হঠাৎ কেন এশিয়া কাপে রিশাদ?

‘দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো’ বাংলার বেশ পুরনো প্রবাদ। তবে এই প্রবাদের নতুন এক উদাহরণই যেন সবাইকে উপহার দিতে চাইছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তাইতো লেগ স্পিনার রিসাদ হোসেন খানিক দেরি করে হলেও যাচ্ছেন আরব আমিরাতে। এবারের এশিয়া কাপের আয়োজন তো হবে সেখানেই।

সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেখানে ভাল করবার পূর্ণ প্রস্তুতিই যেন নিতে পারে এশিয়ার ক্রিকেট খেলুড়ে দলগুলো সে পরিকল্পনা থেকেই এবারের এশিয়া কাপটা হতে চলেছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। আয়োজনটা হবার কথা ছিল শ্রীলঙ্কায়। তবে দেশটির আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আরব আমিরাত হচ্ছে আয়োজক দেশ। আর সেখানকার উইকেট গুলো খানিকটা স্লো।

সে সুবাদে দলে থাকা স্পিনাররা একটু বাড়তি সুবিধাই পেয়ে থাকেন। আর সেটা যদি হয় লেগ স্পিন তবে তো কথাই নেই। এশিয়া কাপে খেলতে যাওয়া একমাত্র লেগ স্পিনার বিহীন দল সম্ভবত বাংলাদেশ। এত বছরের ক্রিকেটীয় পথচলায় এখন অবধি একটি আন্তর্জাতিক মানের লেগ স্পিনার তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ। পরিচর্যা করা তো দূরে থাক সঠিক সুযোগটাই দিতে পারেনি।

তাইতো বাংলাদেশের একাদশে একজন লেগ স্পিনারের অভাবটা অন্তত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হাড়েহাড়ে টের পাওয়া যায়। তবে নিজ দলে লেগ স্পিনার না থাকলেও প্রতিপক্ষ দলে তো রয়েছে বিশ্বমানের লেগ স্পিনার। প্রথম পর্বে বাংলাদেশের দুই প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। এই দুই দলেই রয়েছে এই সময়ের দুর্ধর্ষ দুই লেগ স্পিনার। আফগানিস্তানের রশিদ খান ও লঙ্কান শিবিরের আস্থার স্তম্ভ ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।

এই দুই বোলারকে খেলতে গেলে বাংলাদেশের একটু বাড়তি প্রস্তুতির তো অবশ্যই প্রয়োজন। আর সে প্রস্তুতিতে সহয়াক ভূমিকা পালন করতেই আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন রিশাদ হোসেন। তিনিও একজন লেগ স্পিন বোলার। হঠাৎ করেই রিসাদকে দলের সাথে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টা আরও একবার বিসিবির ঠুনকো পরিকল্পনার ছকের ইঙ্গিত দেয়। বিশ্বমানের একজন স্পিনারকে মোকাবেলা করবার প্রস্তুতিটা নাকি নিতে হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতাহীন একজন বোলারকে সামলে।

তবে এখানে রিশাদের কোন প্রকার দোষ দেওয়ার সুযোগই নেই। তিনি বরং আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে টাইগার ব্যাটারদের প্রস্তুতিতে শতভাগ সহায়তা করবেন তিনি। রিশাদ বলেন, ‘যেহেতু বড় বড় লেগ স্পিনারদের বিপক্ষে খেলবে আমার চেষ্টা থাকবে তাদেরকে সর্বোচ্চ চ্যালেঞ্জটুকুই ছুড়ে দেওয়া।’ তিনি বরং আত্মপ্রত্যয়ী। নিজের দক্ষতার উপর ভরসা রাখছেন। আর প্রত্যাশা করছেন দলকে সেরা প্রস্তুতিটা নিতে সহয়তা করবেন।

অবশ্য তিনি এটা খুব ভাল করেই জানেন যে দলের হয়ে মাঠে নামার তাঁর কোন সুযোগ হবে না। তবুও তিনি সেটা নিয়ে খুব একটা বেশি চিন্তিত নন। রিশাদ নিজের কাজটা করে যেতে চাইছেন। আর নেট থেকে একাদশে আজ না হোক কাল জায়গা করে নিতে চাইছেন। তবে বিসিবির ভাবনাটা ঠিক কি তাঁকে নিয়ে সে বিষয়ে খোদ রিশাদ হোসেনও জানেন না। ‘আমি সেখানে যাই, এরপর হয়ত আমার রোলটা কি হবে তা ঠিক করব।’

যদিও দলের সাথে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার এই সুযোগটা যে একেবারেই হুট করে পেয়েছেন রিসাদ সেটা বলার সুযোগ নেই। তিনি টাইগারদের দুই প্রস্তুতি ম্যাচে খেলেছিলেন। সেখান থেকেই হয়ত দলের সাথে থাকা থিংক ট্যাঙ্কদের মনে হয়েছে তাঁকে দিয়ে অন্তত প্রস্তুতির কাজটা ভালভাবেই চালিয়ে নেওয়া যাবে। আর সে জন্যই রিশাদেরও গন্তব্য হয়েছে আরব আমিরাত। কে বলতে পারবে সেখান থেকে হয়ত বিশ্বকাপ দলেও পেয়ে যেতে পারেন সুযোগ। ক্ষীণ আলো তো উজ্জ্বল দিনের পূর্বাভাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link