ধরার বুকে দানবের দিন

ঘড়ির কাটায় ঠিক ছ’বছর পর ২০১৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় একই রেকর্ডের হাতছানি তখন ইউনিভার্স বস খ্যাত ক্রিস গেইলের সামনে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৩৭ বলে ১৯৭ রানে তখন ব্যাট করছেন গেইল। গেইলের বিধ্বংসী ইনিংসে জিম্বাবুয়ের অবস্থা তখন একেবারেই নাজেহাল। ৪৬ তম ওভারের পঞ্চম বলেই টেন্ডাই চাতারাকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দুর্দান্ত এক ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন গেইল। সেই সাথে বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম ও ওয়ানডে ইতিহাসে পঞ্চম ডাবল সেঞ্চুরির মালিক বনে যান এই ক্যারিবিয়ান তারকা।

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১০। গোয়ালিওরে এক অনন্য রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে শচীন টেন্ডুলকার। ইনিংসের শেষ তিন বল থেকে প্রয়োজন মাত্র একটি রান! চার্ল ল্যাঙ্গাভেল্টের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বল মিড অফে পুশ করে দিয়েই দৌড় দিলেন শচীন। পেয়ে গেলেন কাঙ্ক্ষিত সেই রান! ভারতীয় ড্রেসিং রুম থেকে শুরু করে পুরো স্টেডিয়ামেই সমর্থকদের উল্লাস। ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরির অনন্য রেকর্ডে নাম লেখান শচীন।

ঘড়ির কাটায় ঠিক ছ’বছর পর ২০১৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় একই রেকর্ডের হাতছানি তখন ইউনিভার্স বস খ্যাত ক্রিস গেইলের সামনে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৩৭ বলে ১৯৭ রানে তখন ব্যাট করছেন গেইল। গেইলের বিধ্বংসী ইনিংসে জিম্বাবুয়ের অবস্থা তখন একেবারেই নাজেহাল। ৪৬ তম ওভারের পঞ্চম বলেই টেন্ডাই চাতারাকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দুর্দান্ত এক ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন গেইল। সেই সাথে বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম ও ওয়ানডে ইতিহাসে পঞ্চম ডাবল সেঞ্চুরির মালিক বনে যান এই ক্যারিবিয়ান তারকা।

২০১০ সালে শচীনের পর ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছিলেন আরেক ভারতীয় ওপেনার বীরেন্দ্র সেওয়াগ। এরপর রোহিত শর্মা পর পর দু’বার গড়েন এই কীর্তি। পরবর্তীতে ২০১৫ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মারলন স্যামুয়েলসের সাথে রেকর্ড গড়া জুটির পথে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকান ক্রিস গেইল।

ক্যানবেরায় সেদিন টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় বলেই আউট ডুয়াইন স্মিথ। জিম্বাবুয়ের উদযাপন বলুন কিংবা আনন্দের মূহুর্ত – এর শুরু এবং শেষটা এখানেই! এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ক্রিস গেইলের সঙ্গি হন মারলন স্যামুয়েলস। জিম্বাবুয়ের বোলারদের জন্য বাকি সময়টা ছিলো এক ভয়ংকর স্বপ্নের মতো। এই স্বপ্ন নি:সন্দেহে ভুলে যেতে চাইবেন পানিয়াঙ্গারা, চাতারারা।

গেইল-স্যামুয়েলসের দুর্দান্ত জুটিতে ৩১ ওভারেই দু’জনের জুটি ১৫০ পার। ব্যক্তিগত ১০৫ বলে ২২তম ওয়ানডে সেঞ্চুরির দেখা পান গেইল। এরপর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে শুরু হয় গেইল দাপট! পরের ২১ বলে তাণ্ডব চালিয়ে করেন আরো ৫০ রান! ১২৬ বলেই দেখা পান দেড়শোর!

দেড়শো থেকে দুইশোতে পৌঁছাতে গেইল খেললেন মোটে ১২ বল। ১০৫ বলে সেঞ্চুরি পাওয়া গেইল পরের সেঞ্চুরি করেন মাত্র ৩৩ বলে! এরপর ৪৬ তম ওভারের পঞ্চম বলে চাতারাকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন এই ক্যারিবিয়ান জায়ান্ট। ওয়ানডে ইতিহাসে ভারতের বাইরে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে গড়েন ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড।

গেইলের সাথে জুটির পথে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি তুলে নেন স্যামুয়েলস। গেইল-স্যামুয়েলসের ব্যাটে সেদিন ক্যানবেরায় অসহায় হয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ের বোলাররা। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দু’জনে মিলে গড়েন ৩৭২ রান! ওয়ানডে ইতিহাসে যেকোনো উইকেটে এটি ছিলো সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড।

শেষ পর্যন্ত স্যামুয়েলস ১৫৬ বলে ১৩৩ রানে অপরাজিত থাকলেও ইনিংসের একদম শেষ বলে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার শিকার হয়ে ফিরেন গেইল। ১৪৭ বলে ১৬ ছক্কা ও ১০ চারে ২১৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন এই ক্যারিবিয়ান তারকা। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২ উইকেটে ৩৭২ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এরপর বৃষ্টি বাঁধায় জিম্বাবুয়ের সামনে লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৪৮ ওভারে ৩৬৩ রানের! জবাবে বিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে ৪৪.৩ ওভারে ২৮৯ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। ৭৩ রানের বড় জয়ে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন ক্রিস গেইল।

কাকতালীয়ভাবে ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে করা শচীনের ডাবল সেঞ্চুরির ঠিক পাঁচ বছর পর একই দিনে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পান গেইল। এবং গেইলের ডাবল সেঞ্চুরির পর ওই একই বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ডাবল সেঞ্চুরি করেন নিউজিল্যান্ডের ওপেনার মার্টিন গাপটিল!

আর সেই ডাবল সেঞ্চুরি করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে! বিশ্বকাপ ইতিহাসে দ্বিতীয় ও ওয়ানডেতে ষষ্ঠ ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন এই ব্ল্যাকক্যাপস ওপেনার। এরপর ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডেতে আবারও ডাবল সেঞ্চুরি করেন রোহিত। এবং সবশেষ ২০১৮ সালে অষ্টম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পান পাকিস্তানি ওপেনার ফখর জামান।

 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...