ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে সাকিব যখন ফিরলেন, তখন ম্যাচ ঝুঁকে গিয়েছে আফগানদের দিকে। হতাশ সাকিবের প্রস্থান আর উল্লসিত আফগান শিবিরের দৃশ্য সেই আগাম আভাসই দিচ্ছিল। কিন্তু নয়নাভিরাম সিলেটে শেষ পর্যন্ত টাইগারদের জয়টা আসলো তাওহিদ-শামীমের অভূতপূর্ব এক জুটিতে।
না। বাংলাদেশের তরী যখন জয়ের তীরে, তখন তাওহিদ-শামীম জুটি টিকে নেই। ম্যাচ জয়ের মুহূর্তটা এসেছে অনেক নাটকীয়তার পরই। কিন্তু শুরুতেই প্রায় ছিটকে ম্যাচটার মোড় ঘুরিয়েছিলেন ঐ দুজনই। শুধু কি মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া, ৭৩ রানের জুটিটা ছিল জয়ের মূল প্রভাবক।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শামীমের অভিজ্ঞতা বলতে ১৬ টা ম্যাচ। তাওহিদ হৃদয়ের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা দশের কোঠাও পার হয়নি। কিন্তু এমন অসম চাপের ম্যাচে কঠিন সমীকরণে সকল চাপ ও কাঠিন্যকে জয় করে জয়টা আসলো তাদের জুটিতেই।
দৃশ্যপটে ফেরা যাক। ড্রিংকস ব্রেকের পর সাকিবের ছন্দপতন। ফরিদের বলে ক্যাচ তুলে সাকিবের বিদায়। কিন্তু এমন মুহূর্তেও নির্ভার তাওহিদ। ঐ ওভারের শেষ বলেই তার প্রামাণ্য এক দৃশ্য মিলল দারুণ এক ছক্কায়।
তাওহিদের ঐ ছয়ের পর আত্মবিশ্বাসের পূর্ণ প্রতিফলন ঘটান শামীমও। পরের ওভারে মোহাম্মদ নবীর বলে চার। তবে তাতেও শ্লথ হয়ে ছিল বাংলাদেশের রানের গতি। ১৩ ওভারে ৭৯। অর্থাৎ পরের ৭ ওভারে প্রয়োজন ৭৬ রান।
এমন সমীকরণে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের করা পরের ওভারকেই টার্গেট করলেন তাওহিদ-শামীম জুটি। ৩ চার সহ ওয়াইড সংযোগে আরো একটি চারের সৌজন্যে ঐ ওভারে আসলো ২১ রান। ব্যাস। বাংলাদেশের ম্যাচে ফেরা ঐ ওভারের পরই।
তাওহিদ-শামীম যুগলবন্দীতে ম্যাচ জয়ের সুবাস অটুট ছিল পরের ওভার গুলোতেও। তাদের পঞ্চাশ পেরোনো জুটি ধাক্কা দিয়েছিল জয়ের দুয়ারেও।
১৭ তম ওভারে ফারুকিকে পুল করে ছক্কা মেরেছিলেন হৃদয়। ঐ ওভারেরই পঞ্চম বলে শুয়ে পড়ে স্কুপ করে যেভাবে চার মারলেন শামীম, তা অনেকদিনই চোখ আটকে থাকার মতো শট।
শামীম অবশ্য এরপরেই থেমেছিলেন। ২৫ বলে ৩৩ রানে যখন ফিরছেন তখন হৃদয়ের সঙ্গে তাঁর জুটি থেমেছে ৭৩ রানে। তবে বাংলাদেশের জয়ের পথটা আর থেমে যায়নি।
যদিও শেষ ওভারে করিম জানাতের হ্যাটট্রিকে ম্যাচের ভাগ্য পৌঁছে গিয়েছিল চূড়ান্ত নাটকীয়তা। তবে এবার আর তীরে এসে তরী ডোবেনি বাংলাদেশের। ১ বল হাতে রেখেই ম্যাচটি ২ উইকেটে জিতে নেয় বাংলাদেশ।