১৫, ৩, ৩১, ০ – বিশ্বকাপের প্রথম চার ম্যাচে গ্লেন ম্যাক্সয়েলের রান; এর আগের দশ ইনিংসেও নেই কোন হাফসেঞ্চুরি। কোনভাবেই তাঁর সাথে যায় না এসব, নিজের পারফরম্যান্সে হয়তো মনে মনে তাই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তিনি। আর সেই ক্ষোভ ঝেড়েছেন নেদারল্যান্ডসের বোলারদের ওপর; স্রেফ তুলোধুনো করেছেন ডি লিড, ভ্যান বিকদের।
ছয় নম্বরে নেমে খেলেছেন ৪৪টি বল, আর তাতেই করেছেন ১০৬ রান। নয়টি চার আর আটটি বিশাল ছয়ে সাজানো এই ইনিংস দেখে ম্যাক্সওয়েলকে রূপকথার কোন নায়ক মনে হয়েছে; যে খোলা তরবারি হাতে একাই কচুকাটা করে শত্রুসেনাদের। ক্রিকেট মাঠে সেই তরবারি হয়ে উঠেছিল ব্যাট, আর শত্রু ভেবে প্রতিটা বলকে বাউন্ডারি ছাড়া করতে চেয়েছেন এই তারকা।
শুরুটা করেছিলেন টি-টোয়েন্টি স্টাইলে; ৪০.৪ বলে চার মেরে রানের খাতা খুলেছিলেন তিনি। এরপর স্রেফ ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী হয়েছিল, তাতেই ৪৭তম ওভারেই পূর্ণ করেন ব্যক্তিগত ফিফটি – তাও মাত্র ২৬ বলে।
অর্ধশতক তুলে নেয়ার পর রীতিমতো রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন এই ডানহাতি। এসময় শুধুই বাউন্ডারি হাঁকানোর দিকে মনোযোগ দেন তিনি; একের পর এক চার আর ছক্কা মেরে মাত্র ৪০ বলেই তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে ফেলেন এই তারকা। সেই সাথে বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডের মালিক বনে যান তিনি।
৫০ থেকে ১০০ তে যেতে অজি ব্যাটারের লেগেছে ১৪ বল। আর ৬১ করার পরের নয় বলেই করেছেন ৪০ রান – অর্থাৎ প্রতি বলে চার রানেও বেশি করে তুলেছেন এসময়। কি জানি, হয়তো হেনরিখ ক্ল্যাসেন, এইডেন মার্করামদের ফিনিশিংয়ে মুগ্ধ ক্রিকেট বিশ্বকে নিজের সামর্থ্যের কথা আরো একবার মনে করিয়ে দিতেই এত আয়োজন তাঁর।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বাইশ গজে এক ঘন্টাও থাকেননি, বলের হিসেবে দশ ওভারের কম কাটিয়েছেন মাঠেই। কিন্তু ডাচ শিবির ভেঙে গুড়িয়ে দিতে এটাই যথেষ্ট ছিল তাঁর জন্য। বিধ্বংসী এই ক্রিকেটার সম্ভবত নিজেকে ‘প্রো গেমার’ ভেবে বসেছিলেন, যার ব্যাটে বল লাগলেই আশ্রয় নেয় সীমানার বাইরে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অঘটনের জন্ম দেয়া স্কট এডওয়ার্ডসের দল অস্ট্রেলিয়াকেও ভড়কে দেয়ার পরিকল্পনা নিশ্চয়ই করেছিল, তবে তাঁদের সব পরিকল্পনা ‘ম্যাক্সি ঝড়’-এর আঘাতে হারিয়ে গিয়েছে সাগরের অতলে।