একাদশে একটা পরিবর্তন ছিল অনুমিত, অবধারিত। ইংল্যান্ডের মত তুখোড় ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে পাঁচজন বোলার নিয়ে খেলতে নামা হতো বোকামির শামিল। কোন কোন ক্ষেত্রে অপরাধ। ঠিক সে কারণেই অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহর পরিবর্তে শেখ মেহেদী সুযোগ পান একাদশে। ঘন কালো কুয়াশার মাঝে এক রত্তি সূর্যালোক।
বাংলাদেশি বোলারদের জন্যে একেবারেই একটি বাজে দিন কেটেছে। ইংল্যান্ডের ৯ উইকেট শিকার করা গেছে ঠিক। তবে রানের চাকা আটকে রাখা যায়নি। ৩৬৫ রানে পাহাড় মাথায় নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছে বাংলাদেশ। প্রতিটা বোলারই ছিলেন খরুচে। এর দায় যেমন বাংলাদেশি বোলারদের লাইন-লেন্থ, ঠিক তেমনি ভাবে কৃতীত্ব পাবে ইংলিশ ব্যাটারদের মান।
বাংলাদেশের বোলারদের রীতিমত হতাশায় ডুবিয়ে মেরেছেন ডেভিড মালান, জো রুটরা। তবে এতকিছু মাঝেও বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নামা শেখ মেহেদী নিজের কাজটি করে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন, যতটুকু সম্ভব। উইকেট নিয়েছেন চারটি। ভয়ংকর হয়ে ওঠা ডেভিড মালানকে ফিরেছেন বোল্ড আউট করে।
দিনশেষে মেহেদীর বোলিং ফিগার অন্তত তাঁর বিপক্ষেই কথা বলবে। সেটা বলাও স্বাভাবিক। ৮ ওভারে তিনি রান দিয়েছেন ৭১। তবে নিজের স্নায়ুচাপের পরীক্ষাটা তিনি দিয়েছেন মূলত শেষের দশ ওভারে যখন বল করেছেন। তৃতীয় পাওয়ার প্লে-তে স্পিনারদের বল হাতে বল তুলে দেওয়া খানিকটা ঝুঁকির। তবে সেই ঝুঁকি সাকিব নিয়েছেন। আর আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন শেখ মেহেদী।
বলের গতির তারতম্য ঘটিয়েছেন। কার্য্যকর সব ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে উইকেট বাগিয়েছেন। ৪৪-৪৯ ওভারের মধ্যে তিন খানা ওভার করেছেন শেখ মেহেদী। এই তিন ওভারে তার খরচ ২০ রান। প্রত্যেক ওভারেই একটি করে উইকেট গেছে তার পকেটে। শেষের দিকে সাধারণত ব্যাটাররা মারকুটে ভঙ্গিমায় থাকেন। তবে পুরো প্রথম ইনিংসে কেবল শেষ ওভারেই ইংল্যান্ডকে চেপে ধরতে পেরেছে বাংলাদেশের বোলাররা।
সেই কৃতীত্ব শেখ মেহেদীরও প্রাপ্য। ৫ ওভারে ৫১ রান দেওয়া একজন বোলার কি দূর্দান্তভাবেই কামব্যাক করেছেন। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডারে স্রেফ রিকি টপলি বাদে বাকি সবাই ব্যাট হাতে দারুণ। তারা প্রত্যেকেই রান করতে জানেন। দ্রুতই রান করতে জানেন।
এমন একটি ব্যাটিং অর্ডারের বিপক্ষে শেষের দিকে বল হাতে তুলে নেওয়া। প্রতি ওভারেই উইকেট বাগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি রান আটকে রাখা নি:সন্দেহে দারুণ বিষয়। শেখ মেহেদী বল হাতে নিজের কাজটি করবার চেষ্টা করেছেন। ৪০ তম ওভার শেষে তিন উইকেটে ২৯৮ রান করা ইংল্যান্ডকে থামতে হয়েছে ৩৬৪ রানে। শেষের দশ ওভারে বাংলাদেশী বোলাররা খরচ করেছেন স্রেফ ৬৬ রান।
অথচ এমন বিধ্বংসী ব্যাটিং আক্রমণের বিপক্ষে ছিটকে বহুদূরে পড়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। তবে গোটা বোলিং ইউনিট শেষ দিকে নিজেদের ছন্দ খুঁজে নিয়েছে। আর বেশ বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংও করেছে। শেখ মেহেদী সেই ছন্দের সাথেই তাল মিলিয়েছেন। নিজেও বেশ মাথা খাটিয়ে বোলিংটা করে গেছেন।