মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে জাতীয় দলের তেমন চাপ নেই। বিশ্রামে বাংলাদেশের মূল দুই দল। নারী দল ভারতের বিপক্ষে অবিস্মরনীয় এক সিরিজ শেষ করেছে দিন কতক হয়েছে। অন্যদিকে, পুরুষ দলও আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষ করে রয়েছে অপেক্ষায়, কন্ডিশনিং ক্যাম্পের।
বিরতির এই সুযোগটুকু তাই কাজে লাগাচ্ছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ দল। বয়সভিত্তিক জাতীয় দলটি ঘাটি গেড়েছে মিরপুর একাডেমি মাঠে। সেখানে কোচ সোহেল ইসলাম ক্ষুদে খেলোয়াড়দের উন্নতির বিষয়টি রাখছেন নজরে। এরই ফাঁকে নাজমুল হোসেন শান্ত, জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ উঁকি দিয়েছেন ছোটদের ক্যাম্পে।
সেখানে তিনি তার সাবেক কোচ সোহেল ইসলামের সাথে দেখা করেছেন। সোহেল ইসলামের সাথে নিজের ক্ষুদ্র সব দূর্বলতা বা সমস্যা নিয়ে আলাপ করেছেন।সর্বোপরি তিনি অনূর্ধ্ব-১৫ দলকে উজ্জীবিত করবার চেষ্টা করেছেন। বাংলাদেশের সকল বয়সভিত্তিক দলের গণ্ডি পেরিয়ে শান্ত আজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ময়দানে।
তিনি জানেন একটা সঠিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসাটা ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এটাও জানেন যে বয়সভিত্তিক দলে থাকাকালীন সময়ে মানসিক অবসাদ এসে যায়। নিজে সেটা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন নিশ্চয়ই। তাইতো ছোটদের চাঙ্গা করতে তিনি দিয়েছেন টোটকা। তাছাড়া বয়সভিত্তিক দলে বারবার করা একই ধরণের অনুশীলন ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেসব উপদেশও দিয়েছেন শান্ত।
এ নিয়ে বয়সভিত্তিক দলের কোচ সোহেল ইসলাম বলেন, ‘ওরা যে জিনিস নিয়ে কাজ করছিল, সেই জিনিসগুলো গুরুত্বটা ও (নাজমুল হোসেন শান্ত) বোঝানোর চেষ্টা করছিল, যে এই বয়স থেকে এই জিনিসগুলো করলে উপর দিকে আসলে যেই চ্যালেঞ্জগুলো আসে, সেগুলো মোকাবেলা করা সহজ হয়।’
নাজমুল হোসেন শান্ত দীর্ঘ একটা পথ পাড়ি দিয়ে এসেছেন এতদূর। প্রক্রিয়া ঠিক রেখেছেন নিজের। অবসাদকে দূরে ঠেলে দিয়েছেন। নতুন করে নিজেকে অনুপ্রাণিত করেছেন। তিনিই সম্ভবত এই পর্যায়ের সকল মানসিক ও শারীরিক পরিস্থিতির সাথে সবচেয়ে বেশি অবগত। তাইতো তিনি আগামী দিনের ক্ষুদে তারকাদের সাথে আলাপও করেছেন।
ক্যারিয়ারে বেশ উত্থান-পতন তিনি দেখেছেন। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিল তার সমালোচনায় জর্জরিত। সে সবকিছু পেছনে ফেলে এখন বেশ দাপটের সাথেই তিনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছেন। বয়সভিত্তিক দল থেকেই শান্ত নজর কেড়েছিলেন দেশের অধিকাংশ কোচের। সেখান থেকেই তার প্রতি প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী।
শুরুটা সেই প্রত্যাশার চাপ সামলে নিতে বেগ পেয়েছেন ঠিক। তবে নিন্দা আর সমালোচনার সাথে লড়াই চালিয়ে গেছেন। নিজের মানসিকতায় প্রভাব ফেলতে দেননি তিনি। নিজের কাজটা ঠিকঠাক করে গেছেন বলেই টানা শতকের দেখাও মিলছে তার কাছ থেকে।
এই বিষয়গুলোই সম্ভবত তিনি ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ক্ষুদে ক্রিকেটারদের। তাছাড়া জাতীয় দলের একজন তারকা খেলোয়াড়কে এত কাছ থেকে দেখাটা নিশ্চিতভাবেই অনুপ্রাণিত করেছে অনূর্ধ্ব-১৫ দলটিকে। তাতে নিজেদের কাজটা আরও বেশি মনোযোগ দিয়ে করবার নব স্পৃহা পেয়েছে পুরো দলটা।
তবে শান্ত কেবল ছোটদের উপদেশ দিয়েই ছিলেন না ক্ষান্ত। নিজেকেও প্রস্তুত করেছেন তিনি। অনূর্ধ্ব-১৫ এর ক্যাম্পের ফাকেই তিনি নিজের ব্যাটিং অনুশীলন চালিয়ে গেছেন। সোহেল ইসলামের কাছ থেকে সমাধান জেনে নিয়ে শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন নিজের দূর্বলতা কিংবা ভুল।