পাকিস্তানের জায়গায় এশিয়া কাপে আরব আমিরাত

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) ভেতরের খবর হচ্ছে নিজেদের দেশে না হলে এশিয়া কাপ খেলবে না বাবর আজমের দল। আর পাকিস্তান না খেললে তাঁদের জায়গায় এশিয়া কাপে দেখা যাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে।

এশিয়া কাপ নিয়ে দীর্ঘদিনের চলমান ধোঁয়াশা অবশেষে কাটতে শুরু করেছে। শেষ খবর বলছে, খুব শীঘ্রই মাঠে গড়াতে পারে এশিয়ান ক্রিকেটের সর্বোচ্চ এ আসর। তবে এশিয়া কাপ নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘসূত্রিতা এখনই কাটছে না। উল্টো দুই দেশের চলমান কূটনৈতিক বৈরীতা এখন রূপ নিতে পারে ক্রিকেটীয় দ্বন্দ্বেও।

মূলত, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ইন্ধনেই পাকিস্তানকে এবারের এশিয়া কাপ আয়োজনে আয়োজক দেশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের আসন্ন এশিয়া কাপ বয়কট করার সম্ভবনা প্রবল। ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া জানাচ্ছে, ‘আসন্ন এশিয়া কাপে অংশ নাও নিতে পারে পাকিস্তান।’

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) ভেতরের খবর হচ্ছে নিজেদের দেশে না হলে এশিয়া কাপ খেলবে না বাবর আজমের দল। আর পাকিস্তান না খেললে তাঁদের জায়গায় এশিয়া কাপে দেখা যাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে।

বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ্‌ এই কিছুদিন আগেই পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেল নিয়ে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে তাঁরা বলেন, পাকিস্তানের এই প্রস্তাবিত মডেলে ভারত এশিয়া কাপ খেলবে না। তাদের দাবি, যে কোনো এক ভেন্যুতে হতে হবে এশিয়া কাপ। আর সেই ভেন্যুটা আর যাই হোক পাকিস্তান নয়।

আর এরপরেই শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপ হওয়ার ব্যাপারে একটা গুঞ্জন ওঠে। যেটা এখন গুঞ্জন ছাপিয়ে সত্যই হতে যাচ্ছে। পাকিস্তান থেকে সরিয়ে শ্রীলঙ্কায় যে এশিয়া কাপ হতে যাচ্ছে, সেটি এরই মধ্যে অবগত করা হয়েছে পিসিবি। এশিয়া কাপের ভেন্যু হিসেবে শ্রীলঙ্কার নামটাই প্রকট এখন।

এর আগে পিসিবির চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি এক প্রকার হুমকি দিয়েই বলেছিলেন, পাকিস্তান থেকে এশিয়া কাপ সরিয়ে নেওয়া হলে তাঁরা এসিসি থেকেই সরে যাবে। একই সাথে ভারতের মাটিতে আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপেও তাঁরা অংশগ্রহণ করবে না।

অবশ্য এসিসির কার্যনির্বাহীর এমন সিদ্ধান্তের পর এখনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি পিসিবি থেকে। তবে, এটা মোটামুটি নিশ্চিত যে ভারতের আধিপত্তে তবে ধারণা করা হচ্ছে, শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপ হলে উক্ত টুর্নামেন্টে অংশই নিবে না পাকিস্তান।

সে হিসেবে আসন্ন এশিয়া কাপে পাকিস্তানের অনুপস্থিতিতে যুক্ত হতে পারে নতুন কোনো দল। সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে এরই মধ্যে এশিয়া কাপে যুক্ত হয়েছে নেপালের নাম। চলতি বছর এসিসি প্রিমিয়ার কাপের ফাইনালে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে এশিয়া কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নেপাল।

এখন পাকিস্তান যদি এশিয়া কাপে আদৌ অংশ না নেয় তাহলে রানার আপ হিসেবে আরব আমিরাতের এশিয়া কাপে অংশ নেওয়া প্রায় নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে গ্রুপ ‘এ’র লড়াইটা ভারতের জন্য স্রেফ নিয়ম রক্ষার লড়াই হয়েই থাকবে।

এ দিকে গত মঙ্গলবার দুই দিনের সফরে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন আইসিসির সভাপতি গ্রেগ বার্কলে আর প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালারডাইজ। সেখানে মূলত পাকিস্তানের বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া, না নেওয়া নিয়ে আলোচনা হয়।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম ‘দ্য নিউজ’ জানিয়েছে, পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি স্পষ্ট ভাষায় আইসিসির সভাপতিকে জানিয়ে দিয়েছেন,পাকিস্তান সরকার যদি অনুমতি দেয়, তবেই জাতীয় ক্রিকেট দল অক্টোবরে ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপে অংশ নেবে। অন্যথায় ভারতে তাঁরা বিশ্বকাপ খেলবে না।

প্রসঙ্গত, আগামী সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানে এশিয়া কাপ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড তাতে প্রথমেই বেঁকে বসে। পাকিস্তানে খেলতে না যাওয়ার কারণ হিসেবে ভারত তখন তাদের সরকারের সাথে পাকিস্তানের কূটনৈতিক বৈরিতার কথা টেনে এনেছিল।

এমতাবস্থায়, পাকিস্তান এখন পাল্টা যুক্তিতে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার ব্যাপারে সেই সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিই টেনে আনছে। শেষ পর্যন্ত, এ দুই ক্রিকেট রাষ্ট্রের বিরোধিতার সুর কতদূর গড়ায় সেটিই এখন দেখার বিষয়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...