একেবারে প্রথম আইপিএলে বাজিমাত করেছিল রাজস্থান রয়্যালস। প্রথম আসরেই শিরোপা উৎসবে মেতেছিল ফ্রাঞ্চাইজিটি। এরপর কেটে গেছে একটা লম্বা সময়। সাফল্য এসে আর ধরা দেয়নি। তবে ষোড়শ আয়োজনে এসে যেন শিরোপা জয়ের দিকেই চোখ রাখছে ফ্রাঞ্চাইজিটি। অন্তত প্রথম ম্যাচে তেমনই এক আভাস দিয়ে গেল দলটির টপ অর্ডার।
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের ঘরের মাঠে ম্যাচ। প্রতিপক্ষ রাজস্থান। টসে হেরে রাজস্থানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় হায়দ্রাবাদ। ঠিক সেখানটায় হায়দ্রাবাদ যেন করে ফেলে ভীষণ বড় এক ভুল। বাংলা প্রবাদ অনুযায়ী, খাল কেটে কুমির আনা বলতে যা বোঝায় আরকি। রাজস্থানের টপ অর্ডারটা বেশ বৈচিত্রময়। একেবারে তরুণ ছোকড়া যশ্বসী জয়সওয়ালকে সঙ্গি করে ওপেনিংয়ে হাজির জস বাটলার।
একপাশে উদ্দ্যাম তারুণ্য তো আরেকদিকে অভিজ্ঞতার আধার। দুইয়ের মিশেলে রাজস্থানের শুরুটা হয় দূর্দান্ত। বাটলার জয়সওয়াল মেলবন্ধন হয়েছে জম্পেশ। দূর্বার গতিতে স্কোরবোর্ডে রান তুলেছে এই দুই ব্যাটার। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বোলার স্রেফ অবাক দৃষ্টিতে কূল-কিনারাহীন ভাবে বল করে যাচ্ছিলেন।
শুরু থেকেই আক্রমনাত্মক ব্যাটিংয়ের মানসিকতা। ফলাফলটা আসতে সময় বেশি লাগেনি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই লণ্ডভণ্ড হায়দ্রাবাদের বোলিং ইউনিট। কেননা দলের অন্যতম আস্থাভাজন বোলার ভুবনেশ্বরের কুমারকে অসহায় বানিয়ে ছাড়ে বাটলার-জসওয়াল জুটি। এক ওভারে ১৭ রান তুলে নেয় এই জুটি। সেখান থেকেই যেন রাজস্থানের রুদ্রমূর্তি ধারণ।
পরের ওভারে বাটলার ও জসওয়ালের বলি ওয়াশিংটন সুন্দর। সে ওভারে টানা দুই খানা ছক্কা হাকান জস বাটলার। স্কোরবোর্ড আরও ১৯ রান। সেখানেই থেমে যাওয়ার কোন আলোরশ্মির দেখা নেই। ক্রমশ অন্ধকারের দিকে ধাবমান সানরাইজার্সের বোলিং ইউনিট। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে থাঙ্গারাসু নাটরাজনকে টানা তিন চার সহ মোট চারটি বাউন্ডারি হাকান বাটলার।
পাঁচ ওভারে দলীয় ৭০ রানের কোটা পেরিয়ে যায় রাজস্থান। বাটলার তবুও থেমে যাওয়ার কোন সুর তোলেননি। বরং ৫.৫ ওভারে তিনি আউট হয়ে যাওয়ার আগ অবধি হাত খুলেই খেলে গেছেন। তুলে নিয়েছেন এবারের আসরে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। গেল আসরেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। সেই ধারা অব্যাহত রাখতে চাইছেন এবারও।
মাত্র ২২ বলে ৫৪ রান করে তিনি বিদায় নেন। তবে তাঁর সেই ইনিংস বাকি ব্যাটারদের সাহস দিয়ে যায়। জসওয়ালও বাটলারের পথ অনুসরণ করে তুলে নেন ফিফটি। ৩৭ বলে ৫৪ রান করেন তিনি। সেই ইনিংসে নয়টি চার এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। এই দুই ব্যাটারের গড়ে দেওয়া ভীতের উপর দাঁড়িয়ে অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসনও নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি দিয়ে।
টপ অর্ডারের ঝলমলে ব্যাটিংয়ের কল্যাণে ২০০ রানের গণ্ডি পেরোয় রাজস্থান। অন্যদিকে রাজস্থানের বোলাররা একটুও ছাড় দেয়নি প্রতিপক্ষে। তাতে ৭২ রানের বিশাল জয় দিয়েই নিজেদের যাত্রা শুরু করে রাজস্থান রয়্যালস।