সেদিন কি হয়েছিল রোহিত-ঈশানের?

যশস্বী জসওয়ালের অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি, রোহিত শর্মার প্রত্যাবর্তন সেঞ্চুরি কিংবা রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ডাবল ফাইফার – ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভারতের প্রথম টেস্ট শিরোনাম হওয়ার জন্য যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তবে অন্য আরেকটি কারণেও লাইমলাইটে উঠে এসেছে এ ম্যাচ। মিডল অর্ডার ব্যাটার ঈশান কিষাণের প্রতি অধিনায়ক রোহিতের রাগী প্রতিক্রিয়া এখন আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ভারতের প্রথম ইনিংসের কথা; ক্রিজে তখন ঈশান কিষাণ আর রবীন্দ্র জাদেজা। ততক্ষণে বড় সংগ্রহ গড়ে তোলা ভারতের চিন্তায় তখন ছিল শুধু ডিক্লেয়ার, সে হিসেবেই হয়তো কিষাণকে বলা হয়েছিল দ্রুত রান করতে। কিন্তু এই তরুণ টেস্ট ক্যারিয়ারে রানের খাতা খুলতে খরচ করেন বিশ বল। তাতেই বিরক্ত হন রোহিত, সে সঙ্গে ইনিংসের সমাপ্তিও ঘোষণা করেন।

তবে বিশ বলে এক রানের ইনিংস হয়তো ঈশান কিষাণ ইচ্ছে করে খেলেননি। ডোমিনিকার অতিরিক্ত স্লো পিচে এমনিতেই রান করা কঠিন, দুই সেঞ্চুরিয়ান জসওয়াল এবং রোহিত শর্মা ব্যাট করেছেন যথাক্রমে ৪৪.১৮ এবং ৪৬.৬ স্ট্রাইক রেটে। এছাড়া প্রথম বাউন্ডারি পেতে বিরাট কোহলিকেও অপেক্ষা করতে হয়েছে ৮১ বল।

একদিকে যশস্বী জসওয়ালের ধৈর্যশীল ব্যাটিং যখন প্রশংসা কুড়াচ্ছে অন্যদিকে, আরেক অভিষিক্ত ঈশান কিষাণ ধীর ব্যাটিংয়ের জন্য চক্ষুশূল হয়েছেন অধিনায়কের। অবশ্য ম্যাচ পরিস্থিতি হিসেবে তাঁর কিছু হয়তো করারও ছিল না, এমন পিচে বোলারদের লাইন লেন্থ খুঁজে পেতেও কিছুটা সময় লাগে। তাই একটু দ্রুত ডিক্লেয়ার দিতে হয়েছে রোহিতকে।

এ ব্যাপারে রোহিত শর্মা বলেন, ‘ইনিংস ঘোষণা করার আগে আমি তাদের জানিয়েছিলাম যে আমরা আর এক ওভার খেলবো। আমি চেয়েছিলাম ঈশান রান করুক এবং তারপরে ইনিংস ঘোষণা করবো।’

অধিনায়কের সিদ্ধান্ত অবশ্য সঠিক প্রমাণ করেছেন দুই স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাদেজা। অশ্বিন আউট করেছিলেন ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে আর জাদেজা তুলে নিয়েছেন চন্দরপলের উইকেট। এরপর আর প্রতিরোধ গড়তে পারেনি স্বাগতিকেরা, ইনিংস ব্যবধানেই হেরেছে।

সব মিলিয়ে তিনজনের অভিষেক হয়েছে ভারত এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচে। এদের মধ্যে যশস্বী জসওয়াল তো ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরষ্কার ভাগিয়ে নিয়েছেন; আরেক অভিষিক্ত অ্যালিক অ্যাথেনজ করেছেন ৭৫ রান আর ঝুলিতে পুরেছেন রোহিত শর্মার উইকেট। সে তুলনায় সাদামাটা হয়েছে ঈশান কিষাণের শুরুটা; ব্যাটিংয়ে তো সুযোগ পাননি, উইকেট কিপিংয়েও ছিলেন সাদামাটা। আর উপরি হিসেবে জুটেছে অধিনায়কের অসন্তুষ্টি।

তবে তরুণ এই ব্যাটসম্যানের প্রতিভা নিয়ে সন্দেহ নেই। তিন ফরম্যাটেই তিনি হতে পারেন ভারতের ব্যাটিং লাইন আপের বড় নাম। সাদা বলে টপ অর্ডারে আর লাল বলে মিডল অর্ডারে টিম ইন্ডিয়াকে অনেকদিন সেবা দানের সম্ভাবনা আছে তাঁর মাঝে। বিশেষ করে পজিটিভ ক্রিকেট খেলার ব্যাপারে ইম্প্যাক্টফুল হতে পারেন তিনি, ভারতও সেই ইম্প্যাক্টফুল কিশানকে দেখার অপেক্ষায় আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link