বছর চারেক আগেও শচীনের ‘সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি’ রেকর্ডটা ভাঙা বিরাট কোহলির জন্য এক অর্থে সময়ের ব্যাপারই মনে হচ্ছিল। কিন্তু প্রথমবারের মত ক্যারিয়ারের দুঃসময় পিছু নিলো বিরাটের। সেঞ্চুরি করাটা যার কাছে ছিল নিয়মিত ঘটনা, প্রায় তিন বছর ধরে সেই বিরাটই ভুলে গেলেন সেঞ্চুরি করতে। গত এশিয়া কাপে সেঞ্চুরির ধারায় ফেরার পর আবারো সেই ধারায় আছেন বিরাট। সাবেক পাকিস্তানি গতি তারকা শোয়েব আখতার মনে করেন, এখনো শচীনের রেকর্ড ভাঙাটা খুবই সম্ভব বিরাটের জন্য।
২০১৯ সালে ইডেন গার্ডেনে দিবা রাত্রির টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজের ২৭ তম টেস্ট সেঞ্চুরিটি করেছিলেন বিরাট। এরপরই যেন ভাটা পড়ে বিরাটের ব্যাটে। প্রায় তিন বছর ছিলেন সেঞ্চুরি বঞ্চিত।
২০২২ এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি খড়া কাটানোর পর সদ্য শেষ হওয়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে কাটালেন সাদা পোষাকে সেঞ্চুরির খড়া। মাঝখানে করোনার কারণে পুরো পৃথিবীর হঠাত থমকে যাওয়াটাও আরো প্রলম্বিত করেছে বিরাটের সেঞ্চুরির অপেক্ষা।
সাবেক পাকিস্তানি পেসার শোয়েব আখতার মনে করেন শচীনের অবিশ্বাস্য সেই রেকর্ড ছুঁতে হলে টি-টোয়েন্টি ফরমেট থেকে অবসর নেয়া উচিত বিরাটের। শুধুমাত্র টেস্ট আর ওয়ানডেতে মনযোগী হলে সামনের দিনগুলোতে আবারো সেই দুর্দান্ত বিরাটকেই দেখা যাবে বলে মনে করেন শোয়েব।
স্পোর্টস টককে দেয়া সাক্ষাৎকারে শোয়েব বলেন, ‘একজন ক্রিকেটার হিসেবে যদি আপনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, তাহলে আমি বলব বিরাটের শুধু টেস্ট আর ওয়ানডে খেলা উচিত। টি-টোয়েন্টি তাঁর অনেক জীবনীশক্তি নষ্ট করে দিচ্ছে। সে দারুণ একজন ক্রিকেটার। সে সব সময় মাঠে নামতে চায়, ভালো করতে চায়। সে টি-টোয়েন্টিতেও ভালো করতে চায়। কিন্তু তাঁর শরীর তাকে রক্ষা করতে হবে ভবিষ্যতের জন্য।’
ফিট থাকলে শচীনের রেকর্ড স্পর্শ করাটা খুব একটা কঠিন হবে না বিরাটের জন্য, এমনটাই মনে করেন শোয়েব, ‘তাঁর বয়স কত এখন? ৩৪, তাই না? খুব সহজেই সে আরী ৬-৮ বছর ক্রিকেট খেলতে পারবে। সে যদি আরো ৩০-৫০ টি টেস্ট খেলতে পারে, তাহলে আমি নিশ্চিত সেই টেস্ট গুলোতে ২৫ টি সেঞ্চুরি করা তাঁর জন্য খুব একটা কঠিন হবে না।’
৩৪ বছর বয়সী বিরাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন সেঞ্চুরি সংখ্যা ৭৫। ভারতের জার্সিতে ১০৮ টেস্ট্ব ৮৪১৬ রান করা বিরাট এখনো মোটামুটি সমান তালেই খেলে যাচ্ছেন তিনটি ফরমেটেই। যদিও টি-টোয়েন্টিতে কোহলি – রোহিতদের বাদ দিয়ে সামনের দিকে এগোতে চায় ভারত। তাই আর খুব বেশিদিন হয়তো টি-টোয়েন্টি খেলতে দেখা যাবে না প্রজন্মের সেরা এই ব্যাটারকে।
শোয়েব আরো বলেন, ‘ফিটনেস এবং মানসিক শক্তি ধরে রাখাটাও বিরাটের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে। সৌভাগ্যবশত সে অনেক শক্তিশালী একজন পাঞ্জাবী ছেলে। এটা দারুণ যে সে খুব সুন্দর এবং ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে ক্রিকেট খেলে। তাই ১০০ সেঞ্চুরি করার লক্ষ্যে তাকে আরো ফোকাস রাখা উচিত।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারত-পাকিস্তান সমর্থকদের মধ্যে এখন নিয়মিতই চলে বিরাট কোহলি আর বাবর আজমকে নিয়ে যুদ্ধ। নিজের দেশের খেলোয়াড়কে সেরা প্রমাণ করতে রীতিমতো বাকযুদ্ধে জড়ান নেটিজেনরা। বিরাট-বাবরের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে শোয়েব বলেন, ‘দুইজনই দারুণ খেলোয়াড়। এশিয়ায় বাবর আর কোহলির চেয়ে সেরা আর কে আছে? তাই যত কথাবার্তা হয় সবই মনযোগ আকর্ষণের জন্য।’