দু’টো ছবির ফ্রেম হাতে দাঁড়িয়ে আছেন এক কিশোরি। উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডিটা এখনও পার করেননি বিবি আয়েশা সুমাইয়া। বাবা-মাকে শর্ত দিয়েছেন স্টেডিয়ামের নিয়ে আসার জন্যে। সাথে করে নিয়ে এসেছেন দুই প্রিয় তারকার নিজ হাতে আঁকা ছবি।
সেগুলো তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য়ে অপেক্ষা করেছেন অনেকটা সময়। ছুটে বেড়িয়েছেন এদিক ওদিক। অবশেষে তাদের হাতে সখের সেই ছবির ফ্রেমগুলো তুলে দেন আয়েশা। তাতে চোখের কোণায় খানিক জলও জমা হয়।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর তাওহীদ হৃদয়, বাংলাদেশ ক্রিকেটের একাল আর সেকাল। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের মিডল অর্ডারের এক সময়ের কাণ্ডারি ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আর ক্রমশ তার রেখে যাওয়া স্থান দখলের চেষ্টায় রয়েছেন হৃদয়।
এই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জায়গাতেই প্রথম জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন হৃদয়। তারপর থেকে তার দারুণ নৈপুণ্য মুগ্ধ করে চলেছে সবাইকেই। নিজের দৃঢ়তা, সক্ষমতা আর দারুণ দক্ষতায় মন জয় করে নিচ্ছেন হৃদয়। বেশ একটা সমৃদ্ধ ভক্তকূলও তৈরি হয়ে গেছে তার।
অন্যদিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ রীতিমত এক আবেগের নাম। বাংলাদেশ ক্রিকেটের কতশত স্মৃতিতে জড়িয়ে রয়েছেন রিয়াদ। তার হাত ধরে এসেছে ঐতিহাসিক সব জয়। তার ব্যাটেই এসেছিল বৈশ্বিক কোন আসরে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরি। তারও যে এক সুবিশাল ভক্তকূল রয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই দুই খেলোয়াড়ের যারা ভক্ত তাদের মধ্যে আয়েশাও একজন। বেশ পাগলাটে বললেও ভুল বলা হয় না। কেননা এই বছরের সকল সখ-আহ্লাদের জলাঞ্জলির বিনিময়ে তিনি এসেছেন মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বাবা-মা আর কাছে প্রতিজ্ঞাও করেছেন এটাই শেষবার। এরপর থেকে নিজের উপার্জিত অর্থে বাবা-মাকে সাথে নিয়েই আসবেন তিনি স্টেডিয়ামে।
সাভার থেকে আগত এই আয়েশা বলেন, ‘এবারই প্রথম এলাম। আম্মুকে বলছি এই প্রথম আপনাদের টাকায় যাচ্ছি, আর যাবো না। আর যদি কখনো যাই নিজে উপার্জন করে আপনাদেরকে সাথে নিয়ে যাবো।’
শুধু যে তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ছবির ফ্রেম তুলে দিয়েছেন তা নয়। তাদের সাথে কথোপকথোনের সুযোগও পেয়েছেন। হাসিমুখে রিয়াদ ও হৃদয় অটোগ্রাফও দিয়েছেন আয়েশাকে। তাতেই যেন খুশির সীমা নেই। এমনকি আসন্ন ইদে নতুন জামাও তিনি চাইবেন না পরিবারের কাছে। রিয়াদ আর হৃদয়ের সান্নিধ্য পাওয়াই যেন তার কাছে সমস্ত আনন্দের উৎস।