ফাইনালের আগেই ঘোষণাটা দিয়ে রেখেছিলেন। ফাইনাল জিতে যখন আইপিএল ক্যারিয়ারটা শেষ করলেন তখন নিশ্চিতভাবেই একটা তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছেন আম্বাতি রাইডু। ভারত জাতীয় দলে নিজের ক্যারিয়ারটা খুব বেশি রঙিন করতে না পারলেও আইপিএলে রাইডু বেশ সফল।
রাইডুর নামের পাশে ছয়টি শিরোপা সেই সাক্ষ্যই দেবে। কিন্তু ভারতের জার্সিতে নিজেকে রাঙাতে পারেননি কিংবা রাঙানোর সুযোগটা পাননি রাইডু।
ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি খেলেছেন ওয়ানডে ফরমেটে। এই ফরমেটে ৫৫ ম্যাচে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। সুযোগ পেয়ে যে খুব একটা খারাপ করেছিলেন রাইডু তেমনটাও নয়। ২০১৯ বিশ্বকাপের আগের সময়টায় একটানা চার নম্বর পজিশনে খেলছিলেন রাইডু।
২০১৮ আইপিএলে দারুণ পারফর্ম করার পর জাতীয় দলের হয়েও টেনে এনেছিলেন সেই ফর্ম। ছয় মাসের মধ্যে ২১ টি ওয়ানডে খেলেন রাইডু।
সেই ২১ ওয়ানডেতে ৬৩৯ রানও করেন এক সেঞ্চুরি ও চার ফিফটির সাথে। চার নম্বরে দীর্ঘদিন সার্ভিস দেবার জন্য যেমন একজন ব্যাটার খুঁজছিলো ভারত রাইডু যেন হাজির হন সেই পজিশনের সমাধান হয়ে৷
বিশ্বকাপের আগের সময়টায় টানা খেলে যাওয়া রাইডু যে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকছেন তা নিয়ে সংশয় ছিলো না তেমন কারোই।কিন্তু, আশ্চর্যজনক ভাবে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ঠাই হলো না রাইডুর।
সেই পজিশনের জন্য বিবেচনা করা হলো ওপেনার লোকেশ রাহুল ও পেস বোলিং অলরাউন্ডার বিজয় শংকরকে। এই পজিশনের জন্য দুজনের কারোই ছিলো না পর্যাপ্ত ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা।
চার বছর আগের সেই ঘটনার জন্য কোচ রবী শাস্ত্রী ও তৎকালীন অধিনায়ক বিরাট কোহলিকেই কাঠগড়ায় দাড় করালেন ভারতের সাবেক স্পিনার ও কোচ অনীল কুম্বলে।
কুম্বলে মনে করেন রবী শাস্ত্রী ও বিরাট কোহলির পক্ষ থেকে এটি ছিলো একটি বিরাট ভুল সিদ্ধান্ত। কুম্বলে বলেন, ‘রাইডুর ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলা উচিত ছিলো। এটা একটা বিরাট ভুল ছিলো। তাকে অনেক দিন ধরে এই ভূমিকার জন্য প্রস্তুত করা হলো এবং তাঁর নামই স্কোয়াডে রাখা হলো না। এটা অবশ্যই অনেক আশ্চর্যজনক ছিলো।’
দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নভঙ্গ হওয়াটা তখন মেনে নিতে পারেননি রাইডুও। রাইডুর বদল তখন স্কোয়াডে ঢোকা বিজয় শংকরকে দলের নেবার যৌক্তিকতা বোঝাতে তখনকার নির্বাচক এমএসকে প্রাসাদ বলেছিলেন, বিজয় একজন থ্রিডি খেলোয়াড়।
এই কথার পরই টুইটারে প্রাসাদকে খোঁচা দেন রাইডু। টুইটারে রাইডু লেখেন, ‘বিশ্বকাপ দেখার জন্য একটি থ্রিডি সানগ্লাস অর্ডার করেছি।’
এরপর বিশ্বকাপ চলার মাঝপথেই ভারতের জার্সি তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নেন রাইডু। ঘোষণা দেন অবসরের। এরপর আর কখনোই জাতীয় দলে ফেরেননি তিনি। ২০১৯ বিশ্বকাপে রাইডুর বাদ পড়াটা এখনো একটা রহস্য ভারতীয় ক্রিকেটে।