পুরো টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন সাকিব আল হাসান। আবার ব্যাটিং স্ট্রাইকরেটের দিক দিয়েও ছিলেন শীর্ষে। তারপরও আজকের এলিমিনেটর ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ব্যাটিং করেননি সাকিব। এমন সিদ্ধান্তে তাই একটা প্রশ্ন অবধারিতভাবেই উঠেছিল। ম্যাচ শেষে বরিশালের কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিম সে সিদ্ধান্তকে ‘ক্যাপ্টেন’স কল’ বলেছেন।
তবে বরিশাল অন্দরমহলে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে যে বেশ অসন্তুষ্টির পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা বুঝা যায় ম্যাচ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ বাদেই। ফরচুন বরিশালের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট আসে। যেখানে সরাসরি অধিনায়ক সাকিবকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়।
ইংরেজিতে লেখা সেই পোস্টটির ভাবানুবাদ করলে দাঁড়ায়, ‘সাকিব আল হাসানের কাছে একটি প্রশ্ন। ১৫.১ ওভারে বরিশালের স্কোর ছিল ১২৬ রানে ৩ উইকেট। কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিম বলেছেন, এটা ক্যাপ্টেন’স কল ছিল। অথচ পুরো টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে থেকেও আপনি ব্যাটে এলেন না। আপনি রাজাপাকশেকে ব্যাটে নামালেন, যার কিনা বিপিএলের কোনো ম্যাচ খেলারই অভিজ্ঞতা নেই। এমনকি গত ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা প্রিটোরিয়াসকেও নামাননি। আপনি বোলিং দিয়ে ম্যাচ জেতার যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এই পরাজয়টা এসেছে এমন ব্যাটিং অর্ডারের সিদ্ধান্তের কারণে। সাকিবের কাছে প্রশ্ন। আপনি এ ম্যাচ হারের দায় এড়াতে পারেন?’
এমন পোস্টের পর মুহূর্তের মধ্যেই শোরগোল শুরু হয়ে যায় অনলাইন পাড়ায়। নিজ দলের অধিনায়ককে নিয়ে এমন পোস্ট ক্রিকেট ইতিহাসেই বিরল। তাই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ফরচুন বরিশাল। অনেকে এটি হাস্যকর, কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্মকান্ড বলেও আখ্যায়িত করেছেন। যদিও পোস্ট করার কিছুক্ষণ পরেই সেই পোস্টটি সরিয়ে ফেলা হয়। যদিও এখন সেই পোস্টের স্ক্রিনশট অনলাইন পাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
অবশ্য বরিশাল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে জানিয়েছে, সাকিবের বিরুদ্ধে করা পোস্টটি ছিল ভুলবশত। ফিরতি এক পোস্টে এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ফরচুন বরিশাল। সেখানে তারা পেজের গ্রাফিক্স টিমের সদস্যের ভুল ধরে লিখেন, ‘আমাদের পেজের গ্রাফিক্স টিমের একজন সদস্যের অ্যাপসের টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে অনাকাঙ্খিত ভাবে ভুলবশত আমাদের সবার প্রিয় অধিনায়ক সাকিবকে নিয়ে একটা বাজে পোস্ট হয়ে যায়। এজন্য কতৃপক্ষ আন্তরিক ভাবে দু:খ প্রকাশ করছে!’
একই সাথে তারা এটাও জানিয়েছে যে, ঐ সদস্যের বিপক্ষে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনাকাঙ্খিত এই ভুলে এখন সাকিবের সাথে বরিশাল ফ্র্যাঞ্চাইজির সম্পর্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। কারণ টানা দ্বিতীয় বারের এই দলটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাকিব। গতবার খুব কাছে গিয়ে বিপিএল শিরোপা হাতছাড়া হয়। তবে এবারে চতুর্থ হয়েই বিপিএল মিশন শেষ করতে হচ্ছে তাঁর দলকে।