আড়ালে থাকা আগ্রাসন

ব্যাট হাতে ত্রিপাঠির আগ্রাসী রূপটা সবারই জানা। বাউন্ডারি হাঁকাতেই বেশি পছন্দ করেন তিনি। ইনিংসের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের উপর চড়াও হয়ে ব্যাটিং করেন। হিটিং অ্যাবিলিটিও দুর্দান্ত। অনায়াসে বলকে বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেলতে পারেন তিনি।

জাতীয় দলে এখনো জায়গা মেলেনি কিন্তু ধারাবাহিকভাবেই আইপিএলে পারফরম করছেন এমন একজন হলেন রাহুল ত্রিপাঠি। তাঁকে নিয়ে আলোচনা কিংবা মাতামাতি হয় না বললেই চলে। তবে প্রতি আসরেই নিরবে তিনি সেরাটা দিয়ে যাচ্ছেন। ব্যতিক্রম নয় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) এবারের আসরটাও। ব্যাট হাতে প্রায় প্রতি ম্যাচেই খেলছেন ঝড়ো ইনিংস। জাতীয় দলে অভিষেক না হওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটাও নিজের দখলে রেখেছেন ত্রিপাঠি।

ব্যাট হাতে ত্রিপাঠির আগ্রাসী রূপটা সবারই জানা। বাউন্ডারি হাঁকাতেই বেশি পছন্দ করেন তিনি। ইনিংসের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের উপর চড়াও হয়ে ব্যাটিং করেন। হিটিং অ্যাবিলিটিও দুর্দান্ত। অনায়াসে বলকে বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেলতে পারেন তিনি। তবে এখন অবধি লাইমলাইটে আসতে পারেননি তিনি।

গেল রাতে ত্রিপাঠির বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের সামনে পাত্তাই পায়নি কলকাতা নাইট রাইডার্স। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে ৩৭ বলে ৬ ছক্কা ও ৪ চারে ৭১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন ত্রিপাঠি। কলকাতা নাইট রাইডার্সের দেওয়া ১৭৬ রানের লক্ষ্যামাত্রা তাড়া করতে নেমে ৩৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে হায়দ্রাবাদ। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে ত্রিপাঠি ও এইডেন মার্করামের ৯৪ রানের অনবদ্য এক জুটিতে জয়ের ভিত পায় হায়দ্রাবাদ। ৫৪ বলে ৯৪ রানের তাণ্ডবময় জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার।

৩৭ বলে ৭৬ রানে ত্রিপাঠি ফিরলেও মার্করামের ৩৬ বলে ৪ ছক্কা ও ৬ চারে অপরাজিত ৬৮ রানে ৭ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় হায়দ্রাবাদ। গেল আসরে খেলা নিজ দল কলকাতার বিপক্ষেই ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন ত্রিপাঠি। মাত্র ২১ বলে ফিফটি করে এবারের আসরে দ্রুততম ফিফটিতে লিয়াম লিভিংস্টোনের সাথে যৌথভাবে দ্বিতীয়তে আছেন এই আগ্রাসী তারকা।

চলতি আসরের শুরুটা ভাল হয়নি ত্রিপাঠির। রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন তিনি। তবে পরের চার ম্যাচে মারকুটে ত্রিপাঠির দেখাই মিলেছে। লখনৌ সুপার জায়েন্টসের বিপক্ষে খেলেন ৩০ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো এক ইনিংস। এরপর নিজের তৃতীয় ম্যাচে করেন ১৫ বলে ৩৯ রান! গুজরাটের বিপক্ষে ১১ বলে ১৭ রানের পর গেল রাতে কলকাতার বিপক্ষে খেললেন ৩৭ বলে ৭১ রানের দৃষ্টিনন্দন এক ইনিংস।

আইপিএল ইতিহাসে জাতীয় দলে অভিষেক না হওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের মালিক তিনি। এখন পর্যন্ত ৬৫ ম্যাচে করেছেন ১৪৯৫ রান। এই তালিকার দুইয়ে থাকা মানান বহরা ৪৯ ম্যাচে করেছেন ১০৫৪ রান।

ব্যাট হাতে বরাবরই তিনি আগ্রাসী একজন। এই ৬৫ ম্যাচে ত্রিপাঠির স্ট্রাইক রেট ১৪০ প্রায়! গড়টাও বেশ ভাল। প্রায় ২৮ গড়ে আইপিএলে রান করেছেন তিনি। চলতি আসরে ৫ ম্যাচে ৫৭ গড়ে করেছেন ১৭১ রান, স্ট্রাইক রেট ১৭৮।

গেল আসরে কলকাতার হয়ে ১৭ ম্যাচে ২৮ গড়ে করেছিলেন ৩৯৭ রান। স্ট্রাইক রেট ১৪০। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ব্যাট হাতে ঝড় তোলাটা ত্রিপাঠির জন্য নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। যদিও ইনিংস বড় করতে না পারার কারণে অনেকটাই আড়ালে থেকে যান এই ব্যাটার। তবে তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিং যেকোনো দিন প্রতিপক্ষকে একাই গুড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। মারাকাটারি ব্যাটিং দিয়ে এবারের আসরেও নজর কাঁড়েন তিনি।

আইপিএলে গেল ৬ আসর ধরে অনেকটাই নিয়মিত মুখ হলেও জাতীয় দলের দরজায় এখনও কড়া নাড়তে পারেননি ত্রিপাঠি। প্রতি আসরেই নজরকাঁড়া স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেন। টি-টোয়েন্টিতে যেকোনো দলের জন্য টপ অর্ডার কিংবা ফিনিশার হিসেবে হতে পারেন অন্যতম সেরা পছন্দ।

বয়সটা ৩১। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জাতীয় দলে খেলার মত সামর্থ্য ত্রিপাঠির আছে সেটি তিনি প্রতি আসরেই প্রমাণ করছেন। এখন দেখার বিষয় এবারের আসর শেষে নির্বাচকদের নজরে আসতে পারেন কিনা আড়ালে থাকা এই আগ্রাসন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...