যদি মালিক থাকতেন…

কথায় আছে, ‘পুরনো চাল ভাতে বাড়ে।’ তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কর্তারা হয়তো এই প্রবাদে বিশ্বাসী নয়। বোর্ড কর্তারা বিশ্বাস করুক আর না করুক শোয়েব মালিকও কি তাতে থেমে যাওয়ার পাত্র? অভিজ্ঞতা ও পারফরম্যান্সের জোরে না হোক অন্তত পারফরম্যান্সের কারণে হলেও দলে ডাক পাওয়ার যোগ্য দাবিদার তিনি। 

২০২১ বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ সিরিজে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে দল থেকে ছিটকে পড়লেও ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে ফিরে এসেছেন সবার প্রিয় শোয়েব মালিক। পাকিস্তান ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে ব্যাট হাতে অসাধারণ ক্রিকেট খেলে বুঝিয়ে দিয়েছেন এখনো ফুরিয়ে যাননি তিনি। 

ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে সেন্ট্রাল পাঞ্জাবের হয়ে কয়েকটি ম্যাচ খেলতে না পারলেও দলের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। টুর্নামেন্টে ৯ ম্যাচে ২৯.১৪ গড় ও ১৪০.৫৯ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ২০৪ রান। পাকিস্তান সমর্থকরাও আওয়াজ তুলেছিলেন এশিয়া কাপের দলে যাতে জায়গা পান শোয়েব মালিক। তবে তাঁকে বাদ দিয়েই দল ঘোষণা করে পাকিস্তান। ভঙ্গুর মিডল অর্ডারের কারণে ফাইনালে হেরে যায় শ্রীলঙ্কার কাছে।

বিশ্বকাপে আবারো ব্রাত্য শোয়েব মালিক। নন পারফর্মাররা টিকে গেলেও পারফর্ম করেও ম্যানেজমেন্টের অদ্ভুত সিদ্ধান্তের বলি হলেন তিনি। ক্ষোভে অভিমানে মুখ খুললেন মালিক। অভিযোগ করলেন অধিনায়ক বাবর আজম তাকে বিশ্বকাপ দলে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বঞ্চিত তিনি।

এরপরও দেশের স্বার্থে চুপ থেকেছেন তিনি। সাহস জুগিয়েছেন বিশ্বকাপগামী দলকে। তবে বিশ্বকাপে দলের বাজে পারফরম্যান্সে আবারো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে শোয়েব মালিক। সমর্থকদের মনে উঁকি দিচ্ছে শোয়েব মালিক দলে থাকলে কি ভিন্ন কিছু হতে পারতো? 

এবার সাবেক পাকিস্তানি পেস বোলার আকিব জাভেদ আঙুল তুললেন ম্যানেজমেন্ট এর দিকে। তিনি জানালেন তার বিশ্বাস যদি শোয়েব মালিক দলে থাকতো তবে ভারত ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ বলে হারের লজ্জায় পড়তে হতো না তাদের। 

৫০ বছর বয়সী সাবেক এই পেসার বলেন, ‘মালিক বর্তমান খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে ফিট এবং তার ক্রিকেটজ্ঞান বাকি সবার চেয়ে ভালো। যদি সে দলের সাথে থাকতো, পাকিস্তান ভারত ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচে জিততে পারতো।’

৪০ বছর বয়সী শোয়েব মালিক সর্বশেষ ২০২১ বিশ্বকাপের অন্যতম পারফর্মার ছিলেন। দলকে সেমিফাইনালে তুলতে ব্যাট হাতে দারুণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।২০০৯ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য শোয়েব মালিক ৪৪৬ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১১ হাজার ৮৬৭ রান ও ২১৮ উইকেট শিকার করেন। 

বিশ্বকাপে দলের মিডল অর্ডারের এমন বিপর্যয়ের মুহূর্তে একজন শোয়েব মালিকের অভাবে খুব করেই ভুগছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। তিনি থাকলে জিতুক আর না জিতুক অন্তত ভরসা থাকতো হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়বে না পাকিস্তানের ব্যাটিং। সবাই ব্যর্থ হলেও ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষের সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়াবেন চিরতরুণ শোয়েব মালিক।

২০২২ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে টানা দুই ম্যাচ হেরে বিদায়ের শঙ্কায় পাকিস্তান। সেমিফাইনালে যেতে হলে নিজেদের বাকি তিন ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি বাকি দলগুলোর ফলের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link