আমি জানি, হয়তো মাসখানেক বাদেই কেউ কেউ আবার একটা ব্যর্থতার পর বলবেন – এই ঋষাভ পান্ত আর কত চান্স পাবে? সেই গ্যাবার ইনিংস ভাঙিয়ে খাচ্ছে।
আমি জানি পান্তকে ভারতের সেরা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে মেনে নিতে এখনও অনেকের অনেক অসুবিধা আছে। পান্ত রান পেলে তাদের মনে হয় এইতো অনেকদিন বাদে একদিন রান পেলো, তাতেই আদিখ্যেতার অন্ত নেই, আজ থাকতো অমুক তমুক।
ঘটনা হলো, রাহুল দ্রাবিড়ের মত টেস্টের স্তম্ভ বিশেষ বলেছিলেন আমি যতো ইনিংসে সফল হয়েছি, তার চেয়ে বেশি ইনিংসে ব্যর্থ হয়েছি, তাহলে আমাকে আপনি সফল ক্রিকেটার বলবেন কী করে?
বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানরাই সফল ইনিংসের থেকে ব্যর্থ বেশি হয়েছেন। তাই কয়টা ম্যাচে ৫০ এর নিচে রান হলো, সেটাকে ব্যর্থতা ভেবে নিয়ে বিচার করলে সেটা বালখিল্যপনা হয়ে যাবে। আর ম্যাচ উইনার যারা, তারা যেদিন খেলবেন, ম্যাচ নিয়ে চলে যাবেন, তাদের খেলা দেখতে লোক আসবে, টিভির সামনে বসবে।
একটা ধৈর্যশীল ৫৬ হয়তো চতুর্থ ইনিংসে হার বাঁচানোর জন্যে কাজে লাগতে পারে, কিন্তু মনে রাখতে হবে, চেতেশ্বর পুজারার হাফ সেঞ্চুরি, অশ্বিন বিহারীর লড়াইয়ের পাশেও সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ড্র করতে একটা চোখ ধাঁধানো ৯৭ লেগেছিল। তাই সবসময় ৩০-৪০ স্টেডি রান করে দেওয়া ব্যাটার যেমন দলে প্রয়োজন, তেমন একজন এমন কাউকেও প্রয়োজন যিনি যেদিন ৫০/৪ বা ৮০/৫ হয়ে যাবে সেদিন পাল্টা মার দিয়ে ৩০০ পার করিয়ে দেবেন।
বীরেন্দ্র শেবাগ কোনোদিন সুনীল গাভাস্কার বা দ্রাবিড়ের মত খেলতে পারেননি। কিন্তু তাতে তার আসন টলেনি। পন্থও পারবেন না কোনোদিন সচিন, দ্রাবিড় বা লক্ষ্মণের মত খেলতে। কিন্তু কি যায় আসে? যেদিন সেঞ্চুরি করবেন, দ্রাবিড় ঠিক এভাবেই লাফিয়ে উঠবেন, যা তিনি নিজের সেঞ্চুরিতেও কোনোদিন করেছেন কিনা সন্দেহ।
আর যারা কিপিং নিয়ে বলেন, একটু দেশের মাটিতে ইংল্যান্ড সিরিজের ক্লিপিংস দেখে নিন।
এই টেস্টে কি হবে সময় বলবে, তবে আইসিইউ তে ঢুকে যাওয়া একটা ভঙ্গুর টপ অর্ডারের দলকে এক হ্যাঁচকা টানে জেনারেল বেডে এনে দিয়েছেন তিনি, সন্দেহ নেই। যোগ্য সঙ্গত জাদেজার। দিনকে দিন মুগ্ধ করছে ছেলেটা।
ঋষাভ পান্ত, এটা আপনারই দিন। না দেখা রূপকথা টার্নব্রিজ ওয়েলসের সাথে তুলনা হচ্ছে আপনার ইনিংসের, এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারতো?