ধোনি পেরেছে বলে কোহলি, রোহিত পারবে এমনটা নয়

ছয় বছরে তিনটি আন্তর্জাতিক ট্রফি। তিন ফরমেটের ক্রিকেটেই শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ছিলো ভারতীয় মাথায়। সেই ভারতই কিনা প্রায় এক যুগ ধরে ভুলেই গেছে আইসিসি ট্রফি জয়ের স্বাদ। র‍্যাংকিংয়ে প্রায়শই শীর্ষে থাকলেও ২০১৩ সালে ধোনির নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতার পর আর কোনো শিরোপার স্বাদ পায়নি টিম ইন্ডিয়া।

ধোনির উত্তরসূরী হিসেবে ভারতকে দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দেয়া কোহলি বা এরপর রোহিতও ব্যর্থ ভারতকে ট্রফি জেতাতে। তাই ভারতের অধিনায়কদের সমালোচনাও কম হয় না। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত দায়িত্ব পেয়েই ভারতকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতান মাহেন্দ্র সিং ধোনি।

এরপর ২০১১ সালে ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটানও সেই ধোনি। এর দুই বছর বাদেই ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শিরোপা জেতে ধোনির ভারত। ধোনির নেতৃত্বে টেস্টের সেরা দলের ব্যাটনও ছিলো ভারতের কাছে। এমন দুর্দান্ত সময় কাটানোর পর গত ১০ বছর ধরে ভারতে চলছে ট্রফি খড়া।

এরপর প্রায় প্রতিটি টুর্নামেন্টে সেমিফাইনাল বা ফাইনালে খেললেও ট্রফি জেতা হয়নি ভারতের। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয় ভারতের। এরপর ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কাছে হারে তারা। প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও নিউজিল্যান্ডের কাছে হারতে হয় ভারতকে।

এছাড়াও ২০১৫ এবং ২০১৯ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়ে ভারত। ২০১৬ আর ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ভারতের যাত্রা থামে শেষ চারে। তবে সবচেয়ে হতাশাজনক ছিলো ভারতের ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স। আয়োজক হয়েও সেখানে সুপার টুয়েলভেই শেষ করতে হয়েছিলো ভারতের বিশ্বকাপ যাত্রা।

এক দশক ধরে ভারতের পারফরম্যান্স খুব খারাপ এমনটা বলা যাবে না। কিন্তু আইসিসি ট্রফি জিততে না পারায় ধোনির পরবর্তী সময়ে ভারতকে নেতৃত্ব দেয়া কোহলি বা রোহিতকে নিয়ে সলোচনা হয় ঢের। কিন্তু এই সমালোচনায় দুই সতীর্থের ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন ভারতের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

ভারতের হয়ে লাল বলের ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী অশ্বিন মনে করেন, আইসিস টুর্নামেন্টই কোনো খেলোয়াড়কে বিচার করার একমাত্র মানদন্ড হতে পারে না। যদি এটি মানদন্ড হয়েও থাকে তবে সেই খেলোয়াড়কে আরো সময় দেয়া উচিত।

এক্ষেত্রে সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটার শচিন টেন্ডুলকারের উদাহরণ টেনে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে অশ্বিন বলেন, ‘এটি বলা খুব সহজ যে তারা ট্রফি জিততে পারেনি। ১৯৮৩ বিশ্বকাপের পর শচিন ১৯৯২,১৯৯৬,১৯৯৯,২০০৩,২০০৭ বিশ্বকাপে খেলেছে। অবশেষে সে ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জিতেছে। বিশ্বকাপ জেতার জন্য তাকে ছয়টি বিশ্বকাপ ধরে অপেক্ষা করতে হয়েছে।’

ধোনির সাথে বর্তমান অধিনায়কদের তুলনা নিয়ে অশ্বিন বলেন, ‘শুধুমাত্র আরেক কিংবদন্তি ধোনি দায়িত্ব নেবার সাথে সাথেই বিশ্বকাপ জিতেছে বলে এই নয় যে সবার ক্ষেত্রেই তাই হবে।’

কোহলি আর রোহিতের সমালোচনাকারীদের একহাত নিয়ে অশ্বিন বলেন, ‘তারা ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে খেলেনি। রোহিত ২০১১ সালেও খেলেনি। শুধুমাত্র কোহলি ২০১১,২০১৫ আর ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলেছে এবং ২০২৩ সালে সে তার চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে। অনেকে বলে কোহলি কোনো আইসিসি টুর্নামেন্ট জেতেনি। কিন্তু সে ২০১১ বিশ্বকাপ আর ২০১৩ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রোহিতও ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছে। তাদেরকে সময় দিন। তারা দ্বিপাক্ষীয় সিরিজ,আইপিএল সহ অনেক ক্রিকেট খেলে। যখন আইসিসি টুর্নামেন্ট প্রসঙ্গ আসে তখন আসলে কিছু কিছু জিনিস আপনার পক্ষে যেতে হয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link