নিজের মান দণ্ডটা অনেক উপরেই নিয়ে গিয়েছেন তিনি। দুই-তিন ম্যাচে রান না পেলেই মনে হয় যেন কতদিন ধরে রান পাচ্ছেন না। ফর্ম গেল, ফর্ম গেল বলে রব ওঠে চারদিকে। প্রতি ম্যাচেই রান করবেন তিনি এমনটাই প্রত্যাশা সবার। তবে লিটন দাসও তো রক্ত মাংসে গড়া মানুষ। দুই একটা ম্যাচ তাঁরও খারাপ যায়। তবে লিটন জানেন আবার নিজের জায়গাটা বুঝে নিতে। কারণ তিনি তো চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার।
ভারতের বিপক্ষে ওই যে তাক লাগিয়ে দেয়া ৬০ রানের ইনিংসটা। সেটা কিন্তু লিটন খেলেছিলেন মাত্র তিন ম্যাচ আগেই। এরপর বিশ্বকাপেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে আর এই ইংল্যান্ড সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচে বড় স্কোর করতে পারেননি। তাতেই লিটনের ফর্ম নিয়ে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। হবেই না বা কেন, উপর থেকে লিটনের রান করা বাংলাদেশের জন্য কতটা জরুরী সেটা তো নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
লিটন আবার নিজের চেনা রূপে আসতে খুব বেশি সময় নিলেন না। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটাকেই বেঁছে নিলেন আবার রানে ফেরার জন্য। তবে সেটার জন্য যে তাঁকে ভীষণ কষ্ট করতে হয়েছে সেটা পরিষ্কারই বোঝা যাচ্ছিল। এমনিতেই ইনিংসের শুরুতে খানিকটা সেকি থাকেন এই ব্যাটার। উইকেটে সেট হতে সময় নেন কিছুটা।
আর আজ তো রানে ফেরারও একটা চাপ ছিল। ফলে ইনিংসের শুরুতে ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণ সামলাতে তাঁকে বেশ বেগ পোহাতেই হয়েছে। তবুও উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করেছেন। ধীরে ধীরে থিতুও হয়েছেন। প্রথম ২০-৩০ রান বেশ সংগ্রাম করেই করেছেন।
তবে এরপরই আবার রান করার অভ্যাসটা ফিরে এলে যেন। লিটন ব্যাট করবেন আর চোখ জুড়ানো কিছু শট খেলবেন না তা কী হয়। লিটন আজও বাইশ গজে ছবি এঁকেছেন। লিটন এরপর ব্যাট করেছেন নিজের মত করেই।
লিটন যখন হাত খুলেছেন তখন বাংলাদেশের রানের চাকাও ঘুরেছে সজরেই। একটা সময় বড় সংগ্রহের পথেই হাঁটছিল বাংলাদেশ। বিশেষ করে শান্তর সাথে তাঁর জুটিটা জমে উঠেছিল বেশ। দুজনে মিলে মাত্র ৫৮ বল থেকে যোগ করেছেন ৮৪ রান।
তবে লিটন দাস আউট হবার পর থেমে যায় বাংলাদেশের রানের চাকা। স্লগ ওভারটা খুব একটা কাজে লাগাতে পারেননি সাকিব আল হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ওদিকে লিটন আউট হবার আগে খেলে গিয়েছিলেন ৫৭ বলে ৭৩ রানের ইনিংস। ব্যাটিং করেছেন ১২৮.০৭ স্ট্রাইক রেটে। নিজের ইনিংস সাজিয়েছেন ১০ টি চার ও ১ টি ছয় দিয়ে।
তাঁর এই ইনিংসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচেও শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত করেছে ১৫৮ রান। যদিও স্লগ ওভারে আরো কিছু রান করতে না পারার আক্ষেপ আছে বাংলাদেশের। তবুও মিরপুরে এই রানই ইংল্যান্ডকে হোয়াইট ওয়াশ করার জন্য যথেষ্ট হতে পারে।
তাঁকে দারুণ সঙ্গ দেয়া শান্তও আজও নিজেকে প্রমাণ করেছেন। প্রথম দুই ম্যাচে তিনিই ছিলেন বাংলাদেশের জয়ের নায়ক। ব্যাট হাতে আজও নিজের ফর্ম অব্যাহত ছিল শান্তর। এই ব্যাটার ৩৬ বল থেকে করেছেন ৪৭ রান। ব্যাটিং করেছেন ১৩০.৫৫ স্ট্রাইকরেটে। লিটন, শান্তদের ব্যাটে চড়ে এবার ইংল্যান্ডকে বাংলা ওয়াশের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ।