দেশের ক্রিকেটের ‘পোস্টার বয়’ ছিলেন এক সময়। কিন্তু, স্পট ফিক্সিংয়ের বেড়াজালে ক্যারিয়ারটা শেষ হয়ে যায় আগেভাগেই। একটা সময় যাকে ক্রিকেট বিশ্বেরই অন্যতম প্রতিভাবান ক্রিকেটার ভাবা হত, সেই মোহাম্মদ আশরাফুল আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় নিজের ক্যারিয়ারের বড় একটা সময় মাঠেই নামতে পারেননি।
সময়টা কঠিন ছিল আশরাফুলের জন্য। সর্বকণিষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করা আশরাফুল ভেবেছিলেন আত্মহত্যার কথাও। দেশের শীর্ষস্থানীয় এক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তেমনটাই বলেছেন সাবেক এই অধিনায়ক।
তিনি বলেন, ‘ক্যারিয়ারের অনেক উত্থান-পতন আমার দেখা। আমি নিজেকে সব সময় একজন ইতিবাচক মানুষ ভাবি। আমার জীবনে যে ঘটনা ঘটেছে, ইতিবাচক মানসিকতা না থাকলে সেখান থেকে ফিরে আসা সহজ হতো না। একটা পর্যায়ে তো মনে হয়েছিল আত্মহত্যা করি। ইতিবাচক চিন্তা করেই সে অবস্থা থেকে ফিরে এসেছি।’
হ্যাঁ, ইতিবাচক ছিলেন বলেই আবারও ক্রিকেটে ফিরতে পেরেছিলেন আশরাফুল। ক্যারিয়ারের শেষ লগ্নে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরে পারফরমও করেছিলেন। কিন্তু, সেটা জাতীয় দলে ফেরার জন্য যথেষ্ট হয়নি। ফিক্সিংয়ে জড়ানোটাকে এখন ক্রিকেটের অংশই মেনে নিয়েছেন তিনি।
বললেলন, ‘আশা করি কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। পড়লে ইতিবাচক প্রভাবই পড়ার কথা। কারণ সেই ঘটনাও ক্রিকেটেরই অংশ।’
আশরাফুলের স্বপ্ন ছিল আর একটা বার অন্তত জাতীয় দলের জার্সি পরা। সেটা সম্ভব হয়নি। আট বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা আশরাফুল নিজের হারানো দিনের ধারটাও হারিয়ে ফেলেছেন অনেকটাই।
তাই তাঁর ঘরোয়া ক্রিকেট ক্যারিয়ারও শেষের পথে। চলতি বছরে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ দিয়ে ইতি টেনেছেন লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের। আগামী বছর খেলবেন জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল)।
তবে, ক্রিকেটের সাথেই থাকতে চান ‘আশার ফুল’ খ্যাত আশরাফুল। তিনি কোচ হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি থেকে আইসিসি ও আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের আয়োজনে লেভেল-৩ কোচিং কোর্স করে দেশে ফিরেছেন সম্প্রতি।
ব্যাট-প্যাড তুলে রেখে এখন কোচিংয়েই ঝুঁকবেন তিনি। দেখা যাক, খেলোয়াড়ী জীবনের আক্ষেপটা এখন কোচ হয়ে মেটাতে তিনি আদৌ পারেন কি না।