প্রাণনাশের হুমকি, আর্জেন্টিনায় ফিরবেন না মেসি

একদম ঘরের ছেলে বলতে যা বোঝায়, নিউওয়েল ওল্ড বয়েজ ক্লাব লিওনেল মেসির জন্য ঠিক তাই। এই ক্লাবেই ফুটবলের হাতেখড়ি হয়েছিলো মেসির। ওল্ড বয়েজ থেকেই বার্সেলোনায় গিয়ে ফুটবল বিশ্ব শাসন করেছিলেন।

নিজের শৈশবের সেই ক্লাবকে ভোলেননি মেসি। ক্যারিয়ারের শেষ দিনগুলো ওল্ড বয়েজে কাটানোর ইচ্ছার কথাও বেশ কয়েকবার জানিয়েছিলেন মেসি। তাই কোথায় ক্যারিয়ার শেষ করবেন এই ফুটবল জাদুকর, সেই প্রশ্নে এখনো জোরালো ভাবেই আসে ওল্ড বয়েজের নাম।

তবে সেই সম্ভাবনায় ভাটা পড়েছে কিছুটা হলেও। যদিও ফুটবলীয় কোনো কারণ নয় সেটি মোটেও। রোজারিওতে মেসির সহধর্মিনী আন্তোনেলা রোকুজ্জোর পরিবারের মালিকানাধীন একটি সুপার মার্কেটে হামলা চালিয়েছে কিছু দুর্বৃত্ত।

এমন হামলার পর নিজের শৈশবের ক্লাবে ফিরে যাবার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে গেছে মেসির জন্য, এমনটাই মনে করেন নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজ ক্লাবের কোচ ও আর্জেন্টিনা দলে মেসির সাবেক সতীর্থ গ্যাব্রিয়েল হেইঞ্জ।

রোজারিও শহরে অবস্থিত সান্তা ফের সুপারমার্কেটে ১৪টি গুলি করে দুর্বৃত্তরা এমনটাই জানাচ্ছে জানিয়েছে আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যমগুলো। যদিও তখন সুপার মার্কেটটি বন্ধ ছিল। তবে হামলাকারীদের উদ্দেশ্য ছিলো অন্যকিছু তা বোঝা যায় হামলার পর রাস্তায় ফেলে যাওয়া একটি চিরকুট থেকে। হামলাকারীরা রোজারিও শহরের মাদক ব্যাবসার সাথে জড়িত।

সেই চিরকুটে রোজারিও শহরের সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসির প্রতি হুমকি দিয়ে রাখে তারা। সেই চিরকুটে লিখা ছিলো, ‘মেসি, আমরা তোমার জন্য অপেক্ষা করছি। (রোজারিওর মেয়র) পাবলো ইয়াভকিন নিজেই মাদক চোরাচালানকারী। সে তোমাকে বাঁচাতে পারবে না।’

এমন ঘটনা শৈশবের ক্লাবে আসা থেকে লিওনেল মেসিকে ধীরে ধীরে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে, এমন মন্তব্য করেছেন আর্জেন্টিনার সাবেক ডিফেন্ডার ও ওল্ড বয়েজের কোচ হেইঞ্জ। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা সব মানুষের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এখানে কী চলছে। অবশ্যই এ ধরনের ঘটনা মেসিকে ক্লাব থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে। আমরা এই বিষয়টা নিয়ে এখন কথা বলছি, কারণ এখানে মেসি জড়িত। কিন্তু অন্য অনেকেই আছে, যারা আর্জেন্টিনায় ফিরতে চায়।’

পাঁচ বছরের বেশি সময় আর্জেন্টিনায় মেসির সাথে খেলেছেন হেইঞ্জ। মাদক ব্যবসায়ীদের পুরো বিষয়টিকেই তিনি দেখছেন স্রেফ পাগলামি হিসেবে, ‘সে আমাদের খেলোয়াড় বলে তাকে নিয়ে কথা বলছি, আমার সঙ্গে মেসির সম্পর্কটাও একটা কারণ। আসলে পুরো বিষয়টা একটি পাগলামি, এটা অনেক কিছু নিয়ে ভাবতে বাধ্য করবে।’

রোজারিওতে জন্মাবার পর সেখানেই বেড়ে উঠেছেন লিওনেল মেসি। এখনো বড়দিন সহ অন্য যেকোনো উপলক্ষে পরিবারসহ নিজ শহরে ছুটি কাটাতে যান মেসি। সেখানে মেসির নিজস্ব একটি বাড়িও আছে।

তবে, রোজারিওকে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে অনিরাপদ শহর হিসেবে বিবেচনা করা হয় হামলার হুমকি ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত দুর্বৃত্তদের নির্ভীক পদচারণার কারণে। রোকুজ্জোর পরিবারের মালিকানাধীন সুপার শপে এমন এক হামলার পর নিজের ছোটবেলার ক্লাবে ফেরার পরিকল্পনা থেকে একটু হলেও নিশ্চই পিছিয়ে আসবেন মেসি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link