সিনিয়র তামিমের বিশ্বকাপ দলে না থাকা নিয়ে সমালোচনা যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই যেন গোটা বাংলাদেশকে স্বস্তির ছোঁয়া দিলেন জুনিয়র তামিম। অভিষেকের পর থেকে ছন্দহীন তানজিদ তামিম ফিরলে একদম মোক্ষম সময়েই। গোহাটিতে তাঁর ব্যাটে চড়েই যে লঙ্কানদের বিপক্ষে জয়ের নিশানা খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশ।
গা গরমের ম্যাচ। ম্যাচের গুরুত্বটা আপাতত দৃষ্টিতে নগণ্য হলেও বিশ্বকাপের আগে ক্রিকেটারদের পরখ করার মঞ্চ তো ছিল এটিই। আর তাতে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি নিয়েই ছিল যত দুশ্চিন্তা। শেষ বছরে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিটন দাস এ বছর নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন। আর মাত্র ৪ ম্যাচের অভিজ্ঞতা নিয়ে বিশ্বকাপ দলে ডাক পাওয়া তানজিদ তামিমও ছিলেন অফফর্মের বৃত্তে।
তবে বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে এ দুই ব্যাটারই নিজের জাত চিনিয়েছেন দারুণ ভাবে। লিটন দাস ছন্দে ফিরেছেন। সাবলীল ব্যাটিংয়ে নজর কেড়েছেন তানজিদ হাসান তামিমও। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে পঞ্চাশ পূরণের পর হেঁটেছিলেন শতকের পথেও। তবে লাহিরু কুমারার করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে আসালাঙ্কার হাতে মিড অফে আসালাঙ্কার হাতে ক্যাচ দিয়ে ৮৪ রানেই থামতে হয়েছে তাঁকে।
সেঞ্চুরি পাননি। আউট হওয়ার পর হতাশ দৃষ্টি রাখতে রাখতেই এগিয়েছেন সাজঘরের পথে। তবে শ্রীলঙ্কার দেওয়া মাঝারি সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে শুরুতে যেমন আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই প্রয়োজন ছিল, সেটিই করে দেখিয়েছেন এ তরুণ ব্যাটার।
শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। কভার ড্রাইভ, স্ট্রেইট ড্রাইভ আর পুল শটে নিজের ইনিংস সমৃদ্ধির সাথে দলকেও টেনে নিয়েছেন দুরন্ত গতিতে। অথচ ১০ চার আর ২ ছক্কায় সাজানো এই ইনিংসের আগে জাতীয় দলে নিজের পায়ের তলার মাটিই শক্ত হয়নি তানজিদ তামিমের।
তামিম ইকবালের দলে না থাকা নিয়ে এমনিতে সমালোচনার স্রোত তো বইছিলই। তবে তাঁর পরিবর্তে দলে থাকায় তানজিদ তামিমের উপরে ভর করেছিল অসম এক চাপ। তবে গোহাটিতে এ দিন তামিমের ব্যাট দেখে যেন মনেই হয়নি, আনকোরা ক্রিকেটার হিসেবে তিনি কোনো চাপ অনুভব করছেন। পুরো ম্যাচেই রেখেছেন ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের ছাপ।
যার দরুনে ওপেনিং জুটি নিয়ে আপাতত কিছুটা নির্ভার থাকাই যায়। যদিও এক ম্যাচের বিবেচনায় কাউকে নিয়ে প্রত্যাশার অসীম সীমানা ডুবে যাওয়া উচিৎ নয়। তবে তামিম যেভাবে ব্যাটিং করলেন, তাতে নিশ্চিতভাবেই সম্ভাবনার দুয়ারে একটা টোকা দিয়ে রাখলেন।
জানান দিয়ে রাখলেন, বিশ্বকাপের বৈশ্বিক মঞ্চের জন্য তিনি প্রস্তুত। অবশ্য বৈশ্বিক মঞ্চের আবহে তামিমের নুয়ে পড়ার কথাও না। কারণ তিনি যে আগেই বিশ্বজয়ের স্বাদ পেয়েছেন। এক ঝাঁক উনিশের হাত ধরে বিশে বিশ্বজয়ীদের মধ্যে তিনিও যে ছিলেন একজন।