এই মুহূর্তে রঙিন পোশাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে কার্যকর ব্যাটসম্যানদের একজন আফিফ হোসেন। প্রথমে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট দিয়ে নিজেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরিচিত করেছেন। ধারবাহিকভাবে নিজেকে মেলে ধরেছেন। এখন ওয়ানডে ক্রিকেটেও নিজেকে চেনাচ্ছেন এই ব্যাটসম্যান।
গত এক বছরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারে পরিণত হয়েছেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। এরপর ওয়ানডে ফরম্যাটে সুযোগ পেয়ে সেখানেও নিজেকে মেলে ধরছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তাঁর সেই ৯৩ রানের অপরাজিত ইনিংস বাংলাদেশের ক্রিকেট মনে রাখবে অনেকদিন। মিরাজের সাথে কী অসাধারণ একটা জুটি গড়ে দলকে জয় এনে দিয়েছিলেন।
নিজেকে প্রমাণ করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কঠিন কন্ডিশনে, কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষেও। দ্বিতোয় ওয়ানডে ম্যাচে দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা যখন ব্যর্থ। তখন একাই লড়াই করে গিয়েছেন। দলের বিপর্যয়ের দিনেই যেন আফিফের সেরাটা পাওয়া যায়।
আসলে এখানেই আফিফের ম্যাজিক। তবে এই ম্যাজিকটা বাংলাদেশ দল বোধহয় ঠিক ধরতে পারছে না। বিপর্যয়ে আফিফ ভালো খেলেন কারণ সেদিন আফিফ বাইশ গজে নিজেকে চেনানোর সময় পায়। পুরো ক্যারিয়ারেই ব্যাটিং করেছেন টপ অর্ডারে। তবে আফিফের স্ট্রাইক রেট ভালো বলে তাঁকে বাংলাদেশ দল খেলাচ্ছে ৭ নাম্বার পজিশনে, স্লগার হিসেবে।
অথচ তিন নম্বরে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে যোগ্য কান্ডারি হতে পারেন আফিফ। সেটা ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুই ফরম্যাটেই। কেননা বাইশ গজে তাঁকে সময় দিলেই তিনি বড় ইনিংস খেলতে পারবেন, বাংলাদেশও আফিফের পুরোটা পাবে। আফিফ তাঁর ক্যারিয়ার জুড়েই প্রমাণ করে চলেছেন তিনি বড় ইনিংস খেলতে পারেন। তবে আফিফকে স্লগার বানিয়ে তাঁর বড় ইনিংস গুলো আমরা মিস করছি।
এমনকি ডিপিএলে আবাহনীর হয়েও এবার প্রথম দিকে খেলেছেন ছয় নাম্বারে। পরে অবশ্য তাঁকে প্রমোশন দিয়ে পাঁচে নামানো হয়। ফলে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগেও খুব একটা সময় পাচ্ছেন না ব্যাট করার। তবুও যতটুকু করার ছিল তাঁর পুরোটাই করেছেন আফিফ।
শেষ দিকে নেমেও ভালো কিছু ইনিংস খেলেছেন। তবে যেই সাতটি ইনিংস খেলেছেন তাঁর তিনটিতেই ছিলেন অপরাজিত। সময় পেলে কিংবা টপ অর্ডারে নামালে এই ইনিংসগুলো নিশ্চয়ই আরো বড় হতে পারতো। তবুও মোহামেডানের বিপক্ষে ৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন। গাজী গ্রুপের বিপক্ষে ৫০ রান করেছেন।
ঢাকার উইকেটে অন্য ব্যাটসম্যানরা যখন রান করতে হিমসিম খায় সেখানে আফিফ কী ভীষণ সাবলীল। লো স্কোরিং ম্যাচেও প্রায় ১০০ ছুঁই ছুঁই স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করে যাচ্ছেন। আর এই ভালো স্ট্রাইক রেট দেখেই তাঁকে বাংলাদেশের ক্রিকেট স্লগার বলে ধরে নিল। আফিফের এই স্ট্রাইক রেটই কী তবে কাল হলো?