বিরাট কোহলির পর তিন ফরম্যাটেই ভারতের অধিনায়ক হয়েছেন ওপেনার রোহিত শর্মা। তাঁর অধীনে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভালো করলেও আইসিসি টুর্নামেন্টগুলোতে এখনো সাফল্য অধরা ভারতের। এশিয়া কাপ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে বিদায় নিতে হয়েছে ফাইনালের আগেই।
অধিনায়ক হিসেবে রোহিত শর্মা বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে টানা সুযোগ দিয়েছেন ভবিষ্যতের প্রশ্নে। আবার অনেকে বাদ পড়েছেন পর্যাপ্ত সুযোগ না পেয়ে, ফলে হুমকির সম্মুখীন হয়েছে তাঁদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। আসুন দেখে নেয়া যাক, পাঁচ ক্রিকেটারকে যাদের ক্যারিয়ার বাঁধাগ্রস্ত হয়েছে রোহিতের সময়ে।
- ভূবনেশ্বর কুমার
গত বছর পর্যন্তও সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতের নিয়মিত মুখ ছিলেন পেসার ভুবনেশ্বর কুমার। কিন্তু ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে লজ্জাজনক হারের পর জাতীয় দলে আর ডাক পাননি এই পেসার।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নামের প্রতি সুবিচার করতে না পারলেও এশিয়া কাপে দুর্দান্ত ছিলেন এই পেসার। এছাড়া বেশ কয়েকবার বল হাতে একাই জয় এনে দিয়েছিলেন দলকে। কিন্তু রোহিত শর্মা অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পাবার পর ভুবনেশ্বরকে দলে ডাকার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ দেখাননি।
- দীনেশ কার্তিক
আইপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করার সুবাদে বুড়ো বয়সে জাতীয় দলে যেন পুর্নজন্ম ঘটে দীনেশ কার্তিকের। ফিনিশার হিসেবে ভালো পারফর্মও করছিলেন। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলে আর ডাক পাননি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
এছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হারের ম্যাচে একাদশে ছিলেন না এই তারকা। অথচ তাঁর আগের বছরেই দারুণ ফিনিশিংয়ে বেশ কয়েকটি ম্যাচে দলকে জয় এনে দিয়েছিলেন কার্তিক। কিন্তু রোহিত শর্মা দায়িত্ব নেবার পর থেকেই জাতীয় দলে যেন খানিকটা ব্রাত্য হয়ে পড়েন এই বর্ষীয়ান ক্রিকেট। তাঁর বদলে তরুণ ইশান কিষাণকে বাজিয়ে দেখতেই বেশি আগ্রহী বর্তমান টিম ম্যানেজমেন্ট।
- আজিঙ্কা রাহানে
রোহিত শর্মা ভারতীয় টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব পাবার পর সহ অধিনায়ক হিসেবে নিযুক্ত করা হয় লোকেশ রাহুলকে। ফলশ্রুতিতে সহ অধিনায়কের দায়িত্ব হারানোর পাশাপাশি দল থেকে বাদ পড়েন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান আজিঙ্কা রাহানে।
সর্বশেষ রঞ্জি ট্রফিতেও ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন রাহানে। মুম্বাইয়ের হয়ে ১১ ইনিংসে ৫৭.৬৪ গড়ে ৬৩৪ রান করা সত্ত্বেও ডাক পাননি ঘরের মাঠের বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির স্কোয়াডে। অধিনায়ক রোহিত পুরনো রাহানের বদলে মিডল অর্ডারে তরুণ শ্রেয়াস আইয়ারকে সেট করতেই বেশি আগ্রহী।
- মায়াঙ্ক আগারওয়াল
নতুন বছরে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা আরেক ব্যাটসম্যান হলেন ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল। কর্ণাটকের এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রঞ্জি ট্রফিতে রীতিমতো রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। ১৩ ইনিংসে ৮২.৫০ গড়ে ৯৯০ রান করার পথে তিনটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি ছয়টি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান।
লোকেশ রাহুলের অফফর্মের সুবাদে অধিনায়ক রোহিত তাই দলে ফিরিয়ে আনতে পারতেন পুরনো সেনানী মায়াঙ্ককে। কিন্তু তিনি ভরসা রেখেছেন ডেপুটি রাহুলের উপরেই। মায়াঙ্ক জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলেন গত বছরেই মার্চে। এরপর আর জাতীয় দলের জার্সিতে দেখা যায়নি তাঁকে।
- হনুমা বিহারী
ভারত জাতীয় দলের টেস্ট স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে বিবেচনা করা হতো হনুমা বিহারীকে। জাতীয় দলের হয়ে এক সময়ে নিয়মিত একাদশে জায়গা পেতেন তিনি।
ভারতের হয়ে ২৮ ইনিংসে ৩৩.৫৬ গড়ে এক সেঞ্চুরি এবং পাঁচ হাফ সেঞ্চুরিতে বিহারীর সংগ্রহ ৮৩৯ রান। সর্বশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের দুই ইনিংস যথাক্রমে ২০ এবং ১১ রান করার পর দল থেকে বাদ পড়েন তিনি।
ভারত সেই টেস্ট হেরে যাবার সাথে সাথেই যেন স্কোয়াড থেকে নাম কাটা পড়ে বিহারীর। এরপর আর জাতীয় দলের জন্য বিবেচিত হননি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।