যাবার আগেই মেসির হাতে বিশ্বকাপ চেয়েছিলেন পেলে

কাতার বিশ্বকাপ চলাকালীন প্রায় পুরোটা সময় হাসতাপালের বিছানায় ছিলেন প্রয়াত ফুটবলের রাজা পেলে। হাসপাতাল থেকেই সমর্থন যুগিয়ে গেছেন নেইমার, ভিনিসিয়াসদের। বিশ্বকাপের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও করতেন পেলে।

কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ব্রাজিলের বিদায়ের পর অন্য ব্রাজিলিয়ান ভক্তদের মত হৃদয় ভেঙেছিল পেলেরও। তবে পেলের কন্যা জানালেন, ব্রাজিল বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেবার পর মেসি এবং আর্জেন্টিনাকে সমর্থন দিয়েছিলেন পেলে।

গত ২৯ ডিসেম্বর পৃথিবী ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমান ফুটবলের রাজা পেলে। সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার মৃত্যুর আগে হাসপাতালের বিছানা থেকে শুভকামনা জানিয়ে গেছেন নিজ দেশ ব্রাজিলকে। হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করা পেলেকে বিশ্বকাপের মাঠ থেকে শুভকামনা জানিয়েছেন নেইমার, থিয়াগো সিলভারাও।

তবে, পেলের জন্য সবচেয়ে বড় উপহার হত যেটি সেই বিশ্বকাপ পেলেকে উপহার দিতে পারেনি ব্রাজিল। কোয়ার্টার ফাইনালেই নিজেদের ষষ্ঠ শিরোপার মিশন শেষ করতে হয় সেলেসাওরের।

পেলের কন্যা কেলি নাসিমেন্তো জানান, ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেবার পর থেকেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে সমর্থন দিচ্ছিলেন পেলে। লিওনেল মেসির সহধর্মিনী আন্তোনেলা রোকুজ্জোর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি শেয়ার করে কেলি জানান, পেলের সেই সমর্থনের কথা আন্তোনেল্লাকে জানিয়েছেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে কেলি লেখেন, ‘এই হল সুন্দরী এবং বিনয়ী আন্তোনেলা, মেসির স্ত্রী। মেসির সাথে দেখা করার সুযোগ আমার হয়নি তাই তাঁর সাথে দেখা করি আমি একটি বার্তা দিয়েছি মেসিকে। যখন ব্রাজিল ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে গেল তখন আমার বাবার অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাচ্ছিল। আমাদের সবাই চাচ্ছিল ব্রাজিল যেন বিশ্বকাপটা জেতে বাবার জন্য।’

কেলি নাসিমেন্তো আরো লেখেন, ‘ব্রাজিলের বিদায়ের পর সবাই হাসপাতালে এসে তাকে জিজ্ঞেস করত, এখন কাকে আপনি জয়ী দেখতে চান? নিশ্চয়ই আর্জেন্টিনা নয়? বাবা তখন বলতেন, হ্যাঁ আর্জেন্টিনা। ট্রফিটিকে লাতিনে ফিরিয়ে আনতেই হবে এবং মেসিকে সেটি জিততেই হবে। তখন সবাই খুব বেশি অবাক হত বাবার কথা শুনে।’

পেলের কন্যা আরো জানান, অসুস্থ থাকায় বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচটি দেখতে পারেননি পেলে। কিন্তু তিনি জেনেছিলেন যে মেসি তাঁর আকাঙ্ক্ষিত শিরোপাটি জিতেছে। তিনি মৃত্যুর আগে খুশিও হয়েছিলেন এ খবর শুনে।

সর্বকালের সেরার প্রশ্নে পাশাপাশি উঠে আসে পেলে আর মেসির নাম। বিশ্বকাপ জেতার পর সেই দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছেন মেসি। শুধু বিশ্বকাপই জেতেননি, দ্বিতীয়বারের মত হয়েছেন বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়।

অন্যদিকে, ব্রাজিলকে তিনবার বিশ্বকাপ জেতানো পেলের প্রভাবটা বিশ্বফুটবলে হয়তো শুধু বিশ্বকাপ সংখ্যা দিয়ে বোঝানো যাবে না। ফুটবল দিয়ে বিশ্ব শাসন করা পেলের নামটাই জড়িয়ে গেছে ফুটবলের সাথে। পেলেকে কেন ফুটবলের প্রতিশব্দ বলা হয় তা বোধহয় আরেকবার তিনি প্রমাণ করলেন, হাসপাতালের বিছানা থেকেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের সমর্থন যুগিয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link