টি-টোয়েন্টিকে বলা হয় ব্যাটসম্যানদের খেলা। আইপিএলের মঞ্চেও বেশ কয়েকবার দেখা গেছে ব্যাটসম্যানদের মারকুটে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী। নিজেদের দিনে তাঁরা বিশ্বের যেকোনো বোলিং লাইনআপকে পাড়ার বোলারে নামিয়ে আনতে সক্ষম। আসুন দেখে নেয়া যাক কমপক্ষে ৫০ রান করা ইনিংসে সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করা পাঁচ ব্যাটসম্যানকে।
- ৩১৮.৭৫ – লোকেশ রাহুল (পাঞ্জাব কিংস বনাম দিল্লী ক্যাপিটালস)
২০১৮ মৌসুমের দ্বিতীয় ম্যাচে সেবার পাঞ্জাব কিংসের মুখোমুখি হয়েছিল দিল্লী ক্যাপিটালস। টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে গৌতম গম্ভীরের ৪২ বলে ৫৫ রানের সুবাদে ১৬৬ রানের মাঝারি মানের সংগ্রহ দাঁড় করায় দিল্লী।
জবাব দিতে নেমে লোকেশ রাহুলের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে উড়ন্ত সূচনা পায় পাঞ্জাব। তাঁর মারকুটে ব্যাটিংয়ে মাত্র তিন ওভারেই দলীয় পঞ্চাশ রান পার করে দলটি। রবীচন্দ্রন অশ্বিনদের সেদিন বড্ড অসহায় লাগছিলো রাহুলের সামনে। শেষপর্যন্ত ৩১৮.৭৫ স্ট্রাইকরেটে ১৬ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলে আউট হন রাহুল এবং পাঞ্জাব ম্যাচ জিতে নেয় ছয় উইকেটে।
- ৩২৬.৩১ – নিকোলাস পুরান (লখনৌ সুপার জায়ান্ট বনাম রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু)
চেন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বিরাট কোহলি, ফাফ ডু প্লেসি এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের তিন ফিফটিতে ২১২ রানের বড় সংগ্রহ পায় রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। জবাব দিতে নেমে মাত্র ২৩ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে লখনৌ।
মাঝে লোকেশ রাহুল এবং মার্কাস স্টয়নিস ৭৬ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দিলেও মাত্র চার বলের ব্যবধানে ফিরে যান দুজনেই। সবাই ভেবেছিল ব্যাঙ্গালুরুর জয় সময়ের অপেক্ষা মাত্র! এরপরই শুরু হয়ে নিকোলাস পুরান শো। মাত্র ১৯ বলে ৬২ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন তিনি। তাঁর ইনিংসের সুবাদেই শেষ বলে নাটকীয় এক জয় পায় লখনৌ।
- ৩২৭.২৭ – ইউসুফ পাঠান (কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ)
২০১৪ মৌসুমের ম্যাচে ইডেন গার্ডেন্সে সানরাইজার্স বিপক্ষে ম্যাচ ভালোই বিপাকে ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। শেষ চারে যেতে হলে হায়দ্রাবাদের দেয়া ১৬০ রানের লক্ষ্য দলটিকে পেরোতে হতো ১৫.২ ওভারে।
জবাব দিতে নেমে যেন শুরুতেই ছন্নছাড়া গৌতম গম্ভীরের দল। ৯.২ ওভারে ৭৮ রান তুলতেই তাঁরা হারিয়ে ফেলে চার উইকেট। ১৫.২ ওভার তো দূর, জয়টাই তখন বহু দূরের পথ কলকাতার কাছে।
কিন্তু ইউসুফ পাঠান ক্রিজে আসতেই যেন ম্যাজিকের মতো বদলে গেল সব। মারকুটে ব্যাটিংয়ে সেদিন হায়দ্রাবাদের বোলারদের যেন পাড়ার বোলারে নামিয়ে আনেন। তাঁর ২২ বলে ৭৪ রানের ইনিংসের সুবাদে মাত্র ১৪.২ ওভারেই ম্যাচ জিতে নেয় কলকাতা।
- ৩৪৮ – সুরেশ রায়না (চেন্নাই সুপার কিংস – পাঞ্জাব কিংস)
২০১৪ মৌসুমের কোয়ালিফায়ারে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বীরেন্দর শেবাগের সেঞ্চুরিতে ২২৬ রানের বড় সংগ্রহ পায় পাঞ্জাব কিংস। জবাব দিতে নেমে প্রথম ওভারেই ফাফ ডু প্লেসির উইকেট হারায় চেন্নাই সুপার কিংস।
ফাফের উইকেট যেন শাপেবর হয়ে আসে দলটির জন্য। সুরেশ রায়না ক্রিজে এসেই রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন এবং ২৫ বলে ৮৭ রানের অতিমানবীয় এক ইনিংস খেলেন। তাঁর ইনিংসে ১২টি চারের পাশাপাশি ছিল ছয়টি ছয়ের মার। তাঁর ইনিংসের সুবাদে পাওয়ার প্লেতে একশো ছাড়ালেও বাকিদের ব্যর্থতায় শেষপর্যন্ত ম্যাচটি হেরেছিল চেন্নাই।
- ৩৭৩.৩৩ – প্যাট কামিন্স (কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স)
২০২০ আইপিএলে সেবার কলকাতার বিপক্ষে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ১৬১ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় রোহিত শর্মার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। জবাব দিতে নেমে ১৩ ওভারে ১০০ রান তুলতেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসে কলকাতা। তাঁদের তারকা ফিনিশার আন্দ্রে রাসেল ছিলেন নিষ্প্রভ। কিন্তু এদিন যেন প্যাট কামিন্সের ব্যাটসম্যান সত্ত্বা জেগে উঠে।
ক্রিজে এসেই দারুণ সব শটে বলকে সীমানাছাড়া করতে শুরু করেন। মাত্র ১৫ বলে ৫৬ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলেন এই অজি তারকা। আইপিএলের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডের পাশাপাশি মাত্র ১৬ ওভারেই দলকে জিতিয়ে দেন কামিন্স।