ব্যস্ততা ছাপিয়ে শ্রেষ্ঠত্বে নজর সাকিবের

প্রায় ৩৫ দিন সাকিব আল হাসান ছিলেন দেশের বাইরে। খেলেছেন দুইটি ভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। এরপর দেশে না ফিরে গিয়েছিলেন দুবাই। সেখানে জুয়েলারির শো-রুম উদ্বোধন করেন তিনি। সেখান থেকে গণমাধ্যমকে ফাঁকি দিয়ে দেশে ফেরেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।

পরদিন আবার হেলিকপ্টার যোগে তিনি গিয়ে হাজির বরিশালে। সেখানে উদ্বোধন করেন এক হাসপাতাল। বেজায় ব্যস্ত সাকিবের যেন দম ফেলার সুযোগ নেই। সাকিব অবশ্য তাতে খুশি। তিনি কাজের মধ্যে থাকতে পারলেই যেন স্বস্তির নিঃশ্বাসটা নিতে পারেন।

তবে সাকিব আল হাসানের মূল লক্ষ্যটা অবশ্য অটল। তিনি এখনও শিরোপার দিকেই নজর রাখছেন। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপই থাকছে সাকিবের মূল ভাবনায়। অধিনায়ক হিসেবেই তিনি যাচ্ছেন এই দুই টুর্নামেন্টে। স্বাভাবিকভাবে বাড়তি দায়িত্ব থাকছে তার কাঁধে। কিন্তু সে জন্যে অবশ্য প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশ দল অবশ্য নিজেদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বেশ আগেভাগেই। সাকিব অবশ্য তখন ক্রিকেট ময়দানেই ছিলেন, তবে তা ভিনদেশে। দুই টুর্নামেন্ট খেলা সাকিব দারুণ সময় পার করেছেন বল হাতে। ব্যাট হাতে খানিকটা ফিকেই ছিলেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

তবে এসবের চাইতে সাকিবের কাছে নিশ্চয়ই মুখ্য বিষয় দেশের হয়ে একটা শিরোপা জেতা। বরিশালে হাসপাতাল উদ্বোধনের পর সেই বিষয়েই আবারও জোর দেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘আপাতত স্বপ্ন বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ।’ তিনি যেন মুখিয়ে আছেন লাল-সবুজের জার্সিতে মাঠে নামার জন্যে।

তবে তার আগে সাকিবকে তার দলের সাথে বসে একটা আলাপ করা দরকার। তিনি যখন কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলার উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছিলেন, তখন তিনি ছিলেন কেবলই একজন খেলোয়াড়। তবে প্রায় মাস খানেক পর দেশের মাটিতে তিনি পা রেখেছেন অধিনায়ক হিসেবে। সুতরাং কর্মব্যস্ততা আর মস্তিষ্কের ব্যবহারটা বাড়ছে সাকিবের বৈ কমছে না।

ধারণা করা হচ্ছে বুধবার থেকে সাকিব দলের সাথে অনুশীলন শুরু করবেন। অনুশীলনের চাইতেও বড় বিষয় সম্ভবত দলের সাথে আলোচনা করা। পরিকল্পনাগুলো জেনে নেওয়া। সেই সাথে নিজের মতামত আর দর্শন দলের প্রতিটা খেলোয়াড়দের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া। পাশাপাশি ইনজুরিমুক্ত থেকে পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়া।

বিকেল নাগাদ ঢাকায় ফিরে নিজের কর্মপরিকল্পনাই জানিয়েছেন সাকিব। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানান ফিট থাকতে চান তিনি। আপাতত নিজের চিন্তাভাবনাই স্থির করেছেন বিশ্ব সেরা এই অলরাউন্ডার। দলগতভাবে ঠিক কোথায় তিনি বাংলাদেশকে দেখতে চান, সেই আলাপ বহু আগেই করেছিলেন তিনি।

দেশের ক্রিকেটের সাথে সম্পৃক্ত থাকা সকলেই বেশ আশাবাদী এবারের বাংলাদেশ দলকে নিয়ে। মাঝে অবশ্য অধিনায়ক ইস্যুতে বেশ জলঘোলা হয়েছে। তবে সেসবের সমাপ্তি ঘটেছে। দলের ভেতরকার পরিস্থিতিও স্থিতিশীল। তাছাড়া দলের প্রতিটা খেলোয়াড়ই পারফরম করেই জায়গা করে নিয়েছেন। অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের মিশ্রনটাও ঠিকঠাক।

এই দলটাকে আবার নেতৃত্ব দেবেন আগ্রাসনে ভরপুর সাকিব আল হাসান। এবারই তো আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ের মোক্ষম সময়। সাকিব দলকে সেই শিরোপা পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারবেন কিনা সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। ভারসাম্য সাকিব রাখতে জানেন। কেবল এবার নেতৃত্বটা দিতে হবে সামনে থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link