এশিয়া কাপের বাকি নেই আর ছয় মাসও। কিন্তু এখনো এশিয়া কাপের ভেন্যু নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এশিয়া কাপের পূর্বনির্ধারিত আয়োজক পাকিস্তানের মাটিতে খেলা হলে এশিয়া কাপে অংশ নেবে না তারা।
পাকিস্তানও জানিয়েছে পাকিস্তানের বাইরে এশিয়া কাপ আয়োজন করতে চায় না তারা। এদিকে ১৪০ কোটি মানুষের এত বড় ক্রিকেট বাজারকে উপেক্ষা করে এসিসি এশিয়া কাপ আয়োজন করবে সেটাও আপাত পক্ষে অসম্ভবই মনে হচ্ছে। এশিয়া কাপ নিয়ে চলমান এই অনিশ্চয়তা দূর হতে যাচ্ছে এ মাসের মধ্যেই।
গত মাসেই বাহারাইনে এশিয়া কাপ নিয়ে বৈঠকে বসে এসিসি। আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত না আসলেও শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তান থেকে সরে যাচ্ছে এশিয়া কাপের ভেন্যু। আয়োজনের দায়িত্বে পাকিস্তান থাকলেও এশিয়া কাপ যে পাকিস্তানের মাটিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না তা মোটামুটি নিশ্চিত।
এশিয়া কাপ নিয়ে দ্বন্দ্বের শুরু গত বছরের অক্টোবরে। এসিসির সভাপতি ও বোর্ড অফ ক্রিকেট কন্ট্রোল ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) সচিব জয় শাহ জানান, এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তান সফর করবে না ভারত। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল সভাপতি তখন ভেন্যু অন্যত্র সরিয়ে নেবার প্রস্তাব আনেন।
এমন প্রস্তাব ভালো ভাবে নেয়নি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তারাও পাল্টা হুমকি দিয়ে রাখে, এ বছর ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডে বিশ্বকাপ বয়কট করবে তারা। বিতর্ক আরো উসকে যায় যখন এ নিয়ে আলোচনায় যোগ দেন দুই দেশের সাবেক ক্রিকেটাররা।
বাহরাইনে অনুষ্ঠিত এসিসির সভাতেই বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চালিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবার আগে বিষয়টি নিয়ে আইসিসির সাথে আলোচনায় বসতে চায় এসিসি। তাই আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত দেবার জন্য আরো এক মাস সময় নিয়েছে তারা।
পাকিস্তানের ক্রিকেট পাড়া অবশ্য বেশ ক্ষিপ্ত এসিসি আর আইসিসির এমন অবস্থানে। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার আব্দুর রেহমানকে একটি ইউটিউব অনুষ্ঠানে প্রশ্ন করা হয় এশিয়া কাপ বিতর্ক নিয়ে। রেহমান বলেন, ‘এটি হওয়া (অন্য দেশে অনুষ্ঠিত হওয়া) উচিত নয়। রেহমান আরো বলেন, ‘আইসিসি ভারতের অধীনে।’
আইসিসিতে ভারতের আধিপত্য নিয়ে প্রায়শই আলোচনা হয় পাকিস্তানে। ওই ইউটিউব চ্যানেলের উপস্থাপক বিদ্রুপ করে বলেন, ‘আইসিসি হল ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল।’ উপস্থাপকের সাথে একমত হন রেহমানও।
রেহমান বলেন, ‘যারাই আইসিসিতে কাজ করে সবাই ভারতীয়। আইসিসির ৬০-৭০ শতাংশ ফান্ডও আসে ভারত থেকে। পাকিস্তানের বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া উচিত কারণ আমরা খেলতে চায়। না বলার মত অবস্থানে আমরা নেই। এমনিতেও আমরা দুবাইতে অনেক ক্রিকেট খেলেছি। ভারত যদি এখানে আসতে না চায় তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের যাওয়া উচিত এবং মাঠের খেলা দিয়েই জবাবটা দেয়া উচিত।’
পাকিস্তান থেকে ভেন্যু সরে যাওয়ার গুঞ্জন ওঠার পরপরই আলোচনায় উঠে আসে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নির্বাসিত থাকাকালীন প্রায় এক দশক আরব আমিরাতকেই হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করেছে পাকিস্তান। তাই শেষ পর্যন্ত আরব আমিরাতেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবারের এশিয়া কাপ তা মোটামুটি নিশ্চিত।