ব্যাটিং ইনিংসের শুরুতে মোটেও সুবিধা করতে পারছে না কলকাতা নাইট রাইডার্স। সে দায়ভার খানিকটা হলেও রহমানুল্লাহ গুরবাজের কাঁধে গিয়ে পড়ে। কেননা তিনি নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না। দলের চাহিদাও ঠিকঠাক মেটাতে পারছেন না তিনি।
গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক জয় তুলে নিয়েছিল কলকাতা। সেই জয়ে অবশ্য পুরো কৃতিত্বটাই রিঙ্কু সিংয়ের প্রাপ্য। এই জায়গায় কলকাতা বেশ শক্তিশালী। তাদের মিডল অর্ডারটা বেশ প্রতিভাবান খেলোয়াড় দিয়ে পূর্ণ। অধিনায়ক নিতিশ রানা, ভেঙ্কেটেশ আইয়ার ও রিঙ্কু সিংয়ের মত খেলোয়াড়রা মুহূর্তের মধ্যে ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তন করে দিচ্ছে।
তবে ইনিংসের শুভ সূচনা আর পাওয়া হচ্ছে না। তবুও টেবিলের চারে থাকা দলটি নিজেদের ওপেনিং পজিশনে খুব বেশি পরিবর্তন আনেনি এখন অবধি। শুরু থেকে স্বদেশী নারায়ণ জগদীশানের সঙ্গী আফগান ক্রিকেটার রহমানুল্লাহ গুরবাজ।
এই জুটি খুব একটা সফলতা বয়ে আনেনি। তবুও তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, নিজেদের প্রমাণের। তবে এই জুটিকে সুযোগ দিতে গিয়ে আরও একজনকে কি অবহেলা করা হচ্ছে কি-না, সে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়। চার জনের বেশি বিদেশী খেলোয়াড় নিয়ে খেলতে না পারার নিয়মটাই হয়ত অবহেলার প্রধান কারণ। তবুও টুর্নামেন্টের প্রায় অর্ধেক ম্যাচ খেলে ফেলার পর অন্তত পরিবর্তনটা আসা জরুরি।
সেক্ষেত্রে লিটন দাস হওয়া উচিত গুরবাজের বিকল্প। কেননা আফগান এই ক্রিকেটার এখন পর্যন্ত ব্যাট করেছেন বেশ ধীর গতিতে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের এবারের আসরে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান তাঁর। তবে সেটা উৎফুল্ল হওয়ার মত কোন তথ্য নয়। ভিনদেশী ওপেনারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্ট্রাইকরেট তাঁর।
অথচ ডাগ আউটে বসে থাকা লিটন দাস রয়েছেন সেরা ফর্মে। এই বছরে খেলা ৬টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তাঁর স্ট্রাইক রেট প্রায় ১৬০! এমন একজন ওপেনার কলকাতার ডাগআউটে বসে বসে, দলের ব্যর্থ সূচনার চিত্র দেখছেন।
২০২২ সালেও তিনি টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট করেছেন প্রায় ১৪১ স্ট্রাইকরেটে। গুরবাজের যেখানে ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে স্ট্রাইকরেট ১১০ এর একটু বেশি। ২০২২ সালে যা ছিল ১৩৭ এর কাছাকাছি। ফর্ম বিবেচনায় কলকাতার প্রথম পছন্দ হওয়ার কথা লিটন দাস। হয়েছে তার উল্টো।
আর শুরু পাওয়ার-প্লে তে ঠিক কতটা বিধ্বংসী লিটন সে প্রমাণ তো তিনি রেখেছেন ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে খেলা সিরিজে। ফিল্ডিং পজিশনের পূর্ণ ফায়দা লুফে নিতে এই মুহূর্তে লিটনের জুড়ি মেলা ভার। তবুও কলকাতার ওপেনারদের টানা ব্যর্থতায় দুইটি ম্যাচ প্যাভিলনে বসেই কাটিয়ে দিতে হয়েছে লিটন দাসকে।
তবে এই পরিস্থিতির হয়ত পরিবর্তন হতে পারে। কলকাতার পরবর্তী ম্যাচে ওপেনিং পজিশনে পরিবর্তন আসাটা যেন অবধারিত। সেক্ষেত্রে লিটন হওয়ার কথা প্রথম পছন্দ। যদিও দলে জেসন রয়ের মত অভিজ্ঞ ব্যাটার রয়েছেন। সেদিক বিবেচনায় লিটনের বেগুনী জার্সিতে মাঠে নামাটা আরও খানিকটা বিলম্বিত হতে পারে।
কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, লিটনকে নিশ্চয়ই ভাবনায় রাখছে কলকাতার টিম ম্যানেজমেন্ট। উইকেটের পেছনের যথেষ্ট তীক্ষ্ণ লিটন। ব্যাটটাও চলছে তাঁর দূর্বার গতিতে। এমন একটা সময়ের সুফল লুফে না নিলে, আখেরে লোকসান ফ্রাঞ্চাইজির।