ব্যর্থ পাকিস্তানে জাভেদ মিয়াঁদাদের ‘স্বপ্নপূরণ’

সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপে শিরোপার বড় দাবিদার ছিল পাকিস্তান। কন্ডিশন আর ফর্ম বিবেচনায় ফেভারিট তকমা নিয়েই মাঠে নেমেছিল বাবর আজমের দল। কিন্তু এবারও সেই অধরা ট্রফি ছুঁয়ে দেখা হয়নি। ফাইনালের শেষ লড়াইয়ে ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী হয়ে পড়েছিল তারা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ছন্নছাড়া পারফরম্যান্স করেছে দলটি।

ফাইনালে লঙ্কানদের বিপক্ষে মাত্র তিনজন পাক ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছিলেন। শুধু ফাইনালে হয়, পুরো আসর জুড়েই মিডল অর্ডারের নড়বড়ে অবস্থা ভুগিয়েছে দলটিকে৷ সেই সাথে অধিনায়ক বাবর আজমের অফ ফর্ম আরো ভঙ্গুর করে তুলেছে ব্যাটিং লাইনআপকে। মহাদেশীয় এই টুর্নামেন্টে ছয় ম্যাচ খেলে বাবর মাত্র ৬৮ রান করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

এমন অবস্থায় দলের পারফরম্যান্স নিয়ে কাঁটাছেড়া করতে কোন ছাড় দেননি সাবেক ক্রিকেটাররা। এশিয়া কাপে ব্যর্থতার কারণ নিয়েও বিভিন্ন মত দিয়েছেন তারা। এশিয়া কাপের ব্যর্থতা নিয়ে সর্বশেষ কথা বলেছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান জাভেদ মিঁয়াদাদ। মূলত তাঁর সেবা গ্রহণ না করায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সমালোচনা করেন তিনি। সাবেক এই ক্রিকেটার ইঙ্গিত করেন যে পিসিবি নিজ দেশের ক্রিকেট কিংবদন্তিদের অবহেলা করে যাচ্ছে।

জাভেদ মিঁয়াদাদ বলেন যে, ‘আমার মত মানুষেরা বসে আছে; দলের স্বার্থে আমাদের ব্যবহার করুক, ব্যক্তিগতভাবে আমি এরচেয়ে বেশিকিছু চাই না। আমাদের তো টাকার দরকার নেই। আমি নিশ্চিত যে আমার উপস্থিতি খেলোয়াড়দের জন্য সুবিধাজনক হবে। আমি অনেক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে এসেছি।’

যেভাবে পাকিস্তান হেরেছে সেটা কষ্টদায়ক বলে মনে করেন পাকিস্তানের একসময়ের অধিনায়ক জাভেদ মিঁয়াদাদ। এশিয়া কাপের ফলাফল এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল নির্বাচন নিয়ে ক্রিকেট পাকিস্তানের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে নিজের এই অনুভূতির কথা জানান তিনি।

এই ডানহাতি তারকা দাবি করেন যে পাকিস্তানের বর্তমান ক্রিকেট দলের কেউই ম্যাচ পরিস্থিতি ভালভাবে বুঝতে শেখেনি। কোন সময় কি করতে হবে সেটি তারা উপলব্ধি করতে পারেনা। এসব সমস্যা সমাধানে তিনি সাহায্য করতে পারবেন বলেই মত দেন জাভেদ মিঁয়াদাদ।

১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটার বলেন, ‘যদি আমি ড্রেসিংরুমে থাকতে পারতাম, আমি তাদের বলতাম কখন উইকেট ধরে রাখতে হবে এবং কখন দ্রুত রান তুলতে হবে। আমার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু এখনকার ছেলেদের এসব জ্ঞান নেই, তারা শুধু মাঠে যায় এবং সাথে সাথে হিট করতে শুরু করে। তারা বুঝতেই পারে না কোন বোলারকে মারতে হবে, কখন ক্রিজে টিকে থাকতে হবে।’

১২৪ টেস্ট এবং ২৩৪টি ওয়ানডে খেলা জাভেদ মিঁয়াদাদ এসব সমাধানে একজন মেন্টর হিসেবে কাজ করতে চান। তাঁর ইচ্ছে পিসিবি পাকিস্তানের কিংবদন্তিদের ক্রিকেটের স্বার্থে সঠিকভাবে ব্যবহার করুক। দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার দেশপ্রেম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

নিজের সময়ের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার বলেন, ‘এটা পুরোপুরি লজ্জাজনক, এখানে ব্যবহার করার মত অনেক মানুষ আছে। আপনাদের জাতীয়তাবাদ কোথায়? আপনারা কোন পাকিস্তান সম্পর্কে কথা বলছেন?’

এশিয়া কাপে ভরাডুবির পর জাতীয় দলে বেশকিছু পরিবর্তনের দেখা মিলেছে। আপাতত আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশায় রয়েছে তারা। তবে এই বৈশ্বিক টুর্নামেন্টেও যদি সাফল্য না আসে তাহলে টিম ম্যানেজমেন্টেও সংস্কারের দেখা মিলতে পারে। সেক্ষেত্রে জাভেদ মিঁয়াদাদদের মত সাবেক তারকারা ক্রিকেট বোর্ডে কাজ করার সুযোগ পেতেও পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link