বিশ্বকাপ যখন দুয়ারে তখন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে। তামিম ইকবালের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বকাপে সবগুলো ম্যাচ তাঁর পক্ষে খেলা সম্ভব না। সাকিব এই বিষয়টা নিয়ে চরম বিরক্ত হয়েছেন। তিনি হাফ ফিট কোনো ক্রিকেটার নিয়ে যেতে চান না বিশ্বকাপে।
সোমবার গভীর রাতে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজের বাসভবনে সাকিবের সাথে বৈঠক করেন। ছুটি কাটিয়ে রাতেই দেশে ফেরা কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহেও সেই বৈঠকে যোগ দেন। সেখানে সাকিব সাফ জানিয়ে দেন, কোনো হাফ ফিট ক্রিকেটার নিয়ে তিনি বিশ্বকাপে যেতে চান না। প্রয়োজনে এর জন্য অধিনায়কত্বও ছেড়ে দিতে চান তিনি।
তামিম জানিয়েছেন, বিশ্বকাপ খেলতে তাঁর কোনে আপত্তি নেই। তবে, তাঁকে খেলাতে হবে তাঁর ফিটনেসের ঘাটতি মেনে নিয়েই। এমনটাও শোনা গেছে, তাঁর পক্ষে পাঁচ ম্যাচের বেশি খেলা সম্ভব না। যেখানে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বেই বাংলাদেশকে খেলতে হবে নয়টি ম্যাচ।
সর্বশেষ আফগানদের বিপক্ষে দেশের মাটিতে একটা ম্যাচ খেলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে ফেলেন তৎকালীন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তখন, তাঁর ফিটনেস ইস্যু থাকার পরও ম্যাচ খেলায় অসন্তোষ ছিল কোচ ও বোর্ড সভাপতির।
পরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অনুরোধে তামিমকে ফেরানো হয়। তবে, ফিটনেস ইস্যুতে মিস করেন এশিয়া কাপ। কোমড়ের ব্যাথার জন্য অস্ত্রোপচারে না যেয়ে ইনজেকশন নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তামিম, যেটা আসলে কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। এরপর তিনি ফিটনেস ফিরে পাওয়ার সংগ্রামে ছিলেন।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফিরে ৫৮ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন। সেই ম্যাচের পর নির্বাচকদের সাথে কথা হয় তামিমের। সেখানে তিনি নিজের ফিটনেসর সর্বশেষ অবস্থা জানান।
তামিম বিশ্বকাপে সবগুলো ম্যাচ না খেললে, বাংলাদেশের পক্ষে পরিকল্পনা সাজানোও কঠিন। বুধবার বিশ্বকাপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে বাংলাদেশ দল। অথচ, এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের দলই চূড়ান্ত করতে পারেননি নির্বাচকরা।
একটা সূত্র জানাচ্ছে, সাকিব অধিনায়কত্ব ছাড়তে চান। তবে, সেটা তামিম ইকবালের ফিটনেস জনিত ইস্যুতে নয়। তামিম নয়, কোনো হাফ ফিট ক্রিকেটারকেই বিশ্বকাপে চান না সাকিব। সাকিব এই শর্তেই বোর্ডের কাছ থেকে নেতৃত্বের দায়িত্বটা নিয়েছিলেন যে, তাঁর দলে কোনো ফিটনেসহীন বা আন্ডার-পারফরমার ক্রিকেটারের ঠাই হবে না।
আরেকটা ইস্যু আছে, মাহমুদুউল্লাহ রিয়াদকে নিয়েও। তিনি তিন সিরিজ পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফিরে ৪৯ রানের ইনিংস খেলেন। তবে, ফিটনেস ইস্যুতে তাঁকেও বিশ্বকাপে চান না সাকিব।
এখন অবস্থাটা এমন যে, বোর্ডকে হয় সাকিবের মন মত দল দিতে হবে, না হয় অন্য কাউকে অধিনায়ক করে দল সাজাতে হবে। সাকিব অধিনায়ক না থাকলে লিটন দাস কিংবা নাজমুল হোসেন শান্তকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে, সেটা কোনো ভাবেই আদর্শ কোনো পরিস্থিতি নয়।