টানা দ্বিতীয় ফাইনালে কুমিল্লা

নখ কামড়ানো এক ম্যাচ বলতে যা বোঝায়, তেমনই এক দৃশ্যের মঞ্চায়ন হয়েছে প্লে-অফ রাউন্ডের একমাত্র এলিমিনেটরে। ফরচুন বরিশালের দেওয়া বিশাল লক্ষ্য টপকে শেষ ওভারে গিয়ে ম্যাচ জেতে রংপুর রাইডার্স। দিনের প্রথম খেলায় হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তাইতো দ্বিতীয় খেলাকে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী। কেননা খেলাটা ছিল টেবিলের শীর্ষে থাকা দুই দলের মাঝে।

তবে হয়েছে উল্টোটা। আরও এক লো-স্কোরিং ম্যাচের সাক্ষী বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নবম আসর। মামুলি টার্গেটে জয়ের লক্ষ্যে ছুটে চলা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স মাঝে পথভ্রষ্ট হলেও, শেষ অবধি সঠিক পথ খুঁজে নেয় তাঁরা। সিলেটের দেওয়া ১২৬ রানের টার্গেট চার উইকেট ও বিশ বল বাকি থাকতে টপকে যায় গেল বারের চ্যাম্পিয়নরা।

প্রথম কোয়ালিফায়ারে টসে জিতে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ব্যাটিংয়ের নিমন্ত্রণ দেয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। তবে সে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়ে সিলেটকে পড়তে হয় ভীষণ বিপাকে। সিলেটের ব্যাটিং অর্ডার শুরুতেই রাজ্যের চাপের সম্মুখীন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই দুই উইকেট হারায় টেবিলের শীর্ষে থেকে কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করা সিলেট।

তানভীর ইসলামের বলে শফিকুল্লা গাফারি ক্যাচ আউট হন। আর রান আউটে কাঁটা পড়েন ইনফর্ম তৌহিদ হৃদয়। ঠিক সেখান থেকেই শুরু। সেই বিপর্যয় আর পুরোপুরি সামাল দিয়ে উঠতে পারেনি সিলেট স্ট্রাইকার্স। তবে এদিন দলের হাল ধরতে ব্যাটিং অর্ডারে বেশ উপরে উঠে এলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। মারকুটে মাশরাফি বেশকিছু দুর্দান্ত শটও খেলেন। ১৭ বলে ২৬ রানের ছোট্ট একটা ক্যামিওতে দলকে ভরসা দেওয়ার চেষ্টা করেন মাশরাফি।

কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। সিলেটে পক্ষে বাইশ গজে থিতু হতে পারেননি কেউই। সবাই যেন আসা-যাওয়ার এক অপ্রতিরোধ্য মিছিলে শামিল হয়েছিলেন। সেই মিছিলের মাঝে দাঁড়িয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম বিশের গণ্ডি পেরিয়ে কিছুদূর পথ পারি দিয়েছেন। বাকিদের মধ্যে কেবল জর্জ লিন্ডে দুই অংকের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন। তাইতো সব মিলিয়ে সংগ্রহ একেবারে স্বল্প। ১৭ ওভার এক বল খেলে ১২৫ রানে অলআউট হয়ে যায় সিলেট।

প্রথমত স্বল্প পুঁজি। তার উপর কুমিল্লার ব্যাটিং লাইনআপ ঠাসা দারুণ সব ব্যাটার দিয়ে। তাদের বিপক্ষে লড়াই করাটাও যেন রীতিমত এক দুঃসাধ্য কাজ। তবে সেই কাজটাই করার চেষ্টা করে যায় মাশরাফির দল। তবুও কুমিল্লার লাগাম টেনে ধরা মুশকিল। শুরুতেই ক্যারিবিয়ান সুনীল নারাইন স্বল্প দৈর্ঘ্যের একটা তাণ্ডব চালান। ১৮ বলে ৩৯ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেলে তিনি বিদায় নেন। তাঁর উইকেটটি তুলে নেন তরুণ পেসার তানজিম সাকিব।

আস্থাভাজন লিটন অবশ্য তেমন কিছুই করতে পারেননি। দলের বাকিরাও কার্য্যকর সব ছোট ছোট ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরের দিকে ক্রমশ ধাবিত করতে থাকেন। তবুও একটা পর্যায়ে বেশ চাপে পড়ে যায় কুমিল্লা। রুবেল হোসেনের এক ওভারে মঈন আলী ও জাকের আলী আউট হয়ে গেলে সমীকরণ খানিকটা কঠিন হতে শুরু করে কুমিল্লার জন্যে।

সেটা আরও খানিকটা জটিল হতে পারত ষোলতম ওভারে আন্দ্রে রাসেলের ক্যাচটি মুশফিকুর রহিম লুফে নিতে পারলে । কিন্তু তিনি তা পারেননি। শেষ অবধি সেই আন্দ্রে রাসেলের হাত ধরেই জয় আসে কুমিল্লার পক্ষে। ১৬.৪ ওভারেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কুমিল্লা। এই জয়ে টানা দ্বিতীয় বারের মত বিপিএলের ফাইনালের টিকিট কেটে ফেলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এবার শুধু টানা শিরোপা জয়ের অপেক্ষা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link