প্রিয় তারকাদের নিয়ে একাদশ তৈরি করা এমনিতেই রোমাঞ্চের, আর একাদশটা যদি হয় আইপিএলের কিংবদন্তিদের তাহলে তো কথাই নেই। রোমাঞ্চকর কাজটা করার চেষ্টা করেছে খেলা ৭১।
- রোহিত শর্মা (৬৬২৮ রান, ২৯.৭২ গড়, ১৩১ স্ট্রাইক রেট)
ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন, এর মধ্যে পাঁচবার অধিনায়ক হিসেবে – আইপিএলের সফলতম মানুষকে একাদশে রাখতে আর কোন ব্যাখ্যা লাগে না। রোহিত শর্মা আছেন মানেই পাওয়ার প্লেতে চার-ছক্কার মার; এখন তো বড় ইনিংসের চেয়ে ইম্প্যাক্টফুল ইনিংসে মনোযোগ তাঁর। উড়ন্ত শুরুর জন্য তাই রোহিতের চেয়ে ভাল কোন অপশন নেই।
- ক্রিস গেইল (৪৯৬৫ রান, ৩৯.৭২ গড়, ১৪৯ স্ট্রাইক রেট)
আরেক ওপেনার হিসেবে থাকছেন ইউনিভার্সাল বস ক্রিস গেইল। পাওয়ার হিটিং তো আছেই, তবে তাঁর কাছে প্রত্যাশা থাকে অতিমানবীয় ইনিংসের – পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ১৭৫ রানের মহাকাব্য তো এখনো ভোলা যায়নি। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি গেইলের অফ স্পিন কার্যকরী হবে কাল্পনিক এ একাদশের জন্য।
- বিরাট কোহলি (৮০০৪ রান, ৩৮.৬৬ গড়, ১৩২ স্ট্রাইক রেট)
নামটা অবধারিত, তিন নম্বরে আপনি বাধ্য বিরাট কোহলিকে রাখার জন্য। তাঁর ধারাবাহিক পারফরম্যান্স আসলে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে তাঁকে। ২০১৬ আসরে ৯৭৩ রান করেছিলেন তিনি, যা আজও রেকর্ড হয়ে আছে।
- এবি ডি ভিলিয়ার্স (৫১৬২ রান, ৩৯.৭০ গড়, ১৫১.৬৮ স্ট্রাইক রেট)
পরিসংখ্যানের দিকে তাকানোর দরকার নেই, এবি ডি ভিলিয়ার্স কেন একাদশে জায়গা পাবেন সেই উত্তর খুঁজে পাবেন স্মৃতির পাতায়। ডেল স্টেইনের ঘন্টায় ১৫০ কিমি বেগে ছোঁড়া বলটা কি অবলীলায় স্কুপ করে বাউন্ডারিতে পাঠিয়েছিলেন তিনি। আর এমন অবিশ্বাস্য সব শট তো প্রায় প্রতি ম্যাচেই দেখা যেতে, সেই সাথে ফিল্ডিংয়ের কারুকার্য তো আছেই।
- সুরেশ রায়না (৫৫২৮ রান, ৩২.৫১ গড়, ১৩৬.৭০ স্ট্রাইক রেট)
মি.আইপিএল না থাকলে তো আইপিএলের একাদশই হবে না। ২০১০, ২০১১ এবং ২০১৮ সালে চেন্নাইয়ের শিরোপা জয়ের অন্যতম কারণ ছিলেন তিনি। এই বাঁ-হাতি অ্যাঙ্করিং করতে পারেন, বিধ্বংসীও হতে পারেন; বোলিং করতে পারেন আবার ফিল্ডিংয়ে অসম্ভব ক্ষীপ্র। এতটা ভার্সেটাইল ক্রিকেটার ইতিহাসেই কম রয়েছে।
- এমএস ধোনি (৫২৪৩ রান, ৩৯.১২ গড়, ১৩৭.৫০ স্ট্রাইক রেট) – অধিনায়ক, উইকেটরক্ষক
মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্যই চেন্নাই সুপার কিংস কখনো অ্যাওয়ে ম্যাচের উত্তাপ টের পায় না। ভারতের প্রতিটা কোনায় তাঁর সমর্থক রয়েছে; থাকারই কথা, আইপিএল এবং জাতীয় দলের হয়ে যা অর্জন করেছেন তিনি সেটা বলে শেষ করা যাবে না। ধোনি মাঠে ঢুকছেন এটাই আজকাল আইপিএলের সেরা দৃশ্য।
- কাইরন পোলার্ড (৩৪১২ রান, ১৪৭.৩২ স্ট্রাইক রেট, ৬৯ উইকেট)
২০১০ সালে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে নাম লেখানোর পর একেবারে ঘরের ছেলে বনে গিয়েছিলেন কাইরন পোলার্ড। অতিমানবীয় ক্যামিও, দুর্ধর্ষ ক্যাচ আর হাস্যকর সব কাজের কারণে তাঁকে মনে রাখবে আইপিএল প্রেমীরা।
- লাসিথ মালিঙ্গা (১৭০ উইকেট, ১৯.৮০ গড়, ৭.১৪ ইকোনমি)
উইকেট লাগবে? রান আটকানো লাগবে? যখন যেটা প্রয়োজন লাসিথ মালিঙ্গা অধিনায়কের সেই প্রয়োজন পূরণ করেছিলেন। বয়সের সাথে সাথে গতি কমে আসলেও ভ্যারিয়েশনের সুবাদে নিজেকে আরো অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছিলেন তিনি। ২০১৯ ফাইনালের শেষ ওভারটা সেটারই প্রমাণ।
- জাসপ্রিত বুমরাহ (১৬৫ উইকেট, ২২.৫১ গড়, ৭.৩০ ইকোনমি)
লাসিথ মালিঙ্গার চার ওভার, জাসপ্রিত বুমরাহর ওভার – একটা সময় প্রতিপক্ষ এই আট ওভার বাদ দিয়েই রান করার পরিকল্পনা করতো। এরপর তো বুমরাহ আরো ক্ষুরধার হয়েছেন। সবধরনের অস্ত্র আছে তাঁর ভান্ডারে, বুমরাহর চার ওভার তাই দলের জন্য মহামূল্যবান।
- ভুবনেশ্বর কুমার (১৮১ উইকেট, ৭.৫৬ ইকোনমি)
নতুন বলের রাজা বলা যায় ভুবনেশ্বর কুমারকে, পাওয়ার প্লেতে যেখানে ব্যাটাররা রান করার চিন্তায় থাকেন সেখানে তিনি তাঁদের উইকেট বাঁচানোর চিন্তা করতে বাধ্য করেন। পরপর দুই আসরে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী বোলার হওয়ার রেকর্ড আছে তাঁর।
- যুজবেন্দ্র চাহাল (২০৫ উইকেট, ২২.৪৫ গড়, ৭.৮৪ ইকোনমি)
যুজবেন্দ্র চাহাল আক্রমণে আসলে উইকেট পড়বেই – এটা বোধহয় আইপিএলের অলিখিত নিয়ম। কবজির মোচড়ে তিনি কতবার ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন তাঁর ইয়াত্তা নেই, টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলার তো আর এমনি এমনি হননি।
- রবীন্দ্র জাদেজা (২৯৫৯ রান, ১৬০ উইকেট)
‘রকস্টার থেকে স্যার’ রবীন্দ্র জাদেজা অনেকটা পথ পাড়ি দিয়েছেন। চেন্নাইয়ের স্পিন বান্ধব উইকেটে তাঁর বোলিং প্রতিপক্ষের জন্য স্রেফ আতঙ্ক, আবার প্রয়োজন হলে ব্যাট হাতেও ম্যাচ উইনার হয়ে যান তিনি। ২০২৩ ফাইনালে দুই বলে দশ রানের সমীকরণ তো জাদেজাই সমাধান করেছিলেন।