নেই আহামরি কোন পারফরম্যান্স, একাদশেও আসা যাওয়ার মাঝেই থাকেন – একসময় জাতীয় দলের জার্সিতে বোলারদের শাসন করা সৌম্য সরকারের ঘরোয়া ক্রিকেটে অবস্থাটা এমনই। তবু একেবারে লাইমলাইট থেকে হারিয়ে যাননি তিনি।
পুরনো ফর্ম বিবেচনায় সৌম্য সরকার ঠিকই আছেন জাতীয় দলের কাছাকাছি। নামের ভারেই কিংবা হেডকোচের প্রিয় শিষ্যদের একজন – যেটিই হোক কারণ, তিনি ঠিকই সুযোগ পেয়েছেন ইমার্জিং এশিয়া কাপ দলে। উদীয়মান এক ঝাঁক তরুণের পাশাপাশি এই ব্যাটার নিজেকে প্রমাণ করার জন্য খেলছেন মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে।
শুরুটা অবশ্য মনের মত হয়নি সৌম্য সরকারের। মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৭ বলে করছেন ৪২ রান। সংখ্যা দেখে মনে হতেই পারে সৌম্য বুঝি ততটা খারাপ করেনি। কিন্তু ৩৫০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লোয়ার মিডল অর্ডারে যেমন ব্যাটিং দরকার ছিল সেটা করতে পারেননি তিনি। ছয়টা চার মারলেও স্ট্রাইক রোটেটে সমস্যা চোখে লেগেছে।
তবে আশার কথা কিছুটা হলেও রান পেয়েছেন সৌম্য সরকার। নিয়মিত রান করতে পারলে হয়তো তলানিতে পৌঁছে যাওয়া আত্মবিশ্বাস কিছুটা হলেও ফেরত পাবেন তিনি, তখন পুরনো ভিন্টেজ সৌম্যের দেখা মিললেও মিলতে পারে।
এর আগে অবশ্য বল হাতে দেখা মিলেছিল সৌম্য সরকারের। টসে জিতে আগে বোলিং করা বাংলাদেশের হয়ে পাঁচ ওভার হাত ঘুরিয়েছেন তিনি। তিন উইকেট শিকার করলেও এই মিডিয়াম পেসার রান দিয়েছেন দশের বেশি ইকোনমিতে।
অবশ্য এদিন কোন বাংলাদেশী বোলারদেরকেই ছাড় দেয়নি লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা; একমাত্র শেখ মাহেদী এবং রকিবুল হাসান ছাড়া সবাই ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন সাতের বেশি। তাই ডেথ ওভারে বোলিং করা সৌম্যের ইকোনমিতে দশের বেশি হওয়া অস্বাভাবিক নয় মোটেই।
বর্তমান বাংলাদেশ ওয়ানডে দল বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। ব্যাটিং বোলিং দুই বিভাগেই আছেন ইনফর্ম ক্রিকেটার। তবে ব্যাকআপ ওপেনার, সাত নম্বর ব্যাটার এবং পেস বোলিং অলরাউন্ডারের ঘাটতি রয়েছে। আর সত্যি বলতে একজন সৌম্য সরকারের মধ্যেই রয়েছে তিন সমস্যার সমাধান। তাই এশিয়া কাপ আর বিশ্বকাপের মত আসর সামনে রেখে নির্বাচকরা বাজিয়ে দেখতে চাইছেন এই বাঁ-হাতিকে।
যদিও প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্স দেখে হতাশই হতে হবে তাঁদের। বোলিংয়ে তিন উইকেট নিলেও নিজের আসল কাজ ব্যাটিংয়ে আবারও ব্যর্থ হয়েছেন সৌম্য সরকার। বিবেচনায় থাকা আরেক ওপেনার নাইম শেখও পারেননি আস্থার প্রতিদান দিতে। ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে ফিরেছেন ২৫ বলে ২২ রান করে।
ম্যাচ অবশ্য আরো বাকি আছে, সৌম্য সরকার তাই আরো কিছু সুযোগ পাবেন নিজেকে প্রমাণ করার। তবে বারবার টিম ম্যানেজম্যান্ট তাঁকে সুযোগ দিলেও নিজেকে প্রমাণ করার কাজটা সৌম্যকেই করতে হবে। নিজের কাজ কতটা করতে পারেন এই বামহাতি সেটাই এখন দেখার বিষয়।