বিধ্বস্ত – দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের পরাজয়কে এক শব্দে প্রকাশ করতে চাইলে এটিই সেরা পছন্দ। টানা তিন হারের পর জয়ের খোঁজে থাকা টাইগারদের নিয়ে ছেলেখেলা করেছে প্রোটিয়ারা। ১৪৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে সাকিব, শান্তরা – মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ একক বীরত্ব না দেখালে সেই ব্যবধান আরো বাড়তে পারতো।
যে মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৯৯ রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা সেই মাঠে বাংলাদেশের সাথেও তান্ডব চালাবে দলটি, সেটা আগেই ধারণা করা গিয়েছিল। ঘটেছেও তাই, আগে ব্যাট করতে নেমে ৩৮২ রান জমা করেছে প্রোটিয়া ব্যাটাররা। অথচ শুরুতে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল টাইগার বোলাররা, পাওয়ার প্লেতেই রেজা হেন্ড্রিকস এবং রাসি ভ্যান ডার ডুসেনকে ফেরান শরিফুল, মিরাজরা।
তবে সব উদযাপন এখানেই শেষ, এরপর স্রেফ খড়কুটোর মতো ভেসে গিয়েছে সব প্রতিরোধ; বোলারদের লাইন লেন্থ সব যেন বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেলেছেন কুইন্টন ডি কক আর মার্করাম। এই দুইজনের ১৩১ রানের জুটিতেই ঝড় তোলার মঞ্চ তৈরি হয়েছিল। মার্করাম ৬০ রান করে ফিরলেও অতিমানব হয়ে উঠেছিলেন ডি কক; ১৪০ বলে ১৭৪ রানের এক দানবীয় ইনিংস খেলেছেন তিনি। ওপেনিংয়ে নেমে আউট হওয়ার আগেই দলের রান ৩০০ পার করিয়েছিলেন এই তারকা ব্যাটার।
অবশ্য ডেথ ওভারের পুরো লাইমলাইট নিজের দিকে টেনে নিয়েছেন হেনরিখ ক্ল্যাসেন, তাঁর ৪৯ বলে ৯০ রানের ক্যামিওর কারণেই প্রোটিয়ারা নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল – তাঁর এই ইনিংসে আটটি ছয়ের বিপরীতে চার আছে মাত্র দুইটি। কম যাননি ডেভিড মিলারও, শেষদিকে নেমে করেছেন ১৫ বলে ৩৪ রান।
কোন জবাব দেয়া তো দূরে থাক, দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটাররা উল্টো ড্রেসিংরুমে ফেরার প্রতিযোগিতা শুরু করেছিল। বরাবরের মত এদিনও ভাল শুরু পেয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম, কিন্তু ১২ রান করে ক্যাচ দেন উইকেটের পিছনে। পরের বলেই নাজমুল শান্তও একইভাবে ধরা পড়েন, চলতি বিশ্বকাপে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত ডাক মারলেন তিনি।
বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, প্রথমেই তিন উইকেট হারিয়ে খোলসে ঢুকে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে আর বেরিয়ে আসা সম্ভব হয়নি; অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম আট করেই ফিরেছেন চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে। চেষ্টা করেও লিটন দাস পারেননি বলার মত কিছু করতে, তাঁর অর্জন মোটে ২২ রান।
৫৮ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন ১০০ এর আগে অলআউট হওয়ার অপেক্ষায় ছিল তখন মান বাঁচিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। লোয়ার অর্ডারের সঙ্গে জুটি গড়ে দলের রান ২০০ পার করেছেন। সেই সাথে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। শেষপর্যন্ত ১১১ রানে আউট হন তিনি; এরপর আর বেশিদূর এগুনো যায়নি, ২৩৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।