জীবন ধাঁধার সমাধান

ক্যারিয়ার যদি হয় একটা রুবিক কিউব লিওনেল মেসি সেটা মিলিয়ে ফেলেছেন ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর।

দুনিয়া এটা মানে, এমনিতে মেসি পূর্ণতা পেয়েছেন ২০১২ সালেই, ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মেসি যা করেছেন তা অনেক ফুটবলারের চূড়ান্ত স্বপ্নের চেয়েও বড় সেই অর্জন।

কিন্তু মেসির একটা দায় ছিল, তিনি হালান্ডের মতো নরওয়ে কিংবা লেওয়ান্ডভস্কির মতো পোল্যান্ডে জন্ম নেননি, তিনি জন্ম নিয়েছেন আর্জেন্টিনায় যেখানে রোজ সকাল বিকাল ম্যারাডোনা লোকটার নামে পুজা হয়, যেখানে রোজ একজন দুর্দান্ত তরুণের দারুণ ড্রিবলিং স্কিল দেখে, গ্যালারিতে মানুষের মনে নতুন ম্যারাডোনা তকমা ঘনীভূত হয়।

আর মেসি, মেসি তো সবদিক থেকেই ছিলেন ম্যারাডোনা কিন্তু এখানেও রুবিক কিউব নাছোড়বান্দা, একটা রঙ মেলে না, ম্যারাডোনার দেমাগটা কোথায় যেন নিখোঁজ।

দিন গড়ালো, মেসির নামের সাথে ততদিনে এক অবসর, একষ হাহাকার জাগানিয়া পেনাল্টি মিস, এক বিশ্বকাপ ফাইনাল হারা আর একরাশ সাফল্য কিন্তু কোথায় যেন মেসিকে সফল বলা যাচ্ছে না, মেসিরই দায়, তার জন্ম আর্জেন্টিনায়, তাও আবার রোজারিওতে, উচ্চতায় তিনি গড়পড়তা বাঙ্গালি আর বা পায়ে তিনি ঈশ্বরের মতোন।

মেসি ছাড়লেন বার্সেলোনা, তার আরামের সোফা, তার একান্ত কমফোর্ট জোন, সেখান থেকে বেড়িয়েই জিতে নিলেন কোপা আমেরিকা, একটা রুপালী রঙ যা রুবিক কিউবে মিলে গেল।

তবু মেসির রুবিক কিউব সম্পূর্ণ হয়নি একটা রঙ তখনও অজানা, অচেনা, অধরা।

ধীরে ধীরে মেসি বেড়িয়ে এসে হয়ে উঠলেন রোজারিওর সেই দুরন্ত বালক, তা ওয়েঘর্স্ট জানেন, তা জানেন লুই ফন হাল আর সৌদি আরবের ম্যাচের পর মেসির কণ্ঠ, যে কণ্ঠ বারবার একই কথা বলেছে, আপনারা আমাদের ওপর ভরসা রাখেন আমরা ফিরে আসবো।

মেসি ফিরে এসেছেন, হয়তোবা তার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর জন্মদিনটা শুরু হতে চলেছে, মেসির রুবিক কিউবের শেষ রঙটা ছিল সোনালী, যা তিনি ঐশ্বরিক এক পোশাক গায়ে জড়িয়ে পৃথিবীর সর্বোচ্চ মঞ্চে হাতে তুলে সবাইকে দেখিয়েছেন, কায়েনাত মেসির শিয়রে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link