এখন তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের নির্বাচক। তবে আব্দুর রাজ্জাককে বাংলাদেশের মানুষ এখনো মনে রেখেছে স্পিনার হিসেবেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটটা ছেড়েছেন অনেকদিন হলেও এখনো দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্পিনার তিনি। এছাড়া অভিজ্ঞতার ঝুলিটাও বিশাল এই স্পিনারের। তাইতো নাঈম হাসানকে পেয়ে নির্বাচক থেকে খানিকক্ষণের জন্য যেন কোচ হয়ে গেলেন আব্দুর রাজ্জাক।
এইতো দুইদিন আগেই রাজশাহীর কামারুজ্জান স্টেডিয়ামে শেষ হলো চারদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ। বাংলাদেশ টাইগার্স ও হাই পারফর্মেন্সের ক্রিকেটাররা নিজেদের মধ্যে খেলেছেন লাল বলের এই ম্যাচ। এই ম্যাচে বাংলাদেশ টাইগার্সের হয়ে খেলেছেন স্পিনার নাঈম হাসানও।
তবে রাজশাহীর উইকেটে সবার চোখ ছিল পেসারদের উপর। কেননা সবুজ এই পেস সহায়ক উইকেটে দুই দলের পেসাররাই সুবিধা পেয়েছেন। বিশেষ করে হাই পারফর্মেন্সের তরুণ পেসাররা এই উইকেটের ব্যবহার করেছেন পুরোপুরি। সব মিলিয়ে চারদিনের এই ম্যাচে রাজত্ব করেছেন পেসাররাই। দুই দলের ব্যাটসম্যানদেরই পেসারদের সামনে ভুগতে হয়েছে।
ওদিকে পেস সহায়ক এই উইকেটে স্পিনাররা ছিলেন একটু মলিন। তবে সেই তুলনায় ব্যতিক্রম ছিলেন একজন। তিনি হচ্ছে বাংলাদেশ টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্য নাঈম হাসান। এই ম্যাচের প্রথম ইনিংসেই হাই পারফর্মেন্সের পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন নাঈম। রাজশাহীর এই পেস উইকেটেও অনন্য ছিলেন স্পিনার নাঈম হাসান।
প্রথম ইনিংসে হাই পারফর্মেন্সের ব্যাটসম্যানদের বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে এই বোলারের সামনে। তবে নাঈম হাসানকে নিয়ে পুরোপুরি খুশি ছিলেন না নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক। নাঈমের বোলিং ভালো হলেও রাজ্জাক নাঈমকে আরেকটু আক্রমণাত্মক হবার পরামর্শ দেন। বিশেষ করে ফিল্ডিং আক্রমণ সাজানোর ক্ষেত্রে।
নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক নাঈমকে ঠিক কী বলছিলেন এমন প্রশ্নই ছিল নাঈমের সামনে। নাঈম খেলা৭১ কে জানান,’ ওভাবে বোলিং নিয়ে কিছু বলেনি। পারফর্মেন্সে খুশিই ছিলেন। তবে আমার বল খেলতে ব্যাটসম্যানদের সমস্যা হচ্ছিল। তাই ভাই পরামর্শ দিচ্ছিলেন এমন সময়ে যেন আরেকটু আক্রমণাত্মক হই। বিশেষ করে ফিল্ডিং সাজানোর কথা বলছিলেন। যেহেতু আমার বল ঠিক করে ব্যাটে লাগছিল না তাই লেগেও একটা স্লিপ রাখার পরামর্শ দিচ্ছিলেন তিনি।’
নাঈম হাসানের বোলিং নিয়ে আসলে খুব বেশি অভিযোগ করা সুযোগও নেই। কেননা টেস্ট দলের নিয়মিত এই সদস্য সুযোগ পেলেই নিজের সেরাটা দেন। বিশেষ করে লাল বলের ক্রিকেটে তিনি এখন দেশের অন্যতম সেরা স্পিনার। তবে সাকিব, মিরাজ, তাইজুলদের ভীরে খুব বেশি সুযোগ পাচ্ছেন না আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।
তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজে তিনি ছিলেন অপ্রতিরোদ্ধ। মিরাজে ইনজুরিতে কপাল খুলেছিল এই স্পিনারের। সুযোগটা শতভাগ কাজে লাগিয়েছেন নাঈম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টেই তুলে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। দারুণ এই প্রত্যাবর্তেন পরেও অবশ্য দ্বিতীয় টেস্টটা খেলা হয়নি নাঈমের। ইনজুরির কারণে ছিটকে গিয়েছিলেন তিনিও।
তবে ইনজুরি কাটিয়ে আবার মাঠে ফিরেছেন নাঈম হাসান। বাংলা টাইগার্সের হয়ে ঢাকায় ক্যাম্পও করেছেন। এরপর রাজশাহীতে ম্যাচ খেললেন চারদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ। সেখানেও অনবদ্য এই স্পিনার। সবমিলিয়ে নাঈমের সময়টা যেন অনবদ্য যাচ্ছে। তবে আক্ষেপের বিষয় হলো সামনে বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচ নেই বললেই চলে। ফলে দারুণ ফর্মে থাকা নাঈমকে ঠিক কাজে লাগানো যাচ্ছেনা।