলনে বুমরাহ বলেছেন যে তিনি অধিনায়কের মত শক্ত দায়িত্ব নিতে সর্বদাই প্রস্তুত আছেন। নিজের প্রস্তুতি কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি আমাকে সুযোগ দেওয়া হয় তবে সেটা হবে খুব সম্মানের। আমার মনে হয় না কোন খেলোয়াড় এমন সুযোগকে না করবে।’
তাছাড়া বুমরাহ সৃষ্টিকর্তা পরিকল্পনায় বেশ বিশ্বাসী। তিনি বলেন, ‘আমি কোন কিছুর পেছনে ছুটতে চাই না। আমি এমন একজন মানুষ যে কি-না বিশ্বাস করে ঈশ্বর পরিকল্পনা করে রেখেছেন আর সবকিছু ঠিক একদিন নিজেদের পথ খুঁজে নেবে। সুতরাং আমি কোন পরিকল্পনায় ব্যঘাত ঘটাতে চাই না। আমি চেষ্টা করি কখনোই কোন কিছু পরিবর্তন না করতে।’
এই মুহূর্তে একজন সিরিয়র খেলোয়াড় হওয়ার পাশাপাশি ভারত জাতীয় দলের অন্যতম সেরা পারফরমার হিসেবেই তিনি রয়েছেন দলে। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ‘ডেথ ওভার’ স্পেশালিস্ট বলা হয় জাসপ্রিত বুমরাহকে। নিজের বুদ্ধিদীপ্ততা দিয়ে যেকোন প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে পারেন তিনি। অধিনায়ক হিসেবে সে কাজটাই নিশ্চয়ই করতে চাইবেন জাসপ্রিত বুমরাহ।
‘আমাকে যে রোলে খেলতে বলা হবে আমি সে রোলেই আমার সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করব। আমি পুরো ম্যানেজমেন্টে আমুল পরিবর্তন আনতে চাই না। একজন সিরিয়র খেলোয়াড় হিসেবে আপনি সবসময় একজন দলনেতা, পদবীটা আসে কাজের সাথে।’, ঠিক এমনটাই বলেছিলেন জাসপ্রিত বুমরাহ।
বুমরাহ নিশ্চয়ই বেশ মুখিয়ে আছেন। সেই সাথে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন ভারতের দর্শকরা। কপিল দেবের পর আবার একজন পেস বোলার পাচ্ছে ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ। গদবাধা নিয়মের বাইরে যাচ্ছে এই উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেট দল। বিশ্বেরও বটে। একটা বাড়তি চাপ নিশ্চয়ই থাকবে জাসপ্রিত বুমরাহ’র উপর। তবে তিনি তো চাপ নিয়ে অভ্যস্ত।
নিয়ম করে খেলা জিতিয়ে তো তিনি আনেন নিজের বুদ্ধিমত্তা আর দক্ষতার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে। বুমরাহ নিশ্চয়ই নিজের নতুন এই যাত্রায় সতীর্থদের সহয়তা প্রত্যাশা করছেন। তাঁর সতীর্থরাও শেখার চেষ্টা করবে, তাঁকে সহয়তা করার চেষ্টা করবে। সর্বোপরী এটা প্রমাণের চেষ্টাই করবেন বুমরাহ যে ‘পেসাররাও হতে পারেন ভাল অধিনায়ক’।