সাকিব, অপেক্ষায় আছে সিংহাসন

সাকিব আল হাসানের নিষিদ্ধ করার ঘটনা মনে আছে নিশ্চয়ই। বাংলার ক্রিকেট স্তব্ধ হয়ে যাওয়া সেসময় মাশরাফি মর্তুজা সাকিবের সমর্থনে একটা লেখা লিখেছিলেন; যার শেষ লাইনে সাকিবের নেতৃত্বে ২০২৩ বিশ্বকাপ খেলার কথা ভেবে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন ম্যাশ।

যদিও মাশরাফি মর্তুজার পর ওয়ানডে অধিনায়ক হতে পারেননি সাকিব আল হাসান, দায়িত্ব উঠেছিল তামিম ইকবাল। সবকিছু ঠিক থাকলে তাঁর নেতৃত্বেই হয়তো বিশ্বকাপ খেলতো টিম টাইগার্স, কিন্তু হঠাৎ-ই কালবৈশাখি ঝড় নেমে এসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে।

আর সেই ঝড়ে মাশরাফির আকাঙ্খা বাস্তব হতে চলছে; ঘটনাপ্রবাহ দেখে মনে হতে স্বয়ং বিশ্বকাপই ডাকছে অধিনায়ক সাকিবকে। আফগানিস্তান সিরিজে হুট করেই তামিম ইকবাল অবসর নিয়েছিলেন, এরপর প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে অবসর ভেঙে ফিরে চিকিৎসার জন্য ছুটে যান লন্ডনে।

কিন্তু, ততক্ষণে ড্রেসিংরুমে শুরু হয়েছে বিশৃঙ্খলা, সতীর্থদের আস্থার জায়গা হারিয়ে ফেলেছিলেন তামিম। সেসব আঁচ করতে পেরেই হয়তো লন্ডন থেকে ফিরে ক্যাপ্টেন্সি থেকে সরে যান তিনি; একইসাথে এশিয়া কাপে না খেলার সিদ্ধান্ত জানান।

এখন দুইয়ে দুইয়ে চার মিললেই পঞ্চাশ ওভারের সংস্করণেও অধিনায়ক হবেন সাকিব আল হাসান। তাতে ২০১১ সালের পর দ্বিতীয়বারের মত বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবেন তিনি। সাকিব অবশ্য ততটা আগ্রহী নন এ ব্যাপারে, কিন্তু গত কয়েকদিনের ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করলে মনে হতে পারে ক্যাপ্টেন্সি নিজেই সাকিবের কাছে যেতে আগ্রহী।

অধিনায়ক হিসেবে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বিন্দুরমাত্র সংশয় প্রকাশ করার সুযোগ নেই। তাঁর মত ক্রিকেট মস্তিষ্ক বাংলাদেশ তো বটেই বিশ্ব ক্রিকেটেই দুর্বল। আগ্রাসী অধিনায়কত্ব, তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা তৈরি করার ক্ষেত্রে সবার চেয়ে এগিয়ে এই তারকা। অধিনায়কত্বের চাপে সাকিবের পারফর্মার সত্তারও কোন পরিবর্তন হয় না, দিব্যি ব্যাটে-বলে শাসন করে যেতে পারেন প্রতিপক্ষকে।

তাই তো ক্যাপ্টেন হিসেবে সবচেয়ে সেরা পছন্দ সাকিব আল হাসান। সাকিব রাজি হলেই হয়তো ভারতের মাটিতে টস করতে দেখা যাবে তাঁকে। ইতোমধ্যে ব্যক্তিগত প্রস্তুতিও শুরু করেছেন এই অলরাউন্ডার। ট্রেনার নিয়োগ দিয়ে ফিটনেস উন্নতির দিকে মনোযোগ দিয়েছেন তিনি, নেতৃত্ব দিতে চাইলে দলগত পরিকল্পনাও করতে সময় লাগবে না তাঁর।

এখনো নিশ্চিত নয় কিছুই, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জানা যাবে নতুন অধিনায়কের নাম। সেটা যদি হন সাকিব আল হাসান, তবে ভক্ত-সমর্থকদের প্রত্যাশার পারদ নিশ্চিতভাবেই বাড়বে অনেকখানি। সীমিত শক্তি নিয়েও কেউ যদি প্রতিপক্ষের ঘাড়ে কামড় বসাতে পারেন তিনি সাকিব আল হাসান-ই। কাগজে-কলমে পিছিয়ে থেকেও যদি কেউ মাঠের খেলায় প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে পারেন তিনি সাকিব-ই।

তবে, সাকিব একাই সব করবেন তেমনটা ভাবলে ভুল হবে, দলের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে তাঁর সঙ্গে। তবেই ঘটবে দারুণ কিছু; কি জানি, সতীর্থদের পাশে পেলে হয়তো ৯৬’ এর অর্জুন রানাতুঙ্গা কিংবা ৮৩’ এর কপিল দেব হয়েই আবির্ভূত হতে পারেন সাকিব আল হাসান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link