বাংলায় একটা প্রবাদ আছে- “অধিক সন্যাসীতে গাজন নষ্ট।“ আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের রোগ সারাতেও যেন ডাক্তারের অভাব হচ্ছেনা। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের রোগ বেশ গুরুত্বর। কোনভাবেই সেরে উঠতে পারছেনা। ফলে গত কয়েকদিনে শোনা গেল নানা ডাক্তারের নাম । তবে এখন পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছেনা আসল ডাক্তারটা আসলে কে?
একটু ভেঙে বলা যাক। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ ব্যর্থতার চূড়ান্ত দেখেছে। ফলে এই ফরম্যাটে একটা বিপ্লব আনতে চেয়েছে বিসিবি। কখনো অধিনায়ক পরিবর্তন করা হয়েছে, কখনো ঢেলে সাজানো হয়েছে দল। তবে কিছুতেই পুরনো রোগ সারে না।
অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাংলাদেশ বের করতে পেরেছে রোগের আসল কারণ আক্রমণাত্মক মনোভাব ও পাওয়ার হিটিং। ফলে বিসিবি এবার বিপ্লব আনতে চায় এখানেও। এবার তাঁদের অস্ত্র কোচিং প্যানেল। এশিয়া কাপের আগেই নাকি নতুন কোচ আনতে চায় বাংলাদেশ। বিশেষ করে পাওয়ার হিটিং সমস্যার সমাধান করা চাই।
এরই ফল হিসেবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ। সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার শ্রীধরন শ্রীরামকে দেয়া হয়েছে এই দায়িত্ব। আপাতত এশিয়া কাপ পর্যন্ত তাঁকে আনা হচ্ছে। জানা যায়, ফল পেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্তও তিনিই থাকবেন।
এতে অবশ্য আপত্তির কিছু নেই। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে একজন বিশেষজ্ঞ কোচ কিংবা পরামর্শক থাকতেই পারেন। খুবই সহজ ব্যাপার। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে কিছুই যে সহজ ভাবে হয় না। এশিয়া কাপের মাত্র সপ্তাহখানেক আগে প্রশ্ন উঠেছে আসলে বাংলাদেশের হেড কোচ কে?
এই মুহূর্তে কাগজে কলমে বাংলাদেশের হেড কোচ অবশ্যই রাসেল ডোমিঙ্গ। অথচ তাঁর মনোভাব নাকি টি-টোয়েন্টি সূলভ নয়। সেজন্যই এশিয়া কাপে তাঁকে হেড কোচ হিসেবে রাখতে চায় না বাংলাদেশ। এরই মাঝে ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্সের সাথেও নিজ বাসায় বৈঠকে বসেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। শোনা যাচ্ছিল তিনিও হতে পারেন এশিয়া কাপের হেড কোচ।
গতকাল নাজমুল হাসান পাপনই জানিয়েছিলেন সিডন্স পাওয়ার হিটিং নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। এছাড়া অনুশীলনেও বেশ তৎপর দেখা যাচ্ছিল এই কোচকে। ফলে অনেকেই দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়েছেন। জেমি সিডন্সই হবেন এশিয়া কাপের হেড কোচ, শুধু ঘোষণা আসার বাকি।
তবে একদিন না যেতেই আলোচনায় যোগ হয়েছে নতুন চরিত্র। এবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের জন্য বিশেষায়িত পরামর্শকই নিয়োগ দিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ফলে শুরুতে ভাবা হচ্ছিল এই ভারতীয় কোচই হবেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের হেড কোচ। ওদিকে মনে করিয়ে দিই, এশিয়া কাপের বাকি মাত্র এক সপ্তাহ।
সবাই যখন শ্রীধরন শ্রীরামকেই নতুন হেড কোচ ধরে নিল তখন আবার বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন শোনালেন নতুন সুর। তিনি নিশ্চিত করলেন শ্রীরামকে নাকি কোচ হিসেবেই আনা হয়নি। তাহলে নিশ্চয়ই হেড কোচ হিসেবে রাসেল ডোমিঙ্গই থাকছেন? সেটিও আবার এখনই বলতে নারাজ বোর্ড সভাপতি।
আজ সাংবাদিকদের তিনি বলেন,” সে অবশ্যই হেড কোচ হিসেবে আসছে না। সে আসছে অ্যাজ অ্যা টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট হিসেবে। আসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত। আর হেড কোচের ব্যাপারটা আমরা এখনো ঠিক করিনি। ২২ তারিখ সবার সঙ্গে বসা হবে। বসে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। অনেক পরিবর্তনই আসবে।“
শ্রীধরন শ্রীরাম হেড কোচ নন, জেমি সিডন্সও নন। আবার নিয়মিত হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গর ব্যাপারেও বোর্ড সভাপতি নিশ্চিত নন। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন ২২ তারিখ। তাহলে বাংলাদেশ দল এশিয়া কাপের জন্য পরিকল্পনাটা সাজাবে কবে? এশিয়া কাপের আগেই নতুন কিংবা পুরনো হেডকোচে নাম জানা যাবে তো?